পবিত্র কুরবানির ঈদকে টার্গেট করে মসলার দাম বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেট চক্র। ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও প্রতি বছর মসলায় হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্চা যায় সরকারের; সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়তে হয় জনগণকে।
উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতায় দেশীয় মসলাতেই দেশের চাহিদা মিটবে। রয়েছে রফতানিরও ব্যাপক সম্ভাবনা।
, ২৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৬ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সম্পাদকীয়
গত পরশু দৈনিক আল ইহসান শরীফ পত্রিকায় লীড হয়েছে, ‘ঈদ সামনে রেখে অস্থির মসলার বাজার’। খবরে জানা গেছে, গত তিন থেকে ছয় মাসে মসলা পণ্যের দাম ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে জিরার দাম। মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের প্রধানতম গরম মসলার একটি জিরা। কিন্তু জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচ ও এলাচের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি আসন্ন কুরবানির ঈদে ভোক্তাদের ওপর চাপ তৈরি করবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবছর কুরবানির ঈদের আগে বেড়ে যায় মসলার দাম। চিরাচরিত এই নিয়ম এবারও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কুরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছে, বাজেটে মসলা আমদানির শুল্ক বাড়ানোর ফলে জিরা, গোলমরিচ, এলাচিসহ বেশ কিছু মসলার দাম বেড়েছে। তবে ঈদে বাড়তি চাহিদা থাকায় পাইকাররা বিভিন্ন অজুহাতে কৌশলে দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঈদের রান্নায় ব্যবহৃত মসলার পাশাপাশি অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, অনুসন্ধানে জানা গেছে- মসলা আমদানির কারণেই মসলার দাম বেড়ে যাচ্ছে। অথচ বিশেষজ্ঞদের মতে- দেশীয় মশলার এক বিশাল আকারের সম্ভাবনা বিদ্যমান। কিন্তু এই সম্ভাবনাকে বিকশিত না করে মসলা আমদানি করার কারণেই মানুষ ঈদের আগে মসলায় এই ভোগান্তি ও নৈরাজ্যের শিকার হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মসলার উদ্ভাবনে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে দেশের একমাত্র বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্র। তাদের উদ্ভাবন মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দিলে মসলা আমদানিতে আর হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে না। মসলা গবেষণা কেন্দ্র গত কয়েক বছরে নানা জাতের উফশী মসলা উদ্ভাবন করেছে। ১৩ মসলার উচ্চ ফলনশীল ২৮ জাত উদ্ভাবিত হয়েছে, যা ইতোমধ্যে অবমুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর বাংলাদেশে চাহিদা পূরণ করতে ১৪ লাখ টন মসলা আমদানি করতে হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। দৈনিক আল ইহসান শরীফ পত্রিকা উনার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে মসলা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চাষযোগ্য জমিও রয়েছে পর্যাপ্ত। দেশের অধিকাংশ এলাকার মাটি বেলে-দোআঁশ, যা মসলাজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। মাটির গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়ে এবং উন্নত গবেষণার মাধ্যমে মানসম্মত বীজ ও অত্যাধুনিক চাষাবাদব্যবস্থায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে পারলে চাহিদার পুরো মসলা দেশের মাটিতেই উৎপাদন করে হাজার হাজার কোটি টাকার মসলা রফতানী করা সম্ভব।
অথচ দেশে মাত্র দুই শতাংশ চাষযোগ্য জমিতে চাষ হচ্ছে মসলার। ফলে এগোনোর সুযোগ থাকা এ খাতে ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছে দেশ।
বাংলাদেশে মসলাজাত বিভিন্ন পণ্যের সময়ের সাথে সাথে নতুন জাত উদ্ধাবিত হচ্ছে। সম্প্রতি পেঁয়াজের পাঁচটি জাত উদ্ভাবন হয়েছে। এগুলো গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত প্রায় সব মৌসুমেই উৎপাদন সম্ভব। গ্রীষ্মকালে প্রতি হেক্টর জমিতে এসব পেঁয়াজ ১৬ থেকে ২০ টন করে উৎপাদন সম্ভব। এ গবেষণা সম্ভাবনা যদি কৃষকদের হাতে তুলে দেয়া যায় এবং তাদের সচেতন করা যায়, তবে বাংলাদেশ পেঁয়াজ রফতানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবে। বাংলাদেশের আরেকটি প্রয়োজনীয় মসলা হলুদ। কৃষক পর্যায়ে হলুদের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ২.২৬ টন। দেশে প্রতিবছর গড়ে ৩৫ হাজার টন হলুদ উৎপন্ন হয়। যা উৎপাদন সম্ভাবনার তুলনায় খুবই কম। হলুদের চাহিদা বছরে প্রায় সোয়া ২ লাখ টন। ফলন কম হওয়ার মূল কারণ উচ্চ ফলনশীল জাতের অভাব। আর এ ঘাটতি পূরণে মসলা গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ ৫ বছর গবেষণার মাধ্যমে বারি ১, ২, ৩, ৪, ৫ জাতের উচ্চ ফলনশীল হলুদ উদ্ভাবন করেছেন। বারি হলুদ প্রতি হেক্টরে ফলন হবে ২৫ থেকে ৩০ টন। যা দেশের হলুদের চাহিদা পূরণ করে রফতানীও করা সম্ভব হবে। এছাড়া দেশে ধনে, মরিচসহ বিভিন্ন মসলাজাত ফসলের নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
মসলার সর্বোচ্চ ব্যবহার বলতে গেলে বাংলাদেশেই হয়। বাঙালির এ ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। একথা বিবেচনা করে সরকারের উচিত ছিলো- দেশে মসলার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা। সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ যেসব জায়গায় মসলা উৎপাদন উপযোগী, সেসব স্থানের কৃষকদের যথার্থ দিক-নির্দেশনামূলক পরামর্শের ব্যবস্থা করা। যারা মসলা চাষে উদ্যোগী হবে তাদের পর্যাপ্ত সহায়তা প্রদান করা। পেঁয়াজ, রসুন, ধনে, মরিচ রবি মৌসুমে চাষ করা হয়ে থাকে। চরাঞ্চলে এসব ফসলের ফলনও ভালো হয়। তাই এসব স্থানে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা সক্রিয় হলে কৃষকরা মসলা চাষে এগিয়ে আসতে পারে। বেশিসংখ্যক কৃষক যদি এসব মসলা চাষ করে, তবে স্বল্প পরিমাণ জায়গায় চাষ করাই যথেষ্ট।
বাণিজ্যিকভাবে পাহাড়ি এলাকাগুলোতে ব্যাপকভাবে আদা এবং হলুদ চাষের সম্ভাবনা বিরাজমান। বর্তমানে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে আদা ও হলুদের চাষ হয়ে থাকে। ভালোভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করলে সিলেট ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আদা ও হলুদের চাষ ব্যাপক করা যেতে পারে।
এছাড়া কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কৃষকদের সহায়তা করলে এবং আদা ও হলুদ চাষে ব্যাপক সাফল্য আসতে পারে। উত্তরাঞ্চলে উৎপাদন করা হলে রফতানীও করা যেতে পারে। জিরা, লবঙ্গ, দারুচিনি, গুয়োমুড়ি, বিভিন্ন ধরণের বাদাম ও অন্যান্য মসলা মূলত পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত হয়। আমাদের দেশে পাহাড়ি অঞ্চল খুব সীমিত হলেও বিপুল পরিমাণে এসব মসলা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে।
উল্লেখ্য, আমাদের দেশে উৎপাদিত মসলা আমদানিকৃত মসলার চেয়ে অনেক ভালো বিধায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মসলার চাহিদাই বেশি থাকে। তাই এসব মসলাচাষীকে সময় মতো পর্যাপ্ত সহায়তা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে তারা উৎপাদন বাড়াতে তৎপর হবে বলে আশা করা যেতে পারে। তবে এসব মসলা সংরক্ষণের জন্য গুদাম, কোল্ডস্টোরেজ তৈরির বিষয়টিও ভাবা জরুরী। কৃষকরা ন্যায্য দাম পেলে তারাও এগিয়ে আসবে এবং সাধারণ মানুষ একটু সাশ্রয়ী দামে মসলার যোগান পাবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ব্যাপারে প্রয়োজন একান্তভাবে সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)