সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারণে, উনার সুমহান সম্মানার্থে খুশি মুবারক প্রকাশ করা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক (২)
, ০৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
উছুলে তাফসীরে, তাফসীর করার কয়েকটা প্রকারের কথা উল্লেখ করা আছে। প্রথমত, আয়াত শরীফ দিয়ে আয়াত শরীফের তাফসীর। দ্বিতীয়ত, হাদীছ শরীফ দ্বারা আয়াত শরীফের তাফসীর। তৃতীয়ত, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ব্যাখ্যা দ্বারা আয়াত শরীফ এর তাফসীর। চর্তুথত, ইমাম মুজতাহিদ উনাদের ব্যাখ্যা দ্বারা আয়াত শরীফ এর তাফসীর। এবার আমরা পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফের ৫৮ নম্বর আয়াত শরীফ উনার তাফসীর এই চার প্রক্রিয়ায় দেখবো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ بِفَضْلِ اللّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُواْ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ.
অর্থ: ‘হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ফযল মুবারক ও মহাসম্মানিত রহমত মুবারক অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়েছো; তাই উনাকে পাওয়ার কারণে ঈদ উদযাপন তথা খুশি প্রকাশ করো। এই খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে সব কিছুর চাইতে উত্তম। ’ (পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৮)
এই আয়াত শরীফে “রহমত” মুবারক কোন সেই সত্ত্বা মুবারক এটা জানতে পারলেই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের বিষয়টা পানির মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। এবার তাফসীরগুলো দেখা যাক-
১. পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা তাফসীর:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সমগ্র কায়িনাতের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি। (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৭)
এই আয়াত শরীফ দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতের সংজ্ঞা দিয়ে দিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার স্বয়ং রহমত। সুতরাং রহমত মুবারক উনাকে পাওয়ার কারণে খুশি মুবারক প্রকাশ করা কার আদেশ মুবারক ভেবে দেখা জরুরী।
২. পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা আয়াত শরীফ উনার তাফসীর:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ اُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِـيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى بَعَثَنِيْ رَحْـمَةً لّـِلْعَالَمِيْنَ
অর্থ: “হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে তামাম আলমের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে পাঠিয়েছেন। ” (ত্ববারানী শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, মিরকাত শরীফ, দালায়িলুন নুবুওওয়াত লি আবু নুয়াইম)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা সূরা ইউনূস শরীফ উনার ৫৮নং পবিত্র আয়াত শরীফ এর ব্যাখ্যা পাওয়া গেলো। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেছেন, তিনিই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত। সুতরাং উনাকে পাওয়ার কারণে খুশি মুবারক প্রকাশ করতে হবে এটা হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যা দ্বারা প্রমাণিত।
৩. হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ব্যাখ্যা দ্বারা আয়াত শরীফের তাফসীর:
উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে ‘তাফসীরে রূহুল মায়ানী ৬ষ্ঠ খন্ড ১৪১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ্য রয়েছে-
اخرج ابو الشيخ عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما ان الفضل العلم و الرحمة النَّبِـيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: হযরত আবুশ শায়েখ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। “নিশ্চয়ই “ফদ্বল” দ্বারা উদ্দেশ্য ইলম, আর ‘রহমত’ দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ” তিনি (দলীল; তাফসীরে দূররুল মানছুর, তাফসীরে কবীর)
সুতরাং তাফসীরকারকদের মাথার তাজ বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ উনার ৫৮নং আয়াত শরীফ-এ রহমত মুবারক বাক্য দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে।
৪. হযরত ইমাম মুজতাহিদ উনাদের ব্যাখ্যা দ্বারা পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর:
বিখ্যাত মুফাসসির, হযরত জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমতুল্লাহি আলাইহি, ফখরুদ্দীন রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা আলুসী বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন, তাফসীরে বর্ণিত রহমত মুবারক হচ্ছেন; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। (তাফসীরে দূররুল মানছুর, তাফসীরে রুহুল মা’য়ানী, তাফসীরে কবীর)
উপরোক্ত চার প্রকার তাফসীর থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হলো, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ফদ্বল বা অনুগ্রহ মুবারক ও সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন; সেজন্য তারা যেনো শুকরগুজারীর করে সম্মানিত ঈদ উদযাপন তথা খুশি মুবারক প্রকাশ করে। এই খুশি মুবারক প্রকাশ বা ঈদ করাটা সমস্ত কিছু থেকে উত্তম। ” (পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৮)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক উনার নূরের আলোতে পুরো পবিত্র হুজরা শরীফ আলোকিত হওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৫)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত যায়িদ বিন হারেছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৪)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার গুরুত্ব এবং আবশ্যকতা
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৩)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারকই হচ্ছেন মুসলমান উনাদের একমাত্র শাসন ব্যবস্থা
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (২)
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার পরিচিতি
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)