নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ
, ২৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
প্রথম শাদী মুবারক
মহাসম্মাতি ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক স্বীয় গোত্রর হয় মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ান মুছত্বলিক্বী খুযা‘য়ীর সাথে। সে একজন অনেক বড় যোদ্ধা এবং প্রসিদ্ধ কবি ছিলো। সে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদে কাফির অবস্থায় নিহত হয়। এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
تزوجها قبله مسافع بن صفوان وقتل يوم المريسيع
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে মহাসম্মাতি ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শাদী মুবারক হয় মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ানের সাথে। সে মুরাইসী’র জিহাদের দিন নিহত হয়। ” (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ২/২৫২)
উল্লেখ্য যে, মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ান অবশ্যই বনূ মুছত্বলিক্ব গোত্রের লোক ছিলো, সে মহাসম্মাতি ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার আপন চাচাতো ভাই ছিলো না; বরং দূর সম্পর্কীয় চাচাতো ভাই ছিলো।
বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে ৯ মান্যিল দূরে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের অধীনে ‘আল মুরাইসী’ নামে একটি কূপ ছিলো। বনূ মুছ্ত্বলিক্বের জিহাদে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে এই কূপের নিকট সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন বিধায় এই জিহাদকে ‘মুরাইসী’র জিহাদও’ বলা হয়।
বনূ মুছ্ত্বলিক্ব¡ ছিলো কুরাইশদের অন্যতম মিত্রশক্তি। তারা উহুদের জিহাদে কুরাইশদের সহযোগীতা করেছিলো এবং তাদের সাথে সরাসরি জিহাদে অংশগ্রহণও করেছিলো। ৫ম হিজরী শরীফ উনার শেষের দিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সংবাদ আসে যে, বনূ মুছ্ত্বলিক্বের প্রধান হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম (তখনও ঈমান আনেননি) তিনি কুরাইশ ও মুনাফিক্বদের ওয়াস্ওয়াসায় পড়ে নিজের ও আরবের অন্যান্য গোত্রের লোকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনী নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীফ আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সংবাদ পেয়ে প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য হযরত বুরাইদাহ্ ইবনে হুছাইব আসলামী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে পাঠান। তিনি সেখানে পৌঁছে সরাসরি হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম উনার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলেন, ঘটনা সত্য। তিনি সাথে সাথে ফিরে এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ প্রকৃত অবস্থা জানান। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে খুব দ্রুত জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী সকলেই খুব দ্রুত প্রস্তুত হয়ে যান। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য থেকে একজনকে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে সম্মানিত জিহাদ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সুবহানাল্লাহ! সময়টি ছিলো ৫ম হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার মাঝামাঝি সময়। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্বপ্ন মুবারক:
ইমাম বাইহাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘দালাইলুন নুবুওওয়াহ শরীফ’-এ এবং হযরত ইমাম জালালুদ্দী সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘খছায়িছুল কুবরা শরীফ’-এ এছাড়াও আরো অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেন,
قَالَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلثَّامِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْـحَارِثِ عَلَيْهَا السَّلَامُ) رَاَيْتُ قَبْلَ قُدُوْمِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثَلَاثِ لَيَالٍ كَاَنَّ الْقَمَرَ يَسِيْرُ مِنْ يَّثْرِبَ حَتّٰى وَقَعَ فِـىْ حِجْرِىْ فَكَرِهْتُ اَنْ اُخْبِرَ بِـهَا اَحَدًا مِّنَ النَّاسِ حَتّٰى قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বনূ মুস্ত¡লিক্বের জিহাদ-এ) সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে আমি (পরপর) তিন রাত একখানা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখি, যেন সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দিক থেকে চাঁদখানা ছুটে এসে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলাটা আমি পছন্দ করিনি। অবশেষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক রাখলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৪/৫০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/২৮, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ১/৩৯১, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/৮৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৪/৩৭৪ এবং ১১/২১১, তাফসীরে মাযহারী ৯/৩০৬, শরহুয যারক্বানী ৩/৭, তারীখে ত্ববারী ১১/৬১০, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১৮২ ইত্যাদি)
বনূ মুস্তালিক্বের সম্মানিত জিহাদ মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ও পবিত্র ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৫ম হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার মাঝামাঝি সময়ে সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার উদ্দেশ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হতে রওয়ানা করে বনূ মুছ্ত্বলিক্বের ‘আল মুরাইসী’ নামক কূপের নিকট তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনার নেতৃত্বে গঠিত কাফিরদের সম্মিলিত বাহিনীর নিকট সব খবর পৌঁছলে তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। অন্যান্য আরব গোত্র জিহাদের ইচ্ছা ত্যাগ করে যার যার মত বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনার সাথে শুধু উনার গোত্রের লোকেরাই অবশিষ্ট থাকে। তারা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায় এবং দীর্ঘক্ষণ তীর-বর্শা ছুড়ে ছুড়ে মুসলমান উনাদেরকে প্রতিরোধ করার চেষ্ট করে। অবশেষে সম্মানিত মুসলিম বাহিনী হঠাৎ এক সাথে আক্রমণ করে শক্র বাহিনীকে পরাজিত করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি সেখান থেকে সরে দূরে চলে যান।
এই জিহাদে মুসাফি’ ইবনে ছাফ্ওয়ানসহ ১১ জন কাফির মারা যায় এবং অন্যরা সকলে বন্দী হয়। কাফিরদের হাতে সম্মানিত মুসলমান উনাদের মধ্য হতে কেউ সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি। তবে অজান্তে হযরত উবাদা ইবনে সামিত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার হাতে হযরত হিশাম ইবনে সাবাবা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু নামে একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। শত্রু পক্ষের পুরুষ-মহিলা-শিশু মিলে প্রায় ৬০০ জন বন্দী হয় এবং তাদের দুই হাজার উট, পাঁচ হাজার ছাগল-ভেড়া গনীমত হিসেবে সম্মানিত মুসলমান উনারা লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ:
যুদ্ধবন্দীদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনিও ছিলেন। তিনি হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মতান্তরে উনার চাচাতো ভাই উনার ভাগে পড়েন। তখন মহাসম্মাতি ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার দেখা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তব রূপ লাভের প্রত্যাশা করতে থাকেন। যেটা কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
قَالَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلثَّامِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ جُوَيْرِيَةُ بِنْتُ الْـحَارِثِ عَلَيْهَا السَّلَامُ) رَاَيْتُ قَبْلَ قُدُوْمِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثَلَاثِ لَيَالٍ كَاَنَّ الْقَمَرَ يَسِيْرُ مِنْ يَّثْرِبَ حَتّٰى وَقَعَ فِـىْ حِجْرِىْ فَكَرِهْتُ اَنْ اُخْبِرَ بِـهَا اَحَدًا مِّنَ النَّاسِ حَتّٰى قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا سُبِيْنَا رَجَوْتُ الرُّؤْيَا
অর্থ: “মহাসম্মাতি ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বনূ মুস্ত¡লিক্বের জিহাদ-এ) মহাসম্মাতি ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে আমি (পরপর) তিন রাত একখানা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখি, যেন মহাসম্মাতি ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার দিক থেকে চাঁদখানা ছুটে এসে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলাটা আমি পছন্দ করিনি। অবশেষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক রাখলেন। সুবহানাল্লাহ! যখন আমরা বন্দী হলাম, তখন আমি আমার দেখা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তব রূপ লাভের প্রত্যাশা করলাম। ” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী ৪/৫০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/২৮, খছায়িছুল কুবরা ১/৩৯১, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/৮৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৪/৩৭৪ এবং ১১/২১১, তাফসীরে মাযহারী ৯/৩০৬, শরহুয যারক্বানী ৩/৭, তারীখে ত্ববারী ১১/৬১০, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১৮২ ইত্যাদি)
সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার বাস্তবতা প্রত্যাশা করার কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে মুকাতাবার বিষয়টি ফায়ছালা করলেন। মুকাতাবা বা চুক্তি হলো- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে ৯ আউক্বিয়াহ্ স্বর্ণ দিবেন, তাহলে তিনি উনার অধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সরাসরি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিয়ে বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি একজন মুসলমান মহিলা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! আমি হচ্ছি সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে আবূ দ্বিরার আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়াহ্ আলাইহাস সালাম। আমার উপর যে বিপদ আপতিত হয়েছে, তা আপনার কাছে গোপন নেই। অর্থাৎ সবকিছুই আপনার জানা রয়েছে। আমি হযরত ছাবিত ইবনে ক্বইস্ ইবনে শাম্মাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার ভাগে পরেছি। উনার সাথে মুকাতাবা করেছি। আমি আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসেছি এবং আপনার নিকট আমার মুকাতাবার বিষয়ে সাহায্য প্রার্থনা করছি। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি কী এর চেয়ে উত্তম কিছু প্রত্যাশা করেন? মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেটা কী? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- আমি আপনার পক্ষ থেকে আপনার চুক্তিকৃত নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করে দিবো এবং আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করবো। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হ্যাঁ; আমি এটাই চাই। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাই করলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মাঝে এই সংবাদ মুবারক পৌঁছে গেলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ, মুসনাদে আহমদ, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী, মুস্তাদরকে হাকিম, আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী, শরহু মা‘য়ানিল আছার, ওয়াক্বিদী, ইবনে হিশাম, ইবনে সা’দ, তারীখে ত্ববারী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, ইছাবাহ, শরহুয যারক্বানী, ইবনে সা’দ ইত্যাদি)
৫ম হিজরী শরীফ উনার ২৮শে যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ (জুমু‘য়াহ্ শরীফ রাত) সম্মানিত জিহাদ মুবারক শেষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পূর্বেই এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন অর্থাৎ প্রায় ২০ বছর। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ বছর হিসেবে ২০ বছর আর দিন হিসেবে ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মোহরানা মুবারক:
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মোহরানা মুবারক ছিলেন ৫০০ দিরহাম। ’ সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক বলার সময় নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক থেকে নূর মুবারক সৃষ্টি হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক উনার নূরের আলোতে পুরো পবিত্র হুজরা শরীফ আলোকিত হওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৫)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত যায়িদ বিন হারেছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৪)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার গুরুত্ব এবং আবশ্যকতা
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৩)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)