পেট কাটলেই টাকা- এ মোহে সিজার ডেলিভারি এখন মহামারিতে রূপ নিয়েছে।
কমে যাচ্ছে দেশের মায়েদের সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা; সিজার ব্যবসার মাধ্যমে মুনাফা লুটে ফুলে ফেঁপে উঠছে একটি মহল। সরকার এখনই কঠোর আইনী পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে দেশে কর্মক্ষম মানুষের যোগান শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে।
, ০১ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২১ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২০ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সম্পাদকীয়
গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের এক গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকের ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এ সময় তার শারীরিক অবস্থা ‘স্বাভাবিক’ ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্তও করা হয়েছিল। প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে উক্ত ডাক্তারের অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। ঐ সময় ঐ ডাক্তার দেশেই ছিলেন না, অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের জানায়, ডাক্তার আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা ব্যর্থ হলে অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। পরদিন মারা যায় শিশুটি। মা এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন। কারণ সিজারের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট ত্রুটিপূর্ণ থাকায় ঐ সেবা থেকে বঞ্চিত হন তিনি-এ বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্তে বের হয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, খোদ রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতালে এই চিত্র থাকলে ঢাকার বাইরের কী অবস্থা, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিদিন সিজারের নামে অসংখ্য শিশু ও মা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দেশের কোথাও না কোথাও। দেশে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সিজার অপারেশন হচ্ছে। বেশির ভাগই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু গ্রামে বা মফস্বলে কোনো ঘটনা ঘটলে এতটা হইচই হয় না, ঢাকায় যেমনটা হচ্ছে। এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), সিভিল সার্জনদের। কিন্তু অধিকাংশই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন না। তবে অনেক কর্মকর্তা নিয়মিত মাসোহারা পেয়ে থাকেন। সম্প্রতি র্যাবের সাবেক ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম যাত্রাবাড়ীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অভিযানে গিয়ে দেখেন, এক প্রসূতির আয়ারা সিজার করছেন। এর আগে মোহাম্মদপুরে এক ক্লিনিকে ভুয়া ডাক্তার অপারেশন করছিলেন। রোগী রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। এসব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত মনিটর না করায় ও এদের জবাবদিহিতা না থাকায় আজকে সিজারের নামে বাণিজ্য মহামারি রূপ নিয়েছে। ঢাকার বাইরে একটি ক্লিনিকে যে যন্ত্রপাতি ও ব্যবস্থাপনা থাকার কথা, তার কিছুই নেই। শতকরা ৮০ ভাগেরই লাইসেন্স নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করেই ক্লিনিক, হাসপাতাল চালু করে দিয়েছে। এদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিয়মিত ঘুষের ভাগ পান-এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।
দেশে টাকার লোভে মহামারিতে রূপ নিয়েছে সিজার ডেলিভারি। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বেশি চলছে সিজারের নামে ব্যাপক বাণিজ্য। দেশে সরকারি হাসপাতালে ডেলিভারি করাতে মানুষের পকেট থেকে খরচ হয় মোট ব্যয়ের ৬৫ শতাংশ। বেসরকারিতে শতভাগই নিজেদের টাকা ডেলিভারিতে ব্যয় করতে হয়। ২০২২ সালে সিজারে সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে ৮৪ শতাংশই হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। বাকি ১৪ শতাংশ হয়েছে সরকারি হাসপাতালে আর ২ শতাংশ হয় এনজিও পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, নিরাপদ সিজার না হলে মা-সন্তানের ডেলিভারি পরবর্তী নানা শারীরিক ঝুঁকি থাকে। স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও ব্যবসায়িক মানসিকতা ও অতি মুনাফা লাভের আশায় স্বাভাবিক প্রসবের চেয়ে অস্ত্রোপচারে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা দেশের জন্য মহাবিপদের বার্তা।
সমালোচক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিজারিয়ান ব্যবসা শুধু ব্যবসাই নয়; বরং এটি একটি ষড়যন্ত্র। এর মাধ্যমে একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল বাংলাদেশের জনসংখ্যার হার হ্রাস করতে চাচ্ছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ডাক্তাররা যেকোনো অস্ত্রপাচার বা অপারেশন যথাসম্ভব এড়িয়ে চলে, কারণ যেকোনো অপারেশনে অনেক বেশি রিস্ক নিতে হয়। সেইসাথে একটি সিজারের পর একজন মহিলার ফার্টিলিটি (বাচ্চা ধারণের ক্ষমতা) অনেকাংশে কমে যায়। নিউরোসায়েন্সের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে পেয়েছে, সিজারিয়ান পদ্ধতিতে জন্ম নেয়া শিশু পরবর্তী সময়ে সিজোফ্রেনিয়ার মতো গুরুতর মানসিক রোগে ভোগার ঝুঁকিতে থাকে বেশি।
প্রসঙ্গত গত ৩রা জানুয়ারি রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (রিপোর্ট) আয়োজিত বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন:
‘প্রাইভেট হাসপাতালে সন্তানসম্ভবা নারীরা গেলেই ৭০ শতাংশের সিজার করা হয়। আমি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনো মিটিংয়ে গেলেই আমাকে প্রশ্ন করা হয় আপনাদের দেশে এত সিজার কেন হয়।’
আরো উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের খোদ প্রধানমন্ত্রী সহ অনেকেই সিজারকে নিরুৎসাহিত করেছে। অথচ দেশের ভেতরই একটি দেশবিরোধী ও ষড়যন্ত্রকারী মহল এই সিজারের প্রবল বিস্তার করিয়ে দেশের জনসংখ্যা নামক সম্পদটিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা করছে। তাই এক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে- অবিলম্বে শিশুর ডেলিভারি ব্যবস্থায় নরমাল ডেলিভারিতে উৎসাহিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সেইসাথে দেশের চিকিৎসা খাতে যে দুর্নীতিবাজ মহলটি সিজারের নামে ব্যবসা করে বিপুল মুনাফা লুটে নিচ্ছে এবং রোগীদের দরিদ্র করে দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা। অন্যদিকে দেশের গাইনি খাতকে উন্নত করে এই সিজারিয়ান ব্যবসার মূল্যোৎপাটন করা।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)