নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত না করায় রপ্তানীতে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। অপরদিকে দিন দিন রোগাক্রান্ত হচ্ছে দেশবাসী। দূষিত খাদ্য উৎপাদন এবং ভেজাল খাদ্য বাজারজাত দুটোই সরকারকে কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
, ২২ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ২৩ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
খাদ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশের খাদ্যের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে।
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এছাড়া সংরক্ষণ দুর্বলতা ও উৎপাদন পরবর্তী ক্ষতির কারণেও উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে এখনো অনেক পিছিয়ে। অথচ মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্যসংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নকারী সংস্থা রয়েছে ১৮টি। বাস্তবায়নকারী দপ্তর/অধিদপ্তর ১৮টি এবং স্থানীয় সরকার সংস্থা (সিটি করপোরেশনসহ) রয়েছে ৩৪২টি। এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অনিরাপদ খাদ্যের কারণে দুই শতাধিক রোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। অন্যদিকে কৃষিপণ্যের রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। দেশ বঞ্চিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা থেকে।
জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের গবেষণায় কৃষিপণ্যের মধ্যে ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, সিসা ও আর্সেনিকের অস্তিত্ব মিলেছে। ইউরোপীয় কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী, মানবদেহের জন্য ক্রোমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১ পিপিএম। আর গবেষণায়, চালে ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ৪১৪ পিপিএম পর্যন্ত। ক্যাডমিয়ামের সহনীয় মাত্রা শূন্য দশমিক ১ পিপিএম হলেও গবেষণায় মিলেছে ৩ দশমিক ২৩৯৫ পিপিএম পর্যন্ত। সিসার সহনীয় মাত্রা শূন্য দশমিক ২ পিপিএম। তবে গবেষণায় ১ দশমিক ৮৭ পিপিএম পর্যন্ত মিলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালে ক্যাডমিয়ামের প্রধান কারণ জমিতে নিম্নমানের টিএসপি সার প্রয়োগ এবং গার্মেন্টস শিল্প, ওষুধ কারখানা, টেক্সটাইল ও ট্যানারির অপরিশোধিত বর্জ্য।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, সিসা ও আর্সেনিক মানুষের শরীরে ঢুকলে তা বের হতে পারে না। যা দীর্ঘ মেয়াদে কিডনি, লিভার ও মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া ক্যান্সারসহ নানা ধরনের ক্রনিক রোগের বড় উৎস হচ্ছে এসব রাসায়নিক। এগুলো ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে দুই শতাধিক রোগ হতে পারে। এসব রোগের মধ্যে রয়েছে পাকস্থলীতে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, ক্যান্সার, মানসিক ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি। গর্ভের ভ্রƒণ থেকে শুরু সব বয়সি মানুষের ওপরই অনিরাপদ খাবারের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, ক্রয়ক্ষমতা থাকলেও সচেতনতা ও নিরাপদ খাদ্যের অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ মানুষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কীটনাশকের ব্যবহার। বিভিন্ন সময়ে দেশে উৎপাদিত এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা খাদ্যে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের অস্তিত্ব মিলছে। উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব যেসব কর্তৃপক্ষ কাজ করছে তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। খাদ্য উৎপাদন করেন কৃষক, এর দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয়ের। খাদ্য উৎপাদনের জন্য কীটনাশক-রাসায়নিক সার ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয় কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে। এভাবে খাদ্য উৎপাদনের কারণে শত শত রোগের সৃষ্টি হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তা বন্ধ করার দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে যে কয়টি মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বিতভাবে কাজ করার কথা তারা তা করছে না। আন্তঃসংস্থার সমন্বয়ের অভাবে তাদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।
খাদ্যে ভেজাল মেশানো দেশে একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে এবং যারা এতে জড়িত, বিশেষ করে যারা এর মূলহোতা, তারা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান। এরা প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন দলের সদস্য। তাই তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন। কোনো আইন তাদের স্পর্শ করতে পারে না।
খাদ্য জীবনের জন্য অপরিহার্য। সেই খাবার যদি বিষাক্ত হয় তাহলে তা শরীরের পরিপাকতন্ত্র, লিভার-কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য ক্ষতিকর। দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়লেও ভেজাল খাবার খেয়ে এরই মধ্যে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
দেশের ১২টি উপজেলার রেস্টুরেন্টের উপর করা এক গবেষণায় সেখানকার পানিতে লক্ষাধিক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মিলেছে। অথচ এই সংখ্যাটি সর্বোচ্চ হওয়া উচিত ছিলো ১০০টি। দেশে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে পারলে অনেক রোগবালাই থেকে মুক্তি মিলত। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৮৯টি দেশ কোডেক্সের সদস্য। কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিউস বা ‘খাদ্য কোড’ আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত খাদ্য মানগুলির একটি নির্দেশনা। এই মানগুলো কোডেক্স নির্দেশনা অনুসরণ করলে আমাদের ব্যবসা নিশ্চিত হবে, জনস্বাস্থ্য নিরাপদ থাকবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোনো খাদ্যই নিরাপদ হবে কিনা তা উৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রি, ঘরে এনে রান্না ও পরিবেশন করা এবং খাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ‘নিরাপদ’ করার ব্যাপার আছে। এটি একটি চেইন। এর কোনো একটি জায়গায় যদি বিঘœ ঘটে তাহলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। খাদ্য যেখান থেকে উৎপাদিত হয় এবং খাবারের মুহুর্ত আসার আগ পর্যন্ত যত ধাপ পার হয়ে আসে তার মধ্যে অনেক কিছু যুক্ত হয়ে এ খাদ্যকে বিষাক্ত করে তুলছে।
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে পরিবেশ দূষণ বন্ধ করা জরুরি। উৎপাদন ক্ষেত্রে এবং পরে সংরক্ষণ ক্ষেত্রে খাদ্য দূষিত হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষিত হচ্ছে উৎপাদন প্রক্রিয়ায়। নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে এই দুটি জায়গায় কাজ করা জরুরি।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ প্রণয়ন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) গঠন করেছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে একটি টোল ফ্রি কল সেন্টার চালু করে সরকার। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৬১৫৫ নম্বরে ফোন করে খাদ্য নিশ্চিতকরণের বিষয়ে যে কোনো পরামর্শ বা অভিযোগ জানানো যাবে। তবে এই নাম্বারটি নিয়ে প্রচার ও প্রচারণা কম থাকায় তা এখনো জনপ্রিয়তা পায়নি।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)