দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের মধ্যে গগন বিদারী হাহাকার
৬০ দিনে ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম; বরাবরের মত এবারের পবিত্র রমাদ্বান শরীফও সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা যেন শুধুই হম্বিতম্বি আর নিষ্ফলেই পর্যবসিত না হয়
, ২২ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২৯ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সম্পাদকীয়
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বমূল্য নতুন কোনো খবর নয়। বরং বছরজুড়েই নিত্যপন্যের ঊর্ধ্বমূল্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয় না। বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে পণ্যের মূল্য।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ২০২২ এর জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের মানুষের আয়-ব্যয় নিয়ে জরিপ করেছে। এতে তাদের খাদ্যপণ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবা বাবদ খরচের তথ্য উঠে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে চাল ও আটার দাম কমেছে। তবে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বাবদ খরচ বেড়েছে। ফলে সামগ্রিকভাবে জীবনযাপনের খরচ বেড়ে গেছে।
তবে এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপদে আছে দেশের অর্ধেকের (৫৩ শতাংশ) বেশি মানুষ। খাবারের দাম বাড়ায় তারা তাদের জীবনযাত্রার অন্যান্য খরচ কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
জরিপে দেখা গেছে, একজন মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নূন্যতম যতটা খাবার দরকার, তার দাম এক বছরে ১২ শতাংশ বেড়েছে। আর ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে, অর্থাৎ এক মাসে বেড়েছে ৪ শতাংশ।
বেঁচে থাকার জন্য নূন্যতম খাবার কেনা বাবদ মাসে মাথাপিছু খরচ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৩৯ টাকা, যা উপার্জন করা সাধারণের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই ২২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
খরচের পাল্লা দিন দিন ভারী হওয়ার কারণে মানুষ প্রথম দিকে সঞ্চিত আমানত ভেঙেছে। পরে ধারদেনা করেছে। শেষমেশ বাধ্য হয়ে খাবার উপকরণ কেনা কমাতে বাধ্য হচ্ছে। একই সঙ্গে কমাতে হচ্ছে বাসাভাড়া, ভ্রমণ, শিক্ষাসহ অন্যান্য খাতের খরচ।
খাবারের পাশাপাশি অত্যাবশ্যকীয় সেবার দাম বেড়েছে লাগামহীন। এর মধ্যে বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। গ্যাসের দামও দফায় দফায় বাড়ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অন্য সব পণ্য ও সেবার দামও বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গণপরিবহনের ভাড়া প্রায় শতভাগ। এসব মিলে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে লাগামহীন।
‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষের মধ্যে চাপা হাহাকার বিরাজ করছে। দেশের মানুষের আয় বাড়েনি কিন্তু ব্যয় বেড়েছে অনেক। তাই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। অর্থের অভাবে সাধারণ মানুষ বাজার করতে পারছে না, শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না।
‘এমনকি অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না এবং ওষুধ কিনতে পারছে না সাধারণ মানুষ। এমন বাস্তবতায় রমজান আমাদের সামনে।
বিশ্বের মুসলমানদের ন্যায় বাংলাদেশের মুসলমানগণও পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ভাব-গাম্ভীর্য ও পবিত্রতা রক্ষায় দুনিয়াবী সকল কাজ থেকে ফারেগ হয়ে একাগ্রচিত্তে দীর্ঘ একমাস সিয়াম পালনসহ নানা ইবাদত বন্দেগীতে আতœনিয়োগ করে থাকেন।
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্টগুলোতে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার মাহাত্ম ও পবিত্রতা রক্ষায় এ সময়ে খাদ্যদ্রব্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম নাগালে থাকলেও বাংলাদেশের চিত্র পুরোই উল্টো। প্রতিবছর পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনাকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণীর অসাধু, মুনাফালোভী বিক্রেতা নিত্যপ্রয়োজনীয় ও পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার চাহিদা উপোযোগী পণ্য যেমন আটা, ময়দা, পেয়াজ, রসুন, চাল, তেল, চিনি, বেসন, খেজুর, ছোলা, মুড়ি ইত্যাদিতে আকাশচুম্বী দাম হাঁকায়। বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি যেন কমে না কিছুতেই। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার আগ মুহূর্তেই নিত্যপণ্যে ঊর্ধ্বগতির হিড়িক লেগে যায়। রোযার কয়েকমাস আগ থেকেই নিরবে, নিভৃতে নয় বরং সরবে বাড়তে থাকে এসব দ্রব্যের মূল্য। অসাধু, মুনাফাখোরী ও সিন্ডিকেটধারীরা এ সময় নিরীহ ভোক্তাদের পকেট থেকে অতিরিক্ত মূল্য হাতিয়ে নেয়। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনাকে সামনে রেখে সিন্ডিকেট আরো সক্রিয় হয়।
আসন্ন পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার তিন মাস আগ থেকেই শুরু হয়েছে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারসাজি। আর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাত তো অনেক পুরনো। বাজারের এমন অস্বাভাবিকতার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা দায়ী। বাজারে তদারকির যেমন অভাব রয়েছে, তেমনি অভাব রয়েছে সরকারের হস্তক্ষেপেরও। টিসিবির ওপেন মার্কেট সেলসহ (ওএমএস) কিছু উদ্যোগ থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় সেগুলো একেবারেই নগণ্য।
সরকার এবার রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে না বলে আশ্বাস দিলেও ইতোমধ্যে চাল, চিনি, ব্রয়লার মুরগী ও ডিমসহ বেশকিছু পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার পুরোপুরি আমদানি নির্ভর। তাই যে কোনো পণ্যের দামের ক্ষেত্রে রপ্তানিকারক দেশের পরিস্থিতির পাশাপাশি বুকিং রেটের ওপর ভরসা করতে হয় এ দেশের ভোক্তাদের। বাংলাদেশের বাজারে মূলত ভারত-মিয়ানমার ও চীন থেকে পেঁয়াজ-আদা-রসুন, এবং ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে ভোজ্য তেল ও চিনি আমদানি করা হয়। এই সবকটি পণ্যের দামই এখন বাড়তি। পেঁয়াজের দাম গত দুই সপ্তাহে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বাজারে কোনো পূর্বাভাস না দিয়ে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। অথচ এ বছর পেঁয়াজ উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে, আগের বছরের চেয়ে উৎপাদন বেড়েছে সাড়ে ছয় লাখ টন। বন্ধ নেই আমদানিও। তারপরও এভাবে দাম বাড়ার কারণ কী?
একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ করার দায়িত্ব সরকারের। মজুত, সিন্ডিকেট বা কোনো অনৈতিক উপায়ে কেউ যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন সংশোধন করে এসবের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের দাবিকে প্রাধান্য না দিয়ে সরকারকে সর্বোচ্চ যৌক্তিক অবস্থান নিতে হবে। দাম বাড়ানোর কারণগুলো যথাযথভাবে ভোক্তাদের অবহিত করতে হবে। আমাদের দেশে বাজারব্যবস্থার সর্বত্রই একধরণের সিন্ডিকেটের প্রভাব লক্ষ্যণীয়। এ সিন্ডিকেট চক্র কিছুদিন পর পর হুট করেই বাজারব্যবস্থা অস্থিতিশীল করে তোলে। এসব সিন্ডিকেট চক্রের লাগাম টেনে ধরতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)