ধান-চালের বাজার জিম্মি করছে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো। কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে তা গোডাউনে মজুত করা হচ্ছে।
তেল-পেঁয়াজের মতো আরেকটি বাজার বিপর্যয়ের শঙ্কায় জনগণ। সিন্ডিকেট ও দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকার জনগনের আস্থা এবং বিশ্বাসও ধরে রাখতে ব্যর্থ হবে।
, ২২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৪ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ০১ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
ইরি-বোরোর ভরা মওসুমে চালের দাম স্বাভাবিক থাকার কথা থাকলেও বাজারে দেখা যাচ্ছে তার উল্টো চিত্র। গত এক সপ্তাহ ধরেই চালের বাজার রহস্যজনকভাবে অশান্ত হয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই কেজিপ্রতি ৭ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশের পর সরকার এ বিষয়ে তৎপর হয়েছে। বাজারে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। কেউ অবৈধভাবে মূল্যবৃদ্ধি বা চাল মজুত করলে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব। কিন্তু এই উদ্যোগের সাফল্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ, সরকার বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য মোকাবেলায় অতীতে তেমন সাফল্য দেখাতে পারেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, ধান-চালের বাজারে করপোরেট হাউজ ও মৌসুমি ধান ব্যবসায়ীদের চোখ পড়েছে। আগে মিলাররা চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও এখন মূলত তারাই কলকাঠি নাড়ছে। অতিমুনাফার লোভে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে গোডাউনে মজুত করেছে। এই ধান সিন্ডিকেট করে মিলারদের কাছেধান-চালের বাজার জিম্মি করছে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো। কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে তা গোডাউনে মজুত করা হচ্ছে। বিক্রি করছে বাড়তি দরে। পাশাপাশি, ছয়টি প্রতিষ্ঠান প্যাকেজিং করে একই চাল যেটা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দাম, সেটা প্যাকেটজাত করে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি করছে। এমনকি যারা একেবারেই ধান ব্যবসায়ী নয়, তারাও মজুত করছে, ইট ভাটাওয়ালারাও মজুত করছে।
প্রসঙ্গত, চালের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের গোপন জোট বা সিন্ডিকেটের কথা দীর্ঘদিন ধরেই জোর সমালোচনা হচ্ছে। তারপরেও আজ পর্যন্ত এর কোনো সুরাহা হয়নি বরং উল্টো এর দৌরাত্ম্য ও বিস্তৃতি দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে স্থায়ী কোনো সমাধান দিতে পারছে না। সরকার এই চাল সিন্ডিকেট ভাঙতে বার বার অকার্যকর ও অসহায়ত্ত্বের পরিচয় দিচ্ছে।
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মজুতদারি নিষিদ্ধ করে এই অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের ২(ঙ) ধারায় মজুতদারির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোন আইন দ্বারা কোন ব্যক্তি মজুত বা গুদামজাত করার সর্বোচ্চ পরিমাণের বেশি দ্রব্য মজুত বা সংরক্ষণ করা। আইনের ২৫(১) ধারার বিধানে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। কেউ মজুতদারি বা কালোবাজারে লেনদেনের অপরাধে দোষী হলে তার আজীবন কারাদ- বা ১৪ বছরের কারাদ- হতে পারে। বলাবাহুল্য, এই আইনের মোটামুটি প্রয়োগ তথা প্রতিফলনেই বর্তমান সিন্ডিকেট অবস্থা তৈরী হতনা। কিন্তু তা না করেই অধিকন্তু ২০১২ সালে নতুন করে প্রতিযোগীতা আইন পাশ করে সরকার। এই আইনে বলা হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ করতে পারবে না। এমন কিছু হলে তা নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করা। কোড অব সিভিল প্রসিডিউর-১৯০৮ (অ্যাক্ট-৫ অব ১৯০৮)-এর অধীনে একটি দেওয়ানি আদালত যে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন, প্রতিযোগিতা কমিশনও সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। বলাবাহুল্য, এই আইনও যথাযথভাবে প্রয়োগ হয়নি। এমনকি মজুতদারি আইন এবং প্রতিযোগীতা আইন প্রয়োগের জন্য ২০১২ সালেই একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিলো। কিন্তু সে কমিশন স্বাধীন করা হয়নি এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করার সুবিধাও দেয়া হয়নি।
কারণ, এই কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অবসরে যাওয়া সচিবকে। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যেখানে মূল কাজ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষা করা সেখানে ভোক্তা বা সাধারণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ অনেকটাই গৌণ। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কোনো প্রতিষ্ঠান বা মন্ত্রণালয়ে যারা কর্মরত ছিলো, তাদের পক্ষে ব্যবসায়ীদের সেবা দেওয়া যতটা সহজ, ততটাই কঠিন সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কাজ করা। এছাড়া, এই কমিশনের জনবল ও লজিস্টিক সুবিধার ক্ষেত্রে নানা দুর্বলতায় থাকায় এটির কার্যক্রম বর্তমানে থমকে আছে। প্রতিযোগীতা কমিশনকে যদি মন্ত্রণালয়ের নিয়োগমুক্ত করা হয় তখনই কেবল এটির দ্বারা ভোক্তারা উপকৃত হতে পারবে।
উল্লেখ্য, ভারত, পাকিস্তানসহ ১০০টি দেশে এ ধরনের প্রতিযোগীতামূলক আইন চালু রয়েছে। সেখানকার নাগরিকরা এ আইনের সুফল ভোগ করছে। কিন্তু বাংলাদেশে কেন এসব আইনের সুফল মানুষ পাচ্ছেনা সেজন্য সমালোচক মহল সরকারের আইওয়াশ পদক্ষেপ, নীরব লুকোচুরির খেলা তথা রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সাথে সিন্ডিকেটের গোপন আতাঁতকেই মূল কারণ মনে করেন।
প্রসঙ্গত, সিন্ডিকেটের উন্নয়ন আর জনগণের উন্নয়ন সমান্তরালে চলে না। সিন্ডিকেট সরকারকে টেকসই করে না। সরকার যদি জনগণ বিচ্ছিন্ন হয়ে সিন্ডিকেটের প্রচ্ছন্ন পৃষ্ঠপোষকতাকারী হয়, তবে আখেরে সরকারকেই পস্তাতে হবে।
সরকারের উচিত হবে, তেল, পেঁয়াজের মতো চালের বাজারও যাতে মহাঅস্থিতিশীল না হয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কর্পোরেট কোম্পানিগুলো যারা নিজেদের পকেটভর্তির জন্য জনগণকে দুর্ভোগে ফেলছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অসৎ মজুদদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। চাল সিন্ডিকেট রুখতে চাল আমদানি না করে প্রতি মৌসুমে রেকর্ড উৎপাদন হওয়া চাল যাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ করা যায় এ বিষয়ে মনিটরিং সেল গঠন করা। টিসিবিকে শক্তিশালী করা। বাজার ব্যবস্থাপনাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের সহযোগীতার অভাব সমালোচনার ঝড় তুলছে প্রবল বৃষ্টি, খড়া, ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিদের পুনর্বাসনে সত্ত্বর মনোযোগী হউন
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির প্রচারণা দেশের উন্নয়নের চিত্র নয়। বর্তমানে আয়বৈষম্য স্বাধীনতার চেতনার মূলে কুঠারাঘাত।
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নিত্য নৈমত্তিক সড়ক দুর্ঘটনা রাষ্ট্রের জন্য নাগরিক হত্যার অপরাধ ইসলামী অনুভূতির উজ্জীবনই সরকারকে হত্যার দায় থেকে রক্ষা করতে পারে
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শিশু কিশোরদের মাঝে ডায়াবেটিসের প্রকোপ ভয়াবহ এবং মারাত্মক ঝুকিপূর্ণভাবে বাড়ছে শিশু-কিশোরদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ও প্রতিরোধে জরুরীভাবে নজর দেয়া উচিত ইনশাআল্লাহ
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)