দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ।
সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
, ২৪ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২২ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সম্পাদকীয়
বর্তমানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২.৫৪ শতাংশ। বিশ্ববাজারে কমছে পণ্যের দাম, কমে আসছে মূল্যস্ফীতিও। কিন্তু বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখনও লক্ষ্য অর্জন থেকে অনেক দূরে। ঠিক কী কারণে দেশে মূল্যস্ফীতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না এবং কবে মূল্যস্ফীতির হার সহনশীল অবস্থায় নামিয়ে আনা যাবে, এটিই এখন সবার প্রশ্ন।
বাজারে মূল মূল্যস্ফীতির চেয়েও বেশি ভোগাচ্ছে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি। বিশেষ করে নিম্ন, নিম্নমধ্যম এবং মধ্যম আয়ের মানুষের ভোগান্তির মূল কারণ বাজারে বিরাজমান অস্থিরতা। ক্রেতারা বলছেন, হাজার টাকার নোট নিয়ে বাজারে গেলেও ফিরে আসতে হয় অর্ধেক বাজার করে। দুই বছর আগে এক হাজার টাকায় যা কেনা যেত এখন তার অর্ধেক পণ্য কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
যেখানে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনও ৯ শতাংশের ওপরে, একবার বাড়ে পেঁয়াজের দাম, আরেকবার কাঁচা মরিচের, কখনোবা ডিম কিংবা মুরগির গোশত, আবার কখনও কেজিতে মাছের দাম বাড়ে ৫০০ টাকা পর্যন্ত; সেখানে কী করলে বাজার স্বাভাবিক হবে এমন জবাবে অভিজ্ঞমহল বলেন, মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে হলে শুরুতেই বুঝতে হবে উৎপাদন ও বিপণনের মধ্যে পার্থক্য কতখানি। এই পার্থক্য কমিয়ে আনতে পারলে মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব।
ক্রমবর্ধমান এ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না মানুষের আয়ের সক্ষমতা। ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়ছে। বিবিএসের হিসাবে, একটি পরিবারে মোট খরচের ৪৮ শতাংশে খরচ হয় খাবার কিনতে। ফলে দ্রুত পরিবর্তনশীল বাজার দামের সঙ্গে অভিযোজন করতে হিমশিম খাচ্ছেন আমজনতা।
স্বল্প মজুরিকে গিলে ফেলছে বর্ধমান মূল্যস্ফীতি। দেশের বাজার ব্যবস্থা খুব পরিচিত একটি প্রপঞ্চের নাম হলো দামের অনমনীয়তা অর্থাৎ কোনো কিছুর দাম একবার বেড়ে গেলে তা আর সহজে কমে না। আমাদের মতো দেশে দাম কমা অসম্ভব হয়ে পড়ে অনেক ক্ষেত্রে। এমন পরিস্থিতি সাধারণ আয়ের মানুষের জন্য সত্যি অসহনীয়।
দেশের বাজারে বৃহৎ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সব ধরনের পণ্য আমদানির জন্য গুটি কয়েক বাজারের প্রতি অতি-নির্ভরশীলতা ভয়াবহতার কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
দেশে খাদ্যশস্য আমদানিতে প্রধানতম উৎস ভারত। বাংলাদেশে আমদানিকৃত চালের ৭৩ শতাংশ আসে ভারত থেকে।
অর্থচিন্তাবিদের মতে, খাদ্যশস্য আমদানিতে একক বাজারে ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা বাংলাদেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশীয় বাজারে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির বড় একটি কারণ চাহিদা ও জোগানের সঠিক তথ্যের স্বল্পতা। বাজারে অতিরিক্ত চাহিদা ও জোগান স্বল্পতা উভয়ে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে সঠিক তথ্য বাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়ে ওঠে। কিন্তু অপ্রিয় সত্য এটায়, আমাদের কাছে দেশীয় বাজার ব্যবস্থার চাহিদা ও যোগানের সঠিক পরিসংখ্যান স্বল্পতা খুবই তীব্র। ফলে বাজারে বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে জোগানের সংযোগ সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ প্রহণ সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে আমদানি নির্ভরতা বাড়ার পরেও ডলার সংকটে পণ্য আমদানি কমেছে গত অর্থবছর। তাতে স্বাভাবিকভাবে যতটুকু সংকট তৈরি হয়েছে, এর চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে পণ্য মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা। আমদানি কমার সংকটকে কাজে লাগিয়ে অনৈতিকভাবে পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রবণতা রয়েছে ব্যবসায়ীদের। এছাড়া আছে সিন্ডিকেটের প্রভাব।
পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে ন্যায়সঙ্গত মূল্যে কোনো পণ্যই আর পাওয়া যায় না। প্রতিটি পণ্যেই যেন অধিক মূল্যের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। সরকারের ভুল অর্থনৈতিক নীতি ও পরিকল্পনা সংকটকে আরও প্রকট করছে।
বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা মূল্যস্ফীতিকে আরও প্রকট করে তুলছে। কয়েক দিন পর পর কিছু নিত্যপণ্যের দাম অনেকটা বিনা কারণে হঠাৎ আকাশচুম্বী হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এ সুযোগে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী জনগণের কাছ থেকে অতি উচ্চমূল্য নিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছে। নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হলে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। অবৈধভাবে দ্রব্য পাচার রোধ ও মজুতদারি রোধ করতে পারলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে না। বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর সমাজব্যবস্থায় কৃষির উৎপাদন বাড়াতে এবং উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে কৃষি জমি থেকে সর্বোত্তম ফসল লাভের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নত বীজ, প্রচুর সার ও সেচ ব্যবস্থার সমন্বয় করতে হবে। কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়লে দাম এমনিতেই স্থিতিশীল থাকবে। বাজারের ওপর সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে লাগামহীন দুর্নীতির অবসান ঘটাতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, দেশের সব মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ স্বার্থ ত্যাগ করে দেশের কল্যাণে আত্মনিয়াগে করতে হবে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ও কষ্টের সম্মুখীন হয় স্বল্প আয়ের মানুষ। সুতরাং এদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নিত্যপ্রয়াজেনীয় দ্রব্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বাজারের ওপর সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ী যাতে তার ইচ্ছামতো দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সে জন্য দেশের জনগণকেও সচেষ্ট থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, মুনাফাখোর সমাজের উন্নয়নের পথে প্রধান অন্তরায়। তাই অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান সব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে সাধারণ ও নিম্নআয়ের মানুষের ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার ও নিরাপত্তা। মূল্যস্ফীতির পিষ্ট থেকে ভোক্তাদের রক্ষা করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)