পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য (১)
, ২৯ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১০ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৯, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তানকে তার পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য যথাযথ পালন করার জন্য আদেশ মুবারক করেছেন। আবার পিতা-মাতাকে উনাদের সন্তানের প্রতি যথাযথ হক্ব আদায় করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মূলতঃ পিতা-মাতা এবং সন্তান উভয়কেই মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের হক্ব যথাযথভাবে পালন করার আদেশ দিয়েছেন। সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আদেশ মুবারক করেছেন, যা প্রত্যেক পিতা-মাতা এবং সন্তানদের জন্য জানা অবশ্য কর্তব্য। পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে-
طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ
অর্থ: প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ এবং মহিলার জন্য ইলিম অর্জন করা ফরয, ইলিম তলব করা ফরয। ”
এখন সেই ফরয ইলিম কতটুকু হবে অর্থাৎ প্রত্যেক বিষয়ে তার যতটুকু দরকার রয়েছে, সে বিষয় সম্পর্কে তার ততটুকু জানা আবশ্যক। অর্থাৎ যতটুকু না জানলে তার ফরয আদায় হয় না, ঠিক ততটুকু জানা ফরয। এরপর পর্যায়ক্রমে ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব, নফল ইলিম রয়েছে। কাজেই সন্তানের হক্ব এবং পিতা-মাতার হক্ব উভয়টাই প্রত্যেকের জন্যই জরুরত আন্দাজ শিক্ষা করা ফরয। মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَقَضٰى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوْا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَّلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيْرًا
মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা বণী ইসরাঈলে ২৩ এবং ২৪নং পবিত্র আয়াত শরীফে সরাসরি নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন-
وَقَضٰى رَبُّكَ
মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ মুবারক-নির্দেশ মুবারক দিচ্ছেন-
أَلَّا تَعْبُدُوْا إِلَّا إِيَّاهُ
যে, তোমরা মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কারো ইবাদত করবে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি কিন্তু সরাসরি নির্দেশ মুবারক দিচ্ছেন- তোমরা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত-বন্দেগী করবে না। তবে জেনে রাখ, তোমাদের দায়িত্ব দেয়া হলো-
وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
অর্থ: তোমাদের পিতা-মাতার প্রতি সৎ ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হলো। যে, তোমরা মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করতে পারবে না এবং তোমাদেরকে এটাও নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, সেটা হলো- তোমাদের পিতা-মাতার প্রতি সৎ ব্যবহার করবে। ”
অতঃপর বলেন-
إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا
অর্থ: উনাদের একজন অথবা দু’জন বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা বয়সে পৌঁছেন, তাহলে-
فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ
উনাদের প্রতি কোন কাজে তোমরা উফ বলো না। অসসন্তুষ্ট হয়ে, অপারগ হয়ে উফ শব্দ করো না।
وَّلَا تَنْهَرْهُمَا এবং উনাদের সাথে কোন কথা বলতে হলে ধমক দিয়ে কথা বলো না।
وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا উনাদের সাথে নরম সূরে, দয়ার সহিত, ইহ্সানের সহিত কথা বলো, সম্মানসূচক কথা-বার্তা বলো।
وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ
দয়ার সাথে তোমার বিনীত বাহু উনাদের জন্য বিছিয়ে দিও। অর্থাৎ উনাদের জন্য নম্রতা ও বিনয় প্রকাশ করো।
وَقُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيْرًا
এবং উনাদের জন্য দোয়া করো যে, আয় মহান আল্লাহ পাক উনাদের প্রতি আপনি দয়া করুন, রহমত বর্ষণ করুন।
كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيْرًا
যেভাবে পিতা-মাতা আমাদেরকে লালিত-পালিত করেছেন, ছোট বেলাতে দয়া করেছেন, ইহসান করেছেন। আপনি উনাদের প্রতিও ইহসান করুন, দয়া করুন।
এখানে পবিত্র আয়াত শরীফ দু’টার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি বেশ কয়েকটা নির্দেশ দিয়েছেন। যেটা খুব ফিকির এবং চিন্তার বিষয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংশ্লিষ্ট মহাসম্মানিত দিন এবং রাত মুবারক-এ স্বয়ং রহমত মুবারক উনার মালিক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাছিল করা যায়
১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিষিদ্ধ মহিলা জামায়াত নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছু’দের বিভ্রান্তিকর ও জিহালতী বক্তব্যের জবাব (১)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত নূরুর রবিয়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ বুখারী শরীফে বর্ণিত জাল হাদীছের খন্ডন (১)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কুফরী আক্বীদা পরিহার না করলে চির জাহান্নামী হতে হবে
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যার-তার থেকে দ্বীনি ইলিম গ্রহণ করা যাবে না
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক বাস্তবায়নে হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের বেনযীর দৃষ্টান্ত
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যারা অনুসরণ করবেন উনারাও হাছিল করবেন সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি মুবারক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইলমে তাসাউফ অর্জন করা ব্যতীত ইবাদত মূল্যহীন
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্মরণে এই উপমহাদেশের সরকারগুলোর উদ্যোগ কোথায়?
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উসীলায় এক কোটিরও বেশি বিধর্মী পবিত্র ঈমান লাভ করেন
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র সুন্নত যিন্দাকারী অর্থাৎ মুহ্ইউস সুন্নাহ
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)