সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত, আদব, তা’যীম-তাকরীম মুবারক উনার কতিপয় দৃষ্টান্ত (৪)
, ২৬ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৪ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ مُغِيْرَةَ بْنِ اَبِىْ رَزِيْنٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قِيْلَ لِحَضْرَتْ عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَيُّمَا اَكْبَرُ اَنْتَ اَمْ اَلنَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ هُوَ اَكْبَرُ مِنِّىْ وَ اَنَا وُلِدْتُ قَبْلَه
অর্থ: “হযরত মুগীরা ইবনে আবী রযিন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খাতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম) উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বড় নাকি আপনি? তিনি জবাবে বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার চেয়ে অনেক বড় তবে আমি উনার পূর্বে পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছি। ” (মুস্তাদরাকে হাকিম ৩/৩৬২)
বিষয়টা অত্যন্ত সূক্ষ্ম উনারা কিন্তু বলতে পারতেন যে আমি বড়। কিন্তু এটা বলেননি। এখানেও উনারা সর্বোচ্চ আদবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের আদত মুবারক ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উনাদেরকে কোনো বিষয় জিজ্ঞাসা করতেন; উনারা কোনো জবাব না দিয়ে বলতেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই সবচেয়ে ভালো জানেন। এখান থেকেও উনাদের সর্বোচ্চ আদবের বিষয়টা প্রমাণিত হয়।
যেমন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন-
قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِحَضْرَتْ اَبِىْ ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ حِيْنَ غَرَبَتِ الشَّمْسُ تَدْرِىْ اَيْنَ تَذْهَبُ قُلْتُ اَللهُ وَرَسُوْلُه اَعْلَمُ قَالَ فَاِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ فَتَسْتَاْذِنَ فَيُؤْذَنَ لَهَا وَيُوْشِكُ اَنْ تَسْجُدَ فَلَا يُقْبَلَ مِنْهَا وَتَسْتَاْذِنَ فَلَا يُؤْذَنَ لَهَا يُقَالُ لَهَا اِرْجِعِىْ مِنْ حَيْثُ جِئْتِ فَتَطْلُعُ مِنْ مَّغْرِبِهَا
অর্থ: “একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, আপি ন কি জানেন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর কোথায় যায়? তিনি বললেন মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ভালো জানেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, সূর্য যেতে যেতে পবিত্র আরশে আযীমের নিচে গিয়ে সিজদা করে! এরপর সে পুনরায় উদিত হওয়ার জন্য অনুমতি চায় এবং তাকে অনুমতি দেয়া হয়। আর অচিরেই এমন দিন আসবে যেদিন (সূর্য) সিজদা করবে কিন্তু তার থেকে সেটা গ্রহণ করা হবে না এবং অনুমতি চাইলে অনুমতিও দেয়া হবে না। তাকে বলা হবে যে পথে এসেছো সে পথে ফিরে যাও! তখন সে পশ্চিম আকাশে উদিত হবে। (তখনই ক্বিয়ামত ঘনিয়ে আসবে, সেদিন থেকে আর তওবা কবুল হবে না)। ” (বুখারী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২৯৭২, ৩১৯৯)
এ বিষয়টা আরো সুস্পষ্ট হয় পবিত্র বিদায় হজ্জ মুবারক উনার খুৎবা মুবারক দ্বারা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বিদায় হজ্জ মুবারকে) মিনায় অবস্থানকালে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা কি জানেন এটি কোন্ দিন? হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই সবচেয়ে ভালো জানেন। এরপর জিজ্ঞেস করলেন, এটা কোন মাস? উনারা একই জবাব দিলেন। এটা কোন শহর? এর জবাবেও উনারা একই উত্তর দিলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই সবচেয়ে ভালো জানেন। সুবহানাল্লাহ!
এই প্রত্যেকটা প্রশ্নের জবাবই উনাদের জানা ছিলো। কিন্তু উনারা উত্তর না দিয়ে বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই সবচেয়ে ভালো জানেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাদের মুহব্বত, আনুগত্য, আদব কতো উচ্চ পর্যায়ের ছিলেন। সেটা চিন্তা ও ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ!
পরবর্তী উম্মতের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা এবং সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ আদব রক্ষা করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সকলকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন! (সমাপ্ত)
-মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক উনার নূরের আলোতে পুরো পবিত্র হুজরা শরীফ আলোকিত হওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৫)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত যায়িদ বিন হারেছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৪)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার গুরুত্ব এবং আবশ্যকতা
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৩)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারকই হচ্ছেন মুসলমান উনাদের একমাত্র শাসন ব্যবস্থা
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (২)
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার পরিচিতি
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)