অমুসলিম মহিলাদের দ্বীন ইসলাম গ্রহণের ঈমানদীপ্ত ঘটনা:
পবিত্র কুরআন শরীফ নিয়ে গবেষণা করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন জাপানি নও-মুসলিম নারী
, ০৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলো দ্বারা দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণায় জাপানি তরুনী ‘অতসুকু হুশিনু’ বরং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা ও জানা-শোনার পর অবশেষে তিনি এই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
পবিত্র কুরআন শরীফ পাঠ করে এর পরিপূর্ণতা ও সার্বজনীনতা অভিভূত করে অতসুকু হুশিনু-কে। আর এ জন্যই তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সবার থেকে দূরে থেকে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়তেন।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি ঈমান আনার ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে জাপানি যুবতী অতসুকু জানিয়েছেন, ১১ই সেপ্টেম্বরের ঘটনার সঙ্গে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের জড়িয়ে অনেক নেতিবাচক কথা প্রচার করা হয়। আর সেইসব প্রচারণায় প্রভাবিত না হয়ে বরং এই সম্মানিত দ্বীন সম্পর্কে সত্যিকারের অবস্থা জানতে আগ্রহী হন অতসুকু। এরপর অনুসন্ধান চালিয়ে দেখতে পান যে, সম্মানিত দ্বীন ইসলামই হচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে মহৎ এবং সবচেয়ে বড় দ্বীন।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে অতসুকু বলেছেন, আমি বড় হয়েছি এক বৌদ্ধ পরিবারে। বৌদ্ধরা নিজ ধর্ম বিষয়ে খুবই রক্ষণশীল। আমার এক চাচা জাপানি সংসদে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিনিধি ছিলেন। তাই এ ধর্ম সম্পর্কে আমার গভীর জানাশোনা ছিল। আমার আরেক চাচা ছিলেন পুরোহিত। তিনি খ্রিস্টানদের বাইবেলও পড়েছেন। ফলে খ্রিস্ট ধর্মের সঙ্গেও আমি পুরোপুরি পরিচিত ছিলাম। আমার মনে কোনো কোনো বিষয়ে কিছু প্রশ্ন জাগতো, কিন্তু কেউই সেইসব প্রশ্নের জবাব দিতে সক্ষম হননি। কিন্তু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর আমার জীবনের মোড় বদলে যায়। মুসলমানদের আসমানী কিতাব পবিত্র কুরআন শরীফ প্রথমবারের মত পড়েই মনে হয়েছে যে, সত্যিই তা আসমানি কিতাব এবং অন্য ধর্মগ্রন্থগুলোর সঙ্গে এর রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তাই বুঝলাম যে সম্মানিত দ্বীন ইসলামই প্রকৃত খোদায়ী দ্বীন। পবিত্র কুরআন শরীফ আমার মনের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে এবং দূর করেছে দ্বিধা-দ্ব›দ্ধ। ফলে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেই।
নিজের ওপর পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অমূল্য ও অতুলনীয় বাণীর প্রভাব প্রসঙ্গে জাপানি নওমুসলিম অতসুকু বলেছেন, এই আসমানি মহা কিতাব আমাকে ভয় ও নিঃসঙ্গতার শিকার হতে দেয়নি। যে কেউ পবিত্র কুরআন শরীফ পড়লে অবশ্যই সুপথ বা মুক্তির দিশা পাবেন। আমি আমার সমগ্র অস্তিত্বের মধ্যে এই মহাসত্যটি অনুভব করেছি। কঠিন অবস্থার মধ্যে আমি যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দোয়াগুলো পাঠ করতাম তখন মনে হত যেন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যেন আমাকে শিক্ষা দিচ্ছেন। তাই যতই হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম সঙ্গে সম্পর্কিত আয়াত শরীফ পাঠ করি ততই উনাদের প্রতি এবং উনাদের জীবনাদর্শ সম্পর্কে আমার ভালবাসা বাড়তেই থাকে ও উনাদের মাধ্যমে বাড়তে থাকে খোদাপ্রেম।
জাপানি নওমুসলিম অতসুকু আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে গভীরভাবে ভালবাসেন। আর তাই মুসলমান হওয়ার পর নিজের নাম হিসেবেও বেছে নিয়েছেন নূরানী ও পবিত্র এই নাম মুবারক অনুসারে। উনার সর্বকালের সর্বসেরা জীবনাদর্শ তাকে এত অভিভূত করেছে যে, তিনি নিজেকে উনারই অনুসারী হিসেবে গড়ে তুলতে আগ্রহী হন।
অতসুকুর পরিবার তার মুসলমান হওয়ার প্রবল বিরোধিতা করেছিল। প্রথমে তারা বিষয়টিকে বিশ্বাসই করেনি। পরে দেখলো যে তাদের মেয়ে নিজেকে অনেক কিছু থেকেই দূরে রাখছে, বিশেষ করে তারা যখন দেখলো যে অতসুকু হারাম গোশত খাচ্ছেন না তখন তারা জোরদার বিরোধিতা শুরু করে। এবার তারা অতসুকু'র ওপর অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপসহ নানা ধরনের চাপ দিতে থাকে ও তাকে হয়রানি করতে থাকে যাতে তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ত্যাগ করেন। অতসুকু'র সমস্ত বন্ধু ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরাই তাকে ত্যাগ করেন। ফলে পরিবার ও নিজ শহরে নিঃসঙ্গ ও কোণঠাসা হন অতসুকু। অত্যন্ত কঠিন সেই দিনগুলোতে পবিত্র কুরআন শরীফই ছিল তার একমাত্র সঙ্গী, যার মাধ্যমে প্রশান্তি ও সহায়তা পেয়েছেন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার সহায়তার কারণেই তিনি সে সময় নিজ ঈমানের ওপর অবিচল থাকতে পেরেছেন। নানা ধরনের চাপ অতসুকু'র ঈমানকে বরং আরো মজবুত করে দেয়। ফলে চাপ ও হয়রানি বাড়তেই থাকে। কিন্তু প্রশান্ত হৃদয়ে সব সহ্য করে যান তিনি। এ সময় অতসুকু পবিত্র কুরআন শরীফ উনার নির্দেশনা অনুযায়ী কেবল মহান আল্লাহ পাক উনার ওপরই ভরসা করতেন ও আশার আলো দেখতেন।
-উম্মু রাহাত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)