প্রথম আসমানে সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন প্রথম নবী ও রসূল হযরত আবুল বাশার ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি।

দ্বিতীয় আসমানে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনারা। উল্লেখ্য, হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম এবং হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনারা পরস্পর খালাতো ভাই। তাই উনারা দু’জনে একত্রে ছিলেন।

তৃতীয় আসমানে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম তিনি সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন।

চতুর্থ আসমানে সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম তিনি।

পঞ্চম আসমানে সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন হযরত হারূন আলাইহিস সালাম তিনি।

ষষ্ঠ আসমানে সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি।

সপ্তম আসমানে সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি।

স্মরণীয় যে, সপ্তম আসমান ভ্রমণের সময় মাত্র কয়েকজন বিশেষ হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সাক্ষাৎ করানো হয়েছিল এমন বিশেষ কতগুলো অবস্থার দিকে ইঙ্গিত করার জন্য, যা পরবর্তীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক-এ এক এক করে প্রতিফলিত হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ!

১। হযরত আবুল বাশার ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি প্রথম নবী ও রসূল এবং তিনি মানবজাতির আদি পিতা। এজন্য প্রথম আকাশে তিনি সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন। আর উনার সাক্ষাৎ মুবারক দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হিজরত উনার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা হযরত আবুল বাশার ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও এক শত্রুর শত্রুতার কারণে পবিত্র জান্নাত থেকে পবিত্র হিজরত করে যমীনে তাশরীফ মুবারক এনেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

২। হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস্ সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা সাক্ষাৎ মুবারক করার দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি যালিম ইহুদীদের অত্যাচার ও নির্যাতনের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। বস্তুত কুচক্রী ইহুদীরা উনাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে কষ্ট দিয়েছিল এবং উনাকে শহীদ করার জন্যও নানা ষড়যন্ত্র করেছিল। নাঊযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে ইহুদীদের কুচক্রী ষড়যন্ত্র থেকে যেভাবে রক্ষা করেছিলেন অনরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেও করবেন। সুবহানাল্লাহ!

৩। হযরত ইউসূফ আলাইহিস সালাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছিল যে, তিনি যেমন স্বীয় ভাইদের দ্বারা কষ্ট পেয়েছিলেন। অতঃপর তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। তদ্রƒপ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও স্বীয় জ্ঞাতী-গোষ্ঠী, প্রতিবেশী ভাইদের দ্বারা কষ্ট পাবেন অতঃপর তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!

৪। হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক দ্বারা এদিকে ইঙ্গিত করা উদ্দেশ্য ছিল যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিভিন্ন সমাজের নৃপতি ও শাসনকর্তাদেরকে পত্রের মাধ্যমে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দিকে আহবান করবেন। কেননা সর্বপ্রথম হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম তিনি পত্র লেখার প্রচলন করেন। সুবহানাল্লাহ!

৫। হযরত হারূন আলাইহিস সালাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক দ্বারা উদ্দেশ্য ছিল যে, যেভাবে সামিরী এবং গো-বৎস পূজা করা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশ মুতাবিক আমল না করার কারণে তাদেরকে ধর্মত্যাগীর শাস্তি হিসেবে হত্যা করা হয়েছিল; অনুরূপভাবে কুরাইশরাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ মান্য না করার কারণে তাদের ৭০ জনকে পবিত্র বদরের যুদ্ধে হত্যা করা হয়েছিলো এবং ৭০ জনকে বন্দী করা হয়েছিলো এবং ওরায়না সম্প্রদায়ের একদল লোককে ধর্মত্যাগ করার কারণে হত্যা করা হবে। বস্তুত তাই হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ!

৬। হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক দ্বারা ইঙ্গিত ছিল যে, যেভাবে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম এক অত্যাচারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য সিরিয়া গমন করেছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও তদ্রƒপ করবেন। অনন্তর তিনি সিরিয়াতে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি তাবুকের পবিত্র জিহাদ উনার জন্য গমন করেছিলেন। অতঃপর দাওমাতুল জন্দল নামক এলাকাধিপতি মুসলমানদেরকে জিজিয়া কর প্রদান করে মুচলেকার আবেদন করলে তিনি তার আবেদন কবুল করেছিলেন। এছাড়া হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার পর হযরত ইউশা বিন নূন আলাইহিস সালাম তিনি সিরিয়া বিজয় সম্পন্ন করেন। অনুরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সিরিয়া বিজয় সমাপ্ত করেন। সুবহানাল্লাহ!

৭। হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাক্ষাৎ মুবারক করার দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বে পবিত্র হজ্জ করবেন। সুবহানাল্লাহ!



-মুফতী আহমদ আবূ সাফওয়ান।