নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার স্বীয় তাফসীরগ্রন্থ ‘রওয়াই‘উত তাফসীর’ এবং উনার লিখিত বুখারী শরীফ উনার শরাহগ্রন্থ ‘ফাত্হুল বারী’ এই দুই কিতাবে বলেন,
وَاَمَّا خَوَاصُّ الْمُؤْمِنِيْنَ فَكُلُّ يَوْمٍ لَّهُمْ عِيْدٌ كَمَا قَالَ بَعْضُ الْعَارِفِيْنَ وَرُوِىَ عَنْ حَضْرَتْ اَلْحَرِمِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ كُلُّ يَوْمٍ لَا يُعْصَى اللهُ فِيْهِ فَهُوَ عِيْدٌ
অর্থ: “আর খাছ মু’মিন উনাদের জন্য প্রত্যেকটি দিনই ঈদ। যেমনটা কতিপয় আরিফীন অর্থাৎ হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন। হযরত হারিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত রয়েছেন, ‘প্রত্যেক ঐ দিন, যেই দিন মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করা হয় না, সেদিন ঈদ’।” সুবহানাল্লাহ! (রওয়াই‘উত তাফসীর ১/৩৯৪-৩৯৫, ফাতহুল বারী লি ইবনে রজব ১/১৭৬)
হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘লাত্বায়িফুল মা‘আরিফ’ কিতাবের ২৭৮ নং পৃষ্ঠায় আরো বলেন,
اَرْكَانُ الْاِسْلَامِ الَّتِىْ بُنِىَ الْاِسْلَامُ عَلَيْهَا خَمْسَةٌ اَلشَّهَادَتَانِ وَالصَّلٰوةُ وَالزَّكٰوةُ وَصِيَامُ رَمَضَانَ وَالْحَجُّ فَاَعْيَادُ عُمُوْمِ الْمُسْلِمِيْنَ فِى الدُّنْيَا عِنْدَ اِكْمَالِ دَوْرِ الصَّلٰوةِ وَاِكْمَالِ الصِّيَامِ وَالْحَجُّ يَجْتَمِعُوْنَ عِنْدَ ذٰلِكَ اِجْتِمَاعًا عَامًا فَاَمَّا الزَّكٰوةُ فَلَيْسَ لَهَا وَقْتٌ مُعَيَّنٌ لِيَتَّخِذَ عِيْدًا بَلْ كُلُّ مَنْ مُلِمُّ نِصَابًا فَحَوْلَهٗ بِحَسْبِ مِلْكِهٖ وَاَمَّا الشَّهَادَتَانِ فَاِكْمَالُهَا يَحْصُلُ بِتَحْقِيْقِهِمَا وَالْقِيَامُ بِحُقُوْقِهَا وَخَوَاصُّ الْمُؤْمِنِيْنَ يَجْتَهِدُوْنَ عَلٰى ذٰلِكَ فِىْ كُلِّ وَقْتٍ فَلِذٰلِكَ كَانَتْ اَوْقَاتُهُمْ كُلُّهَا اَعْيَادًا لَهُمْ فِى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ
অর্থ: “মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার রুকনসমূহ ৫টি, যার উপর মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। (সেগুলি হচ্ছেন-) ১. শাহাদাতান বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ, ২. সম্মানিত ছলাত বা নামায, ৩. সম্মানিত যাকাত, ৪. সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা এবং ৫. সম্মানিত হজ্জ। সুবহানাল্লাহ! কাজেই দুনিয়াতে সাধারণ মুসলমান উনাদের জন্য ঈদ হচ্ছেন সম্মানিত ছলাত বা নামায পূর্ণকরণের সময়, সম্মানিত রোযা এবং সম্মানিত হজ্জ পূর্ণকরণের সময়। সম্মানিত হজ্জ উনার সময় সম্মানিত মুসলমান উনারা বৎসরে একবার একত্রিত হন। সম্মানিত যাকাত উনার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই, যেটা ঈদ হিসেবে গ্রহণ করা হবে; বরং প্রত্যেক ঐ ব্যক্তি যিনি উনার নিছাব জানতে পারেন, তারপর উনার মালিকানায় যা রয়েছে সেটার হিসাব পরিবর্তন করেন অর্থাৎ সম্মানিত যাকাত আদায় করে নতুন বছর গণনা করা শুরু করেন। আর শাহাদাতান বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ উনার পূর্ণকরণ হচ্ছেন মহাসম্মনিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ উনার উপর ঈমান আনা এবং সেই অনুযায়ী আমল করা। সুবহানাল্লাহ! আর খাছ মু’মিনগণ উনারা সবসময় ঐ সমস্ত বিষয় (বাস্তবায়নে) চেষ্টা-কোশেশ করেন। এ কারণেই খাছ মু’মিনগণ উনাদের দুনিয়া এবং আখিরাতের প্রত্যেকটা সময়ই হচ্ছেন উনাদের জন্য ঈদ।” সুবহানাল্লাহ! (লাত্বাইফুল মা‘আরিফ ২৭৮ নং পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার অপর দুই কিতাবে বলেন,
وَخَوَاصُّ الْمُؤْمِنِيْنَ يَجْتَهِدُوْنَ عَلٰى ذٰلِكَ كُلَّ يَوْمٍ وَوَقْتٍ فَلِهٰذَا كَانَتْ اَيَّامُهُمْ كُلُّهَا اَعْيَادًا وِلِذٰلِكَ كَانَتْ اَعْيَادُهُمْ فِى الْجَنَّةِ مُسْتَمِرَّةً
অর্থ: “আর খাছ মু’মিনগণ উনারা প্রতিদিন এবং প্রতিটি সময় ঐ সমস্ত বিষয় বাস্তবায়নে চেষ্টা-কোশেশ করেন, ফলে উনাদের প্রতিটি দিনই ঈদ। আর এ কারণে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে উনাদের ঈদ হবেন স্থায়ী অর্থাৎ সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে উনাদের জন্য সবসময় ঈদ হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (রওয়াই‘উত তাফসীর ১/৩৯৪-৩৯৫, ফাতহুল বারী লি ইবনে রজব ১/১৭৬)
তাহলে এ কথা কি করে বলা যেতে পারে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে আগমন অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ) উনাকে ‘ঈদ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না’? না‘ঊযুবিল্লাহ!
এখন বাতিল ফিরক্বার লোকদের নিকট সুওয়াল হচ্ছে, তাহলে হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কি নিজের বিরুদ্ধে নিজে ফতওয়া দিয়েছেন? না‘ঊযুবিল্লাহ!
এছাড়া ‘সম্মানিত মুসলমান উনাদের জন্য দুনিয়াতে যে দিনগুলি ঈদ, সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যেও উনাদের জন্য সেই দিনগুলি ঈদের দিন হবেন।’ হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এ কথা দ্বারা এই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্ট যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে আগমন উপলক্ষে যাঁরা শুকুরগুজারী করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ) উনাকে ঈদ হিসেবে, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ হিসেবে গ্রহণ করবেন, উনারা পরকালেও এই দিন ঈদ পালন করবেন, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবেন।” সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আওলাদি রসূলিল্লাহ, জামিয়াতুল মাক্বামাত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীমাহ শরীফ
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২২)
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
এক নযরে রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৮)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২১)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)