নমরুদের মশা আর এডিস মশার মধ্যে যেমন পার্থক্য নেই তেমনি পার্থক্য নেই নমরুদবাদ আর ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মধ্যে। নমরুদ মশার ও এডিস মশার গযব থেকে বাঁচতে হলে অবিলম্বে নমরুদবাদ তথা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রত্যাহার করতে হবে।
, ০৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ৭ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের। কিন্তু অলিখিতভাবে তথা বাস্তবে এ মালিকানা ভোগ করে সরকার। সরকারের রয়েছে সেনাবাহিনী, এ্যালিট ফোর্স র্যাব, গোয়েন্দা বাহিনী, পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন বল প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনগুলোর মতো স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানসহ, হাসপাতাল, ও বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রসহ নানা সেবাপ্রদাণকারী সংগঠন। সব মিলিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র তথা তার সরকার নিজেদের দৈত্যরূপ শক্তিশালী মনে করে থাকে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের সূচনালগ্নে সংবিধানে গৃহীত ধর্মনিরপেক্ষতা উক্ত রূপ ধ্যান ধারণার ভিত্তিমূল। এ কারণে সরকারের নীতিমালায় ও কর্মকা-ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার কোন প্রতিফলন বা প্রয়োগ নেই। সরকারের কোনো কোনো মুখপাত্রের ভাষ্য অনুযায়ী সরকারেই দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন করে। সরকারেই জনগণকে খাওয়ায়। তাই তাদের মতে দুটোর চেয়ে বেশি সন্তান নিলে অতিরিক্ত ট্যাক্স নেয়া উচিত। পাশাপাশি তাদের ধারণা অনুযায়ী সরকারেই জনগণের স্বাস্থ্যে সুরক্ষা ঘটায় এবং সরকারই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে জনগণকে রক্ষা করে।
সরকারের পক্ষ থেকে এতোদিন যাবত গর্বভরে প্রচারণা হয়ে আসছে যে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। আবার এও প্রচার করা হচ্ছে উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, এবং নদীর মধ্যে কর্ণফুলী ট্যানেল- এগুলিকে উদাহারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বলার অপেক্ষা রাখেনা- এসব প্রকল্প সরকারের শক্তিমত্তার বিশেষ বহিঃপ্রকাশ। অপরদিকে সেনাবাহিনী এবং সামরিক শক্তিমত্তার দিক থেকেও বাংলাদেশের অবস্থানে বিশ্বের প্রায় দুশ দেশের মধ্যে প্রথম ৫০টির মধ্যে। কিন্তু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এতসব শক্তিমত্তা এখন ¯্রীয়মান হচ্ছে সামান্য এডিস মশার কাছে।
দুই সিটি কর্পোরেশন, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়, অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ সরকারের বিভিন্ন এজেন্সীসহ জনগণের সমন্বিত প্রয়াস তথা খোদ প্রধানমন্ত্রীর সার্বক্ষনিক নজরদারি ও নির্দেশনার পরও সামান্য এডিস মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা। ইতোমধ্যে সরকারী হিসেবে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় লাখখানেক, বেসরকারী হিসেবে আরো অনেক বেশি।
প্রসঙ্গত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, তিনি মশার উপমা দিতেও লজ্জাবোধ করেননা। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, ক্ষুদ্রাকৃতি এই মশার প্রায় ২৭০০ প্রজাতি রয়েছে। মশার একশরও বেশি চোখ রয়েছে, মশার মুখে ৪৮টি দাঁত রয়েছে, একটি মশার তিনটি পূর্ণ হার্ট (হৃদযন্ত্র) রয়েছে, মশার নাকে ছয়টি পৃথক ছুরি রয়েছে এবং প্রত্যেকটি ছুরির পৃথক ব্যবহার তারা করে থাকে, মশার শরীরে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন আছে যা দিয়ে রাতের আঁধারে মানুষের চামড়াকে শনাক্ত করে, মশা উড়ার সময় সেকেন্ডে প্রায় ৫০০ বার তাদের পাখা নাড়ায়, বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যুর জন্যে সব প্রাণীর মধ্যে মশাই বেশি দায়ী, যেমনটি হচ্ছে এডিস মশা।
হাক্কানী-রব্বানী উলামায়ে কিরাম মনে করেন, নমরুদের মশা আর এডিস মশার মধ্যে বিষয়গত পার্থক্য নেই বললেই চলে। কারণ নমরুদবাদ ও নমরুদকে খতমকারী কানা, খোঁড়া মশার মতোই। এডিস মশা প্রায় লম্বায় ২ মিমি (০.১ ইঞ্চি) আর এডিস মশা সাধারণত প্রায় ৫ মিলিগ্রাম ওজনের হয়। আর এডিস মশার ডানার দৈর্ঘ্য (২.৭৪৭৪ মিমি)।
হাক্কানী-রব্বানী উলামায়ে কিরামগণ আরো মনে করেন যে, নমরুদবাদ আর ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মধ্যেও কোনো পার্থক্য নেই। তার জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের কারণেই সরকার আজো পর্যন্ত বলতে পারছেনা যে, এডিস মশা সরকার ও জনগণ উভয়ের জন্যই এক খোদায়ী গযব। এবং এ গযব থেকে পানাহ পাওয়ার জন্য সরকার জাতীয় পর্যায়ে তওবা ও মহাসম্মানিত মীলাদ শরীফ পাঠ ও পবিত্র দোয়া মাহফিলের আয়োজন করতে পারছেনা। সরকার শুধু মশার ঔষুধ নিয়ে ঠেলাঠেলি করছে। কিন্তু এসব হচ্ছে গযবে মশগুল থাকার চিহ্ন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, অতঃপর তাদের কাছে যখন আমার আযাব আসল, তখন কেন কাকুতি-মিনতি করল না? বস্তুতঃ তাদের অন্তর কঠোর হয়ে গেল এবং শয়তান তাদের কাছে সুশোভিত করে দেখাল, যে কাজ তারা করছিল। (পবিত্র সূরা আনয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪২)
তারা কি মহান আল্লাহ পাক উনার পাকড়াওয়ের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে? বস্তুতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার পাকড়াও থেকে তারাই নিশ্চিন্ত হতে পারে, যাদের ধ্বংস ঘনিয়ে আসে। (পবিত্র সূরা আরাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৯৯)
সুতরাং আমি তাদের উপর পাঠিয়ে দিলাম তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত প্রভৃতি বহুবিধ নিদর্শন একের পর এক। তারপরেও তারা গর্ব করতে থাকল। বস্তুতঃ তারা ছিল অপরাধপ্রবণ। (পবিত্র সূরা আরাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৩)
সঙ্গতকারণেই হক্কানী-রব্বানী উলামায়ে কিরামগণ আরো মনে করেন, এখন চুড়ান্ত সময় নমরুদবাদ তথা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ পরিহার করা ও তওবা করা। কারণ নমরুদবাদের মতোই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ মহান আল্লাহ পাক উনাকে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মনে করেনা। নাঊযুবিল্লাহ!
নমরুদবাদের মতোই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ- মানুষকেই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মনে করে। নাঊযুবিল্লাহ!
নমরুদবাদের মতোই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ শরঈ হুকুমের বিপরীতে গান-বাজনা, বেপর্দা, খেলাধুলা হারাম সংস্কৃতি ইত্যাদিতে মশগুল রাখে। দেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে তারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুসরণকারী হতে পারছেনা। ঈমানদার থাকতে পারছেনা। ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশের প্রভাবে বেশরঈ আমলের কারণে অতীতের মতো আযাব-গযব ডেকে আনছে; এডিস মশা তার প্রমাণ।
সুতরাং এ থেকে তওবা করতে যত দেরী হবে বিপর্যয় তত বেশি হবে। মূলতঃ ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান ধর্মনিরপেক্ষতার অধীন থাকতে পারেনা। পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন তাদের ঐচ্ছিক বা খেয়াল খুশীর বিষয় হতে পারেনা। সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফসহ বিশেষ আইয়্যামূল্লাহ শরীফ, আসন্ন আশুরা শরীফ অনাদরে অবহেলায় যাপিত হতে পারেনা। হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান মুবারক চুপিয়ে থাকতে পারেনা।
বলার অপেক্ষা রাখেনা, দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ অধিবাসী মুসলমান ধর্মনিরপেক্ষতার এ অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়। মূলত, ইসলামী প্রজ্ঞার অভাবে কোনো সরকারই এ সত্যটি আদৌ উপলব্ধি করতে পারেনি।
ছহিবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সোনার বাংলার আরেক সোনালী অর্থনীতি- মৎস্য সম্পদ এর সমৃদ্ধির সুফল জনগণের হাতে যথাযথভাবে তুলে দিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস এখন জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ নারিকেল দ্বীপ বাঁচানোর মিথ্যা প্রচারণার আগে সত্যিকার অর্থে ঢাকাকে বাঁচাতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)