দুই দশকেও পূরণ হয়নি নৌ-নিরাপত্তা সংক্রান্ত দাবি
নৌপথে প্রাণহানি ২০ হাজারেরও বেশি, অবহেলিত নিরাপত্তা
, ১৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১০ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) দেশের খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন (১১ এপ্রিল) বাড়ি ফেরার পথে লঞ্চের রশির আঘাতে পাঁচ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয় রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। সেখানে একই পরিবারের তিন জন মারা যান। লঞ্চ শ্রমিকদের গাফিলতিতে ঈদের আনন্দ একমুহূর্তে বিলীন হয়ে যায় এসব পরিবারে।
দেশে নৌ-দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের মতো এমন আরও কত হাজার পরিবার যে ধ্বংস হয়েছে, কত মানুষ যে প্রাণ হারিয়েছে, তার হিসাব করা কঠিন।
প্রায় দুই দশক আগে ২০০৪ সালে একই দিনে তিনটি নৌ-দুর্ঘটনায় কয়েক শত মানুষের প্রাণ যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে নৌ-দুর্ঘটনার সবচেয়ে শোকাবহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় দিনটিকে। সেদিনের ঘটনার সাক্ষী সুমন শামস। ২০০৪ সালের ২৩ মে মেঘনা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় মাকে হারানোর পর থেকে নৌ-নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি জানিয়ে একাই লড়াই করছেন তিনি।
সুমন বলেন, স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নৌপথে নানান ধরনের দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছে। এখন নৌপথে ডুবে মরার চিত্র দেখা না গেলেও নৌ-নিরাপত্তায় ঘাটতির কারণে দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। লঞ্চ শ্রমিক ও মালিকদের গাফিলতির ফল ভুগতে হয় অসংখ্য নিরীহ মানুষকে। বারবার বলার পরও নৌ-নিরাপত্তার বিষয় আমলে নেওয়া হয় না।
সুমন বলেন, লঞ্চে মাঝনদীতে যাত্রী ওঠানো-নামানোর চিত্র নতুন নয়। ফলে দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এসব অন্যায় বন্ধ করতে হবে। কোনও লঞ্চেই পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম নেই। যাত্রীদের জীবন রক্ষার স্বার্থে সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা দরকার। এ নিয়ে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা বারবার বলার পরও লঞ্চের মালিকরা তোয়াক্কা করছেন না, প্রশাসনও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
লঞ্চে ত্রুটির বিষয়ে জানতে সরেজমিন দেখা যায়, অধিকাংশ লঞ্চেই নেই পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম। সদরঘাটে নোঙর করা অন্তত ২০টি লঞ্চের কোনোটিতে তা দেখা যায়নি। এ ছাড়া দুই-তিনটি লঞ্চ ছাড়া আর কোনোটিতে ছিল না প্রাথমিক চিকিৎসাব্যবস্থা। প্রতিটি লঞ্চের কোনও না কোনও অংশে জোড়াতালি দেওয়া। এ ছাড়া লঞ্চে দেওয়া চার্ট অনুযায়ী কোনও সরঞ্জাম পরিপূর্ণ নেই। এমনকি স্টাফের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নেই। লঞ্চের মাস্টারের অদক্ষতার প্রমাণও পাওয়া যায় বেশ কিছু কর্মকা-ে।
কিছু লঞ্চের বর্তমান বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছর। বেশির ভাগ লঞ্চের ওপর চকচকে বাহারি রঙের প্রলেপ থাকলেও ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিনসহ অনেক অংশে জোড়াতালি দেওয়া। যাত্রী নিরাপত্তায় প্রতিটি লঞ্চে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, বালুভরা বাক্স, ফায়ার বাকেট, পাম্প মেশিন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইফ জ্যাকেট, লাইফ বয়া, ফার্স্ট অ্যাইডসহ জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকার কথা থাকলেও বেশির ভাগ লঞ্চে তা নেই।
নৌযানের ওপর গবেষণা করা বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, কারিগরি ও অবকাঠামোগত ত্রুটি, কার্যকর তদারকি না থাকা, চালকের অদক্ষতা ও অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে দেশে নৌ-দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া যেসব লঞ্চ পুরনো নকশায় নির্মিত, সেগুলোই এখন বেশি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে।
নৌপথে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে ডুবোচরকে দায়ী করছেন লঞ্চ মাস্টার তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডুবোচরের কারণে নৌযান চালাতে সমস্যা হয়। রাতে মালবাহী কার্গো চলাচলে নৌযান দুর্ঘটনার শিকার হয়। এগুলোর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালানো দরকার। মাঝেমধ্যে কোস্টগার্ডকে অভিযান চালাতে দেখলেও এর সংখ্যা কমেনি। কেন এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, তা বোধগম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, রাতে মালবাহী বাল্কহেড, কার্গো চলাচলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব নৌযানের রাতে চলাচল বন্ধের দাবি জানালেও এর কোনও সুরাহা হয়নি। রাতে মালবাহী বাল্কহেড, কার্গো চললে যেন অন্তত বয়া-বাতি নিশ্চিত করে, কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান এই লঞ্চ মাস্টার।
নৌ-নিরাপত্তার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র সদরঘাট দফতরের পরিবহন পরিদর্শক এ বি এম মাহমুদ বলেন, সব শর্ত মানা হলে বিআইডব্লিউটিএ থেকে লঞ্চ নদীতে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনুমতি নেওয়ার পর ধীরে ধীরে বেশ কিছু ঘাটতি দেখা দেয়। এ জন্য অবশ্য অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নৌ-নিরাপত্তার সার্বিক বিষয় নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মুহম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, নৌপথে দুর্ঘটনা অনেক কমেছে। মাঝেমধ্যে চালক বা নৌশ্রমিকদের কারণে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া নৌপথে এখন তেমন কোনও দুর্ঘটনা নেই।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৯ দিনেও মুক্তি মেলেনি অপহৃত ৪ জেলের
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অফিস করেন না ৮১ মাস, নিচ্ছেন নিয়মিত বেতন ভাতা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
১৬ হাজার টাকার জন্য খুন হলেন মুদি দোকানি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কুকুরের কামড়ে আহত শিশুসহ ৩২ জন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ডেইলি স্টারের সামনে কর্মসূচি, বিপুল পুলিশ মোতায়েন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা বাদী গ্রেফতার
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পাসপোর্ট কর্মকর্তার ‘বহুরূপী’ পাসপোর্ট
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, প্রতিহত করতে হবে -উপদেষ্টা আদিলুর
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, প্রতিহত করতে হবে -উপদেষ্টা আদিলুর
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ চায় না জাতীয় পার্টি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)