দেনমোহর নিয়ে কিছু কথা.... (২)
, ০৬ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১২ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ৪ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا
অর্থ: আর তোমরা নারীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও স্বেচ্ছায়। তবে তারা যদি তা থেকে কোনো অংশ মাফ করে দেয়, তখন তা তোমরা গ্রহণ করতে পারো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি একই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন সূরা মুমতাহিনার ১০ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে এবং আরও কয়েক জায়গায়। বারবার তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন নারীর অধিকার ও সম্মান যেন আদায় করা হয়। বিবাহের সঙ্গে সঙ্গে মোহর আদায় করা উচিত। তবে কারণবশত তখন অপারগ হলে কবে আদায় করবে- তা নির্ধারণ করতে হবে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বশ্রেষ্ঠ যুগে এবং ছাহাবীগণ উনাদের সময়েও কেউ নারীর মোহরানা বাকি রেখে বিবাহ করতেন না। সুবহানাল্লাহ!
আবারো বলছি, এ মোহর মূলত একটি সম্মানী, যা স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে দেয়া হয়। এর উদ্দেশ্য কেবল স্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন। এটি স্ত্রীর মূল্য নয় যে, এর কারণে স্ত্রী স্বামীর হাতে বিক্রি হয়ে যাবে। তার দাসীতে পরিণত হবে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এমন ধারণা পোষণের মোটেও সুযোগ নেই।
এদিকে শরীয়তের আদেশ হলো, মোহরের পরিমাণ এত অল্পও নির্ধারণ না করা যে, তাতে সম্মানের বিষয়টি একেবারেই প্রকাশ পাবে না। তেমনি এত অধিক পরিমাণও নির্ধারণ না করা যে, আহাল বা স্বামী তা আদায়ের সামর্থ্য রাখে না। ফলে মোহর আদায় না করেই সে ইন্তেকাল করে কিংবা পরিশেষে স্ত্রীর নিকট মাফ চেয়ে নিতে বাধ্য হয়।
শরীয়ত মোহরের সর্বোচ্চ কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করেনি। তবে স্বামী যে পরিমাণ নির্ধারণ করে আদায় করতে সমর্থ হন, এ ব্যাপারে শরীয়তে কোনো বাধা নেই। তবে এ ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে, ‘মোহরে যাহরায়ী শরীফ’ অর্থাৎ মোহরে আহলু বাইত শরীফ নির্ধারণ করা। এতে সুন্নত উনার আমল করা হয় এবং নাযাতের কারণও হয়। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং, যুক্তি বা তর্ক-বিতর্ক দিয়ে দ্বীন ইসলাম মানা যাবে না। বিনা চু-চেরায় মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম-আহকামকে বিশ্বাস করতে হবে, সাথে সাথে মানতে হবে। এরই নাম ঈমান।
এখন যে ঈমানদার হবে; সে নারীবাদীত্বের এই কুফরীমূলক কথা বার্তা থেকে সরে আসবে। আর যে ফিরবে না বা তওবা করবে না, তার কথাতো ভিন্ন। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি চান যেন বান্দারা ফিরে আসে। তিনি আশা দিয়েছেন বার বার। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَّا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَلَا الْمُشْرِكِينَ أَن يُنَزَّلَ عَلَيْكُم مِّنْ خَيْرٍ مِّن رَّبِّكُمْ ۗ وَاللَّـهُ يَخْتَصُّ بِرَحْمَتِهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّـهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
অর্থ: আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কাফির তারা এবং মুশরিকরা চায় না তোমাদের উপর তোমাদের রব উনার পক্ষ থেকে খায়ের-বরকত নাযিল হোক। মহান আল্লাহ পাক যাঁকে ইচ্ছা উনাকে রহমত দিয়ে খাছ করেন। মহান আল্লাহ পাক মহান অনুগ্রহশীল। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১০৫)
এখন আপনাদের শুধু ফেরার পালা। মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে হিদায়েত দান করুন। আমীন!
-আহমদ আযীমা ফারহা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নারীবাদী বলে কথা........
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)