নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবাতে আযীম শরীফ
, ২৪ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৭ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
ইমাম ওয়াক্বেদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে, ৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার যিলহজ্জ শরীফ মাসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মিসর ও আলেকজান্দ্রিয়ার খ্রিষ্টান শাসক জুরায়েজ ইবনে মীনা’ ওরফে মুক্বাউক্বিসের নিকট সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দিয়ে একখানা পত্র মুবারক লিখেন। উক্ত পত্র মুবারক উনার বাহক ছিলেন হযরত হাত্বিব ইবনে আবূ বালতা‘আহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত পত্র মুবারকখানা হচ্ছেন-
بِسْمِ اللّهِ الرّحْمَنِ الرّحِيمِ مِنْ مُحَمّدٍ عَبْدِ اللّهِ وَرَسُولِهِ إلَى الْمُقَوْقِسِ عَظِيمِ الْقِبْطِ سَلَامٌ عَلَى مَنْ اتّبَعَ الْهُدَى أَمّا بَعْدُ فَإِنّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الْإِسْلَامِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللّهُ أَجْرَكَ مَرّتَيْنِ فَإِنْ تَوَلّيْت فَإِنّ عَلَيْكَ إثْمَ الْقِبْطِ {يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلّا نَعْبُدَ إِلّا اللّهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلَا يَتّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللّهِ فَإِنْ تَوَلّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنّا مُسْلِمُونَ} [ آلِ عِمْرَانَ ৬৪ ]
“বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে ক্বিবতীদের বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার প্রতি। যিনি সম্মানিত হিদায়াত মুবারক উনার অনুসরণ করেন উনার প্রতি সালাম। অতঃপর, আমি আপনাকে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন। নিরাপদ থাকুন। ইসলাম গ্রহণ করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দান করবেন। কিন্তু যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তাহলে সমস্ত ক্বিবত্বীদের (ইসলাম গ্রহণ না করার) পাপ আপনার উপর বর্তাবে। (মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ উনার ৬৪নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,) হে আহলে কিতাবগণ! তোমরা একই বিষয়ের দিকে আসো, যা আমাদের এবং তোমাদের মধ্যে সমান। আর তা হচ্ছে, আমরা মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কারো ইবাদত করবো না, উনার সাথে কোন কিছু শরীক করবো না এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত আমরা একে অপরকে রব হিসাবে গ্রহণ করবো না। এরপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে আপনারা বলে দিন যে, তোমরা সাক্ষী থাক, নিশ্চয়ই আমরা মুসলমান। ” সুবহানাল্লাহ! (উয়ূনুল আছার ২/২৩২, আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ শরীফ ৩/২৯৫, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ্ ১/৫৪৪ ইত্যাদি)
ক্বিবতের বাদশাহ মুক্বাউক্বিস পত্র মুবারকখানা পেয়ে অত্যন্ত তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করেন এবং জবাবে নি¤েœাক্ত পত্রখানা লিখেন-
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ لِمُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمُقَوْقِسِ عَظِيمِ الْقِبْطِ سَلامٌ أَمَّا بَعْدُ فَقَدْ قَرَأْتُ كِتَابَكَ وَفَهِمْتُ مَا ذَكَرْتَ فِيهِ وَمَا تَدْعُوْ اِلَيْهِ وَقَدْ عَلِمْتُ اَنَّ نَبِيًّا بَقِىَ وَكُنْتُ اَظُنُّ اَنَّهٗ يَخْرُجُ بِالشَّامِ وَقَدْ اَكْرَمْتُ رَسُوْلَكَ وَبَعَثْتُ إِلَيْكَ بِجَارِيَـتَيْـنِ لَـهُمَا مَكَانٌ فِى الْقِبْطِ عَظِيْمٌ وَبِكِسْوَةٍ وَاَهْدَيْتُ لَكَ بَغْلَةً لِتَرْكَبَهَا وَالسَّلَامُ عَلَيْكَ
“বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত-এ ক্বিবত্বী বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার পক্ষ থেকে- আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত সালাম মুবারক। অতঃপর আমি আপনার পত্র মুবারক পাঠ করেছি এবং সেখানে আপনি যা বর্ণনা করেছেন ও যেদিকে আহ্বান করেছেন, তা অনুধাবন করেছি। আমি জানি যে, একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আসতে বাকী রয়েছেন। আমি ধারণা করতাম যে, তিনি শাম (সিরিয়া) থেকে আবির্ভূত হবেন। আমি আপনার দূতকে সম্মান করেছি। আমি আপনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য অত্যন্ত সম্মানিত দু’জন মেয়ে হাদিয়া হিসেবে পাঠালাম। ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য। সুবহানাল্লাহ! আপনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হাদিয়া স্বরূপ পোষাক এবং বাহন হিসেবে একটি খচ্চর পাঠালাম। আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত সালাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ্ ১/৫৪৫, ‘উয়ূনুল আছার ১/৮৩, শারহুয যারক্বানী)
পত্রে উল্লেখিত এই দু’জন সম্মানিতা মেয়ে হচ্ছেন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সীরীন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হিসেবে গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত সীরীন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ কবি) হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট সম্মানিত শাদী মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যেই খচ্চরটি সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছিলো, সেটি ছিলো সাদা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত খচ্চর মুবারক উনার নাম মুবারক রাখেন, ‘দুলদুল’। সুবহানাল্লাহ! সেই খচ্চর মুবারক হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার যামানা পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! এছাড়াও হাদিয়া মুবারক হিসেবে ছিলো- মা’বূর নামক একজন দাস, ‘আফরা নামক একটি গাধা, ১০০০ মিছকাল স্বর্ণ, মিশরীয় সূতায় তৈরী ২০ টি মসৃন কাপড়, সুরমাদানী, জুব্বা, আয়না, চিরুনি, পানি পান করার পাত্র, মধু, মেশক ও এক জোড়া মোজা। সুবহানাল্লাহ!
বাদশাহ মুক্বাউক্বিস সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং উপরোক্ত হাদিয়া মুবারকগুলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদিয়া মুবারকগুলো অত্যন্ত মুহ্ববতের সাথে গ্রহণ করেন। কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বাদশাহ্র পক্ষ থেকে হাদিয়াকৃত পানপাত্রে পানি মুবারক পান করতেন এবং খচ্চর মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরোহণ করতেন এবং অত্যন্ত মুহব্বত করে খচ্চর মুবারক উনার নাম মুবারক রাখেন ‘দুলদুল’। সুবহানাল্লাহ!
পূর্ববর্তীদের কেউ কেউ বাদশাহ মুক্বাউক্বিস উনাকে ছাহাবী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ যে, বাদশাহ মুক্বাউক্বিস তিনি উনার চিঠিতে স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন,
وَبَعَثْتُ إِلَيْكَ بِجَارِيَتَيْنِ لَهُمَا مَكَانٌ فِي الْقِبْطِ عَظِيم
অর্থ: “আমি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য অত্যন্ত সম্মানিত দু’জন মেয়ে পাঠালাম। ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য। ” সুবহানাল্লাহ!
এখানে প্রথমে বলা হয়েছে, অত্যন্ত সম্মানিত দু’জন মেয়ে। আরবী جَارِيَةٌ শব্দ মুবারক উনার একখানা অর্থ হচ্ছেন- মেয়ে। কিন্তু যাদের অন্তরে কুফরী ও নিফাক্বী রয়েছে, তারা جَارِيَةٌ শব্দ মুবারক উনার অর্থ দাসী নিয়ে থাকে এবং অনেক এলোমেলো বলে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! যারা এলোমেলো বলে বা বলবে, তারা কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
তারপর বাদশাহ মুক্বাউক্বিস তিনি বলেছেন,
لَهُمَا مَكَانٌ فِي الْقِبْطِ عَظِيم
অর্থ: “ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য। ” সুবহানাল্লাহ!
কেননা, বাদশাহ মুক্বাউক্বিস তিনি উনার পত্রের শুরুতে বলেছেন,
مِنَ الْمُقَوْقِسِ عَظِيمِ الْقِبْطِ
অর্থ: “ক্বিবত্বীদের বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার পক্ষ থেকে। ”
এখানে সে عَظِيمِ শব্দ দ্বারা বাদশাহ বা রাজা বুঝিয়েছেন। عَظِيمِ الْقِبْطِ অর্থ- ক্বিবতীদের বাদশাহ বা রাজা।
আবার তিনি একই শব্দ অর্থাৎ عَظِيمِ শব্দ উনাদের শান মুবারকেও ব্যবহার করেছে। তিনি বলেছেন,
لَهُمَا مَكَانٌ فِي الْقِبْطِ عَظِيم
অর্থ: “ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য। ” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং বাদশাহ মুক্বাউক্বিস উনার পত্র থেকেই অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি কখনও দাসী ছিলেন না। তিনি ছিলেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারে সদস্য। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
এখান থেকে আরো একটি বিষয় স্পষ্ট হচ্ছে যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি যেহেতু রাজ পরিবারের সদস্য। সে হিসেবে উনার সম্মানিত দাদা সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি এবং মিশরের বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার বাবা মীনা’ তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে আপন ভাই ছিলেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈমান মুবারক প্রকাশ:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হিসেবে সমস্ত প্রকার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাদিয়া মুবারক করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন পূর্ব মনোনীত। সুবহানাল্লাহ! এছাড়াও মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে বিভিন্ন বিশেষ বিশেষ স্বপ্ন মুবারক এবং অন্যান্য বিশেষ বিশেষ ওয়াক্বেয়া মুবারক উনাদের মাধ্যমে সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন যে, তিনি অতিশীঘ্রই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করছেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মিশরের উচ্চ বংশীয় এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য হওয়া সত্যেও বাদশাহ মুক্বাউক্বিস উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ যাওয়ার কথা বললে, তিনি সাথে সাথে রাজী হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
‘বিদায়া-নিহায়াতে’ উল্লেখ রয়েছেন, “হযরত হাত্বিব ইবনে আবূ বালতা‘আহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে এবং উনার সম্মানিতা বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সীরীন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেসহ বাদশাহ মুক্বাউক্বিসের দরবার থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ আগমন করেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিতা বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সীরীন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে পথিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। ” সুবহানাল্লাহ! (বিদায়া-নিহায়া ৪/২৬৯)
মূলত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি পূর্বেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছিলেন। তবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাস্তায় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত হাত্বিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি জানতে পারেন যে, তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ:
৭ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৪শে ছফর শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতু ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার রাতে) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ২০ বছর ১১ মাস ১১ দিন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
এক নযরে রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৮)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২১)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)