ফতওয়া
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় (১০)
, ২২ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০১ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) ফতওয়া বিভাগ
দাড়ি রাখার ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্দেশ:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ أَمَرَ بِإِحْفَاءِ الشَّوَارِبِ وَإِعْفَاءِ اللِّحْيَةِ
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করে বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন গোঁফ ছোট করার ও দাড়ি লম্বা করার জন্য। (দারহী কী শরয়ী হাইছিয়ত)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা স্পষ্টই প্রমাণিত হলো যে, স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুরুষের দাড়ি লম্বা করার ও গোঁফ ছোট করার নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো- দাড়ি কতটুকু লম্বা করতে হবে এবং গোঁফ কতটুকু ছোট করতে হবে? আর সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে এর কোন সীমারেখা বা পরিমাণ রয়েছে কি না? তাছাড়া নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ও হযরত ইমাম মুজতাহিদ আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা দাড়ি কতটুকু পরিমাণ লম্বা করতেন?
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দাড়ি মুবারকের বর্ণনা:
পূর্ববর্তী আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, পুরুষের জন্যে দাড়ি কাটা হারাম আর দাড়ি রাখা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। এখন জানার বিষয় হচ্ছে- দাড়ি কি পরিমাণ লম্বা রাখতে হবে, আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের দাড়ি মুবারক কতটুকু লম্বা ছিল।
মূলত: কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। আর তাই দেখা যায়, সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের দাড়ি মুবারক একমুষ্ঠি পরিমাণ লম্বা রাখতেন। যার প্রমাণ পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা পূর্ববর্তী সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের দাড়ি মুবারক কমপক্ষে একমুষ্ঠি হওয়া প্রমাণিত হয়। যেমন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে এভাবে বর্ণিত হয়েছে-
يَبْنَؤُمَّ لَا تَأْخُذْ بِلِحْيَتِي وَلَا بِرَأْسِي
অর্থ: (হযরত হারূন আলাইহিস সালাম বলেন) হে আমার মায়ের পেটের ভাই হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আপনি আমার দাড়ি ও চুল পাকড়াও (মুষ্টিবদ্ধ) করবেন না।
অতএব প্রমাণিত হলো যে, হযরত হারূন আলাইহিস সালাম উনার দাড়ি মুবারক ছিল কমপক্ষে একমুষ্ঠি।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা একজন নবী আলাইহিস সালাম উনার দাড়ি মুবারক কমপক্ষে একমুষ্ঠি তথা লম্বা রাখার প্রমাণ পাওয়া গেলো। আর পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অসংখ্য পবিত্র আয়াত শরীফ বিশেষভাবে এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাঝে বলা হয়েছে-
فَبِهُدَاهُمُ اقْتَدِهْ
অর্থ: আয় মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (আপনি বলে দিন) পূর্ববর্তী হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিষয়গুলিও অনুসরণীয়।
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার সাধারণ মূলনীতি দ্বারা প্রমাণিত যে, সকল হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা স্বভাবজাত নিয়ম-নীতিসমূহের ক্ষেত্রে একে অন্যের অনুসরণ করেন বিধায় ক্বিয়াস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কোন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের দাড়ি মুবারক একমুষ্ঠির কম ছিলো না বরং উনাদের দাড়ি মুবারক ছিল কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ লম্বা। যার প্রমাণ ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যেও রয়েছে। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرْتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشْرٌ مِّنَ الْفِطْرَةِ قَصُّ الشَّارِبِ وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ
অর্থ: হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “দশটি জিনিস ফিতরাতের (স্বভাবজাত বিষয়ের) অন্তর্ভুক্ত। তন্মধ্যে দু’টি হচ্ছে গোঁফ কাটা ও দাড়ি লম্বা করা। (আবূ দাউদ শরীফ) (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৩)
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৯)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৮)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫)
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৪)
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২)
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১)
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯)
২৬ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৮)
১৫ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)