নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত, আদব, তা’যীম-তাকরীম মুবারক উনার কতিপয় দৃষ্টান্ত (৩)
, ২৫ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৩ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
আরো বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ لَقَدْ رَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْحَلَّاقُ يَحْلِقُهٗ وَاَطَافَ بِهِ اَصْحَابُهٗ فَمَا يُرِيْدُوْنَ اَنْ تَقَعَ شَعْرَةٌ اِلَّا فِىْ يَدِ رَجُلٍ
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এমন অবস্থায় দেখেছি যে, ক্ষৌরকার উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ্ মুবারক (চুল মুবারক) হলক্ব (মু-ণ) করছেন আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা উনার চারদিক প্রদক্ষিণ করছেন অর্থাৎ উনাকে ঘিরে রয়েছেন। উনারা চাচ্ছিলেন উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ্ মুবারকও যেন নিচে না পড়ে। বরং উনাদের কারো না কারো হাত মুবারকেই পড়ে। ” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ ৩/১৩৭)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তা’যীম বা সম্মান মুবারক উনার কারণে উনার সামনে বসা অবস্থায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ উনারা উনাদের মাথা মুবারক উচু করতেন না। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন। হযরত বুরাইদাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন-
كُنَّا اِذَا قَعَدْنَا عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ نَرْفَعْ رُءُوْسَنَا اِلَيْهِ تَعْظِيْمًا لَهٗ
অর্থ: “আমরা যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ বসতাম তখন উনার প্রতি বেমেছাল তা’যীম, সম্মান মুবারক উনার কারণে আমরা আমাদের মাথা মুবারক উচু করতাম না। ” সুবহানাল্লাহ! (শু‘আবুল ঈমান ৩/১০৫)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে বা উনার মজলিস মুবারকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ উনারা এমনভাবে বসতেন যেন উনাদের মাথা মুবারকে পাখি বসে আছে। একটু নড়া-চড়া করলেই সেটা উড়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন-
وَرُوِّيْنَا فِىْ حَدِيْثِ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ فِىْ قِصَّةِ الْجَنَازَةِ قَالَ فَجَلَسَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَلَسْنَا حَوْلَه كَاَنَّ عَلَى رُءُوْسِنَا الطَّيْرَ
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত জানাযার ঘটনা সংক্রান্ত হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ রয়েছেন। হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বসলেন আর আমরা উনার চারিদিকে এমনভাবে বসলাম; যেন আমাদের মাথার উপর পাখি বসে রয়েছে। ” সুবহানাল্লাহ! (শু‘আবুল ঈমান ৩/১০৫)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারকে উনাদের শব্দ চয়ন ছিলো আশ্চর্যজনক। উনারা যে সর্বদিক থেকেই সবচেয়ে বেশি মুহব্বত মুবারক করতেন এবং সর্বোচ্চ আদব রক্ষা করতেন। তার বাস্তব নমুনা ফুটে উঠেছে নিম্নোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ উনার মাঝে।
عَنْ حَضْرَتْ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ وُلِدْتُ اَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيْلِ. وَسَاَلَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ قُبَاثَ بْنَ اَشْيَمَ اَخَا بَنِىْ يَعْمَرَ بْنِ لَيْثٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ اَاَنْتَ اَكْبَرُ اَمْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَكْبَرُ مِنِّىْ وَاَنَا اَقْدَمُ مِنْهُ فِى الْمِيْلَادِ وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيْلِ
অর্থ: “হযরত ক্বাইস ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত পিতা থেকে, তিনি উনার সম্মানিত দাদা থেকে বর্ণনা করেন। উনার দাদা বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং আমি হস্তী বছরে (আবরাহার বাহিনী ধ্বংসের বছর) বিলাদত শরীফ গ্রহণ করি। (তিনি বলেন,) ইয়া’মার ইবনে লাইছ গোত্রীয় হযরত কুবাছ ইবনে আশইয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে তৃতীয় খলীফা সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, (বয়সের দিক থেকে) আপনি বড় নাকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বড়? তিনি জবাব দিলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার চেয়ে অনেক বড়, তবে আমি বিলাদত শরীফ গ্রহণের দিক থেকে যমীনে আগে এসেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাতির বছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৩৬১৯) (অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঝুটা মুবারক খাওয়ার ফলে বরকত মুবারক লাভ
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল বারাকাত মুবারক উনার ফলে কূপের পানি সবচেয়ে অধিক সুপেয় ও সুমিষ্ট হয়ে যাওয়া
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বগল মুবারক উনার শুভ্রতা মুবারক
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৩)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুলি মুবারক করা পানি কূপে পতিত হওয়ার কারণে কুপ থেকে মেশকের চেয়ে অধিক সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন আলা নূর মুবারক উনার মাঝে দায়িমীভাবে নূর মুবারক চমকানো
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাসি মুবারককালে পাশ্ববর্তী দেয়ালসমূহ আলোকিত হয়ে যাওয়া
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক বলার সময় নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক থেকে নূর মুবারক সৃষ্টি হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)