ফতওয়া
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৭)
, ০১ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৯ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) ফতওয়া বিভাগ
দাড়ির শরয়ী তা’রীফ বা পরিচয়:
পূর্বে উল্লেখিত বর্ণনার সার সংক্ষেপ হলো- যাক্বান, ইযার ও আরেজে যে লোমসমূহ উঠে উহাকে দাড়ি বলে। নিম্নে যাক্বান, ইযার ও আরেজ -এর লোগাতী বা আভিধানিক অর্থ তুলে ধরা হলো। যার কারণে বিষয়টি আরো সুস্পষ্টভাবে বুঝে আসবে যে, কোন স্থানসমূহের লোমসমূহ দাড়ির অন্তর্ভুক্ত।
اَلْعَارِضُ- صَفْحَةُ الْخَدَّيْنِ
অর্থ : আরেজ” অর্থ : গালের পার্শ্বদেশ
اَلْعِذَارُ= جَانِبُ اللِّحْيَةِ الشّعْرُ الَّذِي يُحَاذِي الْأذُنِ مَانَبَتَ عَلَيْهِ ذَالِكَ الشَّعْرُ
ইযার অর্থ : দাড়ির প্রান্ত কানের নিকটবর্তী স্থানের পশম, অর্থাৎ যে হাড়ের উপর উক্ত পশম উঠে।
اَلذَّقَنُ- بَمَعْنَى- تَهَوُّرَي
যাক্বান অর্থ থুৎনী। যাকে “লাহইয়ান” বলা হয় অর্থাৎ দুই চোয়ালের সংযোগস্থল।
উপরোক্ত শব্দত্রয়ের লোগাতী বা আাভিধানিক বর্ণনা দ্বারা বুঝা যায় যে, থুৎনী হতে শুরু করে দুই পার্শ্বে কানের নিকটবর্তী হাড় পর্যন্ত এবং গালের প্রান্তদেশে যে পশম বা লোম উঠে, তাকেই দাড়ি বলে।
এখন প্রশ্ন হলো, তবে কি গালের সমুদয় লোমকে দাড়ি বলে? অবশ্য উল্লিখিত বর্ণনা দ্বারা বুঝা যায় যে, গালের কোন অংশের লোমই দাড়ির বর্হিভূত নয়। তবে আরেজ শব্দের অন্য একটি অর্থ লোগাতে এই আছে যে-
اَلْعَارِضُ- (مُؤَنَّثُ الْعَارِضَةُ)- اَلسِّنُّ الَّتِى فِى عَرْضِ الْفَمِ
অর্থাৎ আরেজাহ হলো আরেজ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ, যার অর্থ মুখের উপরের মাড়ীর দাঁত।
সুতরাং, মুখের উপরের পাটির দাঁতের গোড়া বা মাড়ী আরেজের মধ্যে গণ্য। অতএব, আরেজের মধ্যস্থিত লোমসমূহ দাড়ির অর্ন্তভুক্ত। আর আরেজ বর্হিভুত লোমসমূহ দাড়ি নয়। তবে বুখারী শরীফের শরাহ ফায়জুল বারীতে উল্লেখ আছে যে, “চেহারার উপরের অংশের (অর্থাৎ আরেজের বহির্ভূত লোম বা কেশ, যা দাড়ি নয়) কাটা জায়েয হলেও না কাটাই আফজল ও উত্তম।
আর ফতওয়ায়ে আলমগীরীতে উল্লেখ আছে যে, “গলার নীচের কেশ না কাটাই উচিত। হযরত ইমাম আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ মতেরই অনুসারী। তবে ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে কাটতে অসুবিধা নেই। সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, দাড়ি বহির্ভূত কেশ বা লোমসমূহ কাটা জায়িয থাকলেও না কাটাই আফযল ও উত্তম। তাছাড়া এমন কোন বর্ণনা কেউ পেশ করতে পারবে না যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কেউ উক্ত কেশ কাটতেন। অতএব, এদিক দিয়ে উহা না কাটাই সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুন্নতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯)
২৬ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৮)
১৫ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪)
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় (১০)
৩১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় (৯)
২৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৭)
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫)
২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪)
০২ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া জায়িয নয়-১
২৪ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩)
১৬ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২)
১০ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১)
০১ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)