সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
পরকালে নেককার ও বদকারদের অবস্থা কিরূপ হবে
, ২৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৮ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فامِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالنُّورِ الَّذِي أَنْزَلْنَا، وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ )سورة التغابن ٨(
তোমরা ঈমান আনো মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি এবং সেই নূর উনার প্রতি যা মহান আল্লাহ পাক তিনি নাযিল করেছেন। তোমরা যা আমল করো তা মহান আল্লাহ পাক তিনি জানেন। [সূরা তাগাবুন শরীফ: ৮]
ঈমানদার উনাদেরকে সুসংবাদ প্রদানের লক্ষ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন-
يَوْمَ يَجْمَعُكُمْ لِيَوْمِ الجمع ذلك يوم الشعائنِ ، ومَن يُؤمن بالله ويَعْمَلْ صَالِحًا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِه ويُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأنهارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا، ذلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ (سورة التغابن ۹)
তিনি (মহান আল্লাহ পাক) সেই দিন তোমাদেরকে একত্রিত করবেন, একত্রিত করার দিনে। সেটা হচ্ছে লাভ-লোকসানের দিন। আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনবেন, আমলে ছলেহ করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার গুনাহ-খতাগুলো ক্ষমা করবেন এবং উনাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিচ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, অনন্তকাল সেখানে অবস্থান করবেন। আর এটাই উনার জন্য বিরাট সফলতা। [সূরা তাগাবুন শরীফ: ৯]
সুতরাং যারা ঈমান এনে আমলে ছলেহ করবেন উনারা লাভ-লোকসানের দিন বিরাট সফলতা অর্জন করবেন। সেদিনের অবস্থা সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَى مِنْكُمْ خَافِيَةٌ ﴿۱۸﴾ فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتابة بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمُ اقْرَءُوا كتابية ﴿١٩﴾ )سورة الحاقة(
যেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে সেদিন তোমাদের কোনো গোপন বিষয় গোপন থাকবে না। অতঃপর যার আমলনামা তার ডান হাতে দেওয়া হবে; তখন তিনি বলবেন, এই নাও, আমার আমলনামা পড়ো। [সূরা হাক্কাহ শরীফ: ১৮-১৯]
পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে দুনিয়াতে মানুষ একজন আরেকজনকে যেভাবে রেজাল্ট কার্ড দেখায়, ঠিক ক্বিয়ামতের দিন সেভাবে নেককার বান্দাগণ উনাদের আমলনামা একে অপরকে দেখাবেন। উনারা আরো বলবেন-
إِنِّي ظَنَنْتُ أَنِّي مُلَاقٍ حِسَابِيَهْ ﴿۲۰﴾ فَهُوَ فِي عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ ٢١) فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ ﴿۲۲﴾ قُطُوْفُهَا دَانِيَةٌ ﴿۲۳﴾ كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيْئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الْأَيَّامِ الْخَالِيَةِ ﴿٢٤﴾ )سورة الحاقة(
নিশ্চয়ই আমার বিশ্বাস ছিলো যে, আমি এই হিসাবের সম্মুখীন হবো। অতঃপর তিনি সন্তুষ্টচিত্তে উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ জান্নাতে বসবাস করবেন। যার (জান্নাতের) ফলসমূহ নিকটেই থাকবে। (জান্নাতীদেরকে বলা হবে) বিগত দিনে যা আমল করেছেন তার প্রতিদানস্বরূপ তৃপ্তি সহকারে খান এবং পান করুন। [সূরা হাক্কাহ শরীফ: ২০-২৪]
আর বাম হাতে আমলনামা গ্রহণকারীদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُوْتَ كِتَابِيَهْ ﴿۲۵﴾ وَلَمْ أَدْرٍ مَا حِسَابِيَهُ ﴿٢٦﴾ يَا لَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ ﴿۲۷﴾ مَا أَغْنَى عَنِيْ مَالِيَهْ ﴿۲۸﴾ هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيَة ﴿٢٩﴾ خُذُوهُ فَعَلُوهُ ﴿۳۰﴾ ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوْهُ ﴿۳۱﴾ ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُوْنَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ ﴿٣٢﴾ إِنَّهُ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ ﴿۳۳﴾ وَلَا يَحْضُ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِيْنِ ﴿٣৪﴾ فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ هَاهُنَا حَمِيمٌ ﴿٣٥﴾ وَلَا طَعَامٌ إِلَّا مِنْ غِسْلِيْنٍ ﴿٣٦﴾ لَّا يَأْكُلُهُ إِلَّا الْخَاطِئُونَ ﴿۳۷﴾ (سورة الحاقة)
আর যার আমলনামা বাম হাতে দেওয়া হবে সে বলবে, হায় আফসোস! আমাকে যদি আমার আমলনামা দেওয়া না হতো! আমার হিসাব যদি জানতে না পারতাম! হায় আফসোস! যদি আমার (মৃত্যুর) ফায়সালা হয়ে যেত। আমার মাল-সম্পদ তো আমার কোনো কাজে আসেনি। আমার কর্তৃত্বও আমার থেকে হালাক (ধ্বংস) হয়ে গিয়েছে। (ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বলা হবে) তাকে পাকড়াও করো, গলায় বেড়ি পরাও। তারপর জাহান্নামে নিক্ষেপ করো। অতঃপর তাকে সত্তর হাত লম্বা শিকলে আবদ্ধ করো। নিশ্চয়ই সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে বিশ্বাস করেনি অর্থাৎ বিশ্বাস করে আমল করেনি। মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াতে উৎসাহিত করেনি। আর এখানে তার জন্য কোনো বন্ধু নেই। গিসলীন (শরীর থেকে নির্গত এক ধরনের পুঁজ) ব্যতীত কোনো খাদ্যও নেই। ইহা পাপীরা ব্যতীত অন্য কেউ খাবে না। নাউযুবিল্লাহ! [সূরা হাক্কাহ শরীফ: ২৫-৩৭]
উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ ছাড়াও আরো অনেক পবিত্র আয়াত শরীফের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি নেককার বান্দা-বান্দীদেরকে সুসংবাদ মুবারক প্রদান করেছেন আর বদকারদেরকে সতর্ক করেছেন।
কাজেই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে উনার আদেশ-নিষেধ মুতাবিক আমল করবে, তাদেরকেই ডান হাতে আমলনামা দেয়া হবে এবং তারা বিরাট সফলতা লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে গুনাহর কাজ থেকে বিরত থেকে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুতাবিক বেশি বেশি নেক কাজ করার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
একজন মুসলমান হিসেবে ভাল ও মন্দের পার্থক্য করুন! (১)
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মসজিদে গিয়ে মহিলাদের জামায়াতে নামায আদায়ের ব্যাপারে বাতিলপন্থীদের দ্বি-চারিতা ও মুনাফিকী
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মসজিদে গিয়ে মহিলাদের জামায়াতে নামায আদায়ের ব্যাপারে বাতিলপন্থীদের দ্বি-চারিতা ও মুনাফিকী
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মসজিদে গিয়ে মহিলাদের জামায়াতে নামায আদায়ের ব্যাপারে বাতিলপন্থীদের দ্বি-চারিতা ও মুনাফিকী
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আল্লাহওয়ালা হওয়ার মধ্যেই রয়েছে সমস্ত ফযীলত ও বুযুর্গী
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা (২৬)
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়
০৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সন্তান প্রতিপালনে মা-বাবা, অভিভাবকদের যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরী (১)
০২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত নেক ছোহবত ইখতিয়ার এবং উনার তাছির বা ক্রিয়া
০২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দ্বীন ইসলাম বিমুখতা ও অশ্লীল সাংস্কৃতিক আগ্রাসন নারী নির্যাতনের মূল কারণ:
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নিকাহ বা বিবাহের ফযীলত (১৫)
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)