নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত রওযা শরীফ ও মদীনা শরীফে দূরভিসন্ধিকারীদের ধ্বংস অত্যাবশ্যকীয় (২)
, ১৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ মে, ২০২৪ খ্রি:, ০৯ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
পূর্ব প্রকাশিতের পর
মহাসম্মানিত রওযা শরীফ ও মহাসম্মানিত মদীনা শরীফে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, বেয়াদবীর অপচেষ্টা করেছে, হাক্বীক্বী আদব রক্ষা করেনি, তারা প্রত্যেকেই অত্যধিক নির্মমভাবে ধ্বংস হয়েছে। খোদায়ী লা’নত তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ইতিহাসে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নযীর স্থাপিত হয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে কিছু উপমা তুলে ধরা হলো-
নির্ভরযোগ্য ইতিহাস গ্রন্থ ‘তারীখে বাগদাদে’ উল্লেখ করা হয়, ৩৮৬ হিজরীতে পবিত্র মদীনা শরীফ মিশরীয় ফাতেমী উবায়দী শাসনের আওতাভুক্ত ছিল। তৎকালীন শাসকের ইহুদী উযীর পরামর্শ দিলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাপবিত্র রওযা শরীফ মদীনা শরীফে স্থাপিত হওয়ায় সমস্ত মুসলমানগণ মদীনা শরীফ গমনে সর্বদা ব্যাকুল থাকেন। লক্ষ লক্ষ লোক সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করেন। উনাদের জিসিম মুবারক যদি মিশরে আনা হতো, তাহলে মানুষ মদীনা শরীফের পরিবর্তে মিশর অভিমুখী হতো। ফলে মিশরবাসী অর্থনৈতিক-সামাজিকসহ সার্বিকভাবে লাভবান হতো। ইহুদী উযীরের পরামর্শে সেই শাসকও রাজি হয়ে গেল। পবিত্র কা’বা শরীফ হতে বিরত রাখার অপচেষ্টাকারী আবরাহার অনুকরণে সেই শাসক মিশরে সুরম্য ভবন তৈরী করলো এবং আবুল ফুতুহ নামীয় সেনাপতির তত্ত্বাবধানে মদীনা শরীফে সেনাবাহিনী প্রেরণ করলো। অবস্থা দৃষ্টে মদীনা শরীফবাসী প্রত্যেকেই বেরিয়ে আসলেন প্রতিবাদ প্রতিরোধের জন্য। কিন্তু সেনাবাহিনীর সামনে উনারা নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন। উনারা আবুল ফুতুহকে এ ঘৃণ্য কাজে বারণ করলেন। অপর দিকে সকলেই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রোনাজারী-আহাজারীর সাথে দোয়া করলেন। কিন্তু আবুল ফুতুহ তার সিদ্ধান্তে সে অটল রইলো। পরিস্থিতির প্রতিকূলতার দরুণ পবিত্র মদীনা শরীফবাসী পবিত্র রওযা শরীফে কান্নাকাটি করতঃ আপন গন্তব্যে ফিরে গেলেন। এ দিকে মিশরবাসী তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে যখন উদ্যোগী হলো, তখনই আসলো খোদায়ী ব্যবস্থাপনা। শুরু হলো প্রচন্ড বাতাস। বাতাসের তোড়ে সেনাবাহিনীর আসবাবপত্র উড়ে গেল। উদভ্রান্ত হলো তাদের বাহনগুলো। জন্তুগুলো সেনাবাহিনীকে পদপিষ্ট করলো। অনেকেই আহত-নিহত হলো। গুটি কয়েকজন মিশরে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে কোন রকমে রক্ষা পেলো। আর এভাবেই রওযা শরীফ বিরোধী প্রথম ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেয়া হলো।
ওয়াফাউল ওয়াফা নামক গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়, পবিত্র রওযা শরীফ উনার ক্ষতিসাধনের প্রকাশ্য অপপ্রচেষ্টা সমূলে বিধ্বংস হলে, তারা গোপন ষড়যন্ত্রকে বেছে নেয়। ৪১১ হিজরীতে তারা গোপনে কিছু লোককে প্রেরণ করে। তারা দূর থেকে সুড়ঙ্গ করতে থাকে। তাদের সুড়ঙ্গ পবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকটবর্তী হলে মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মু’জিযা শরীফ জাহির হয়। সুড়ঙ্গের যেখানে তারা কাজ ও অবস্থান করছিল, ঠিক সেই বরাবর বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়। ফলশ্রুতিতে তারা ও তাদের সুড়ঙ্গ উন্মোচিত হয়ে পড়ে। এদিকে গায়েবীভাবে নেদা হয়, “হে মদীনা শরীফবাসী! এরা মহাসম্মানিত রওযা শরীফ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এদেরকে গ্রেফতার করুন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুন।” মুহূর্তের মধ্যে মদীনা শরীফবাসীগণ যথাস্থানে উপস্থিত হন এবং তাদের সকলকে গ্রেফতার করে শুলে চড়িয়ে হত্যা করেন। আর এভাবেই পবিত্র রওযা শরীফ উনার সাথে বেয়াদবীকারীদের দ্বিতীয় ষড়যন্ত্র মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)