ফতওয়া
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৭)
, ২৫ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৫, মে, ২০২৪ খ্রি:, ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ফতওয়া বিভাগ
দাড়ি রাখা সুন্নত না ফরয?
দাড়ি লম্বা করা ইসলামী শেয়ার বা ফিতরাতের অন্তর্ভুক্ত এবং সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুন্নত মুবারক। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে- তবে কি দাড়ি রাখা উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা মুসলমানদের জন্যে সুন্নত? এর জবাব হলো- হ্যাঁ, দাড়ি রাখা সাধারণভাবে সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত এ অর্থে, যেহেতু সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা দাড়ি রেখেছেন। মূলতঃ এদিক থেকে শরীয়ত উনার সকল আমল যেমন নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদিও সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আহকামের দিক থেকে সেগুলো ফরয। অনুরূপ দাড়ি রাখা যদিও সাধারণভাবে সুন্নত মনে করা হয়, কিন্তু আহকামের দিক থেকে দাড়ি রাখা ফরয। কেউ কেউ ওয়াজিবও বলেছেন। তবে যারা ওয়াজিব বলেছেন, উনারা ফরয অর্থেই ওয়াজিব বলেছেন। কেননা ওয়াজিব কোন কোন সময় ফরয অর্থেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যার প্রমাণ হাদীছ শরীফে রয়েছে। যেমন হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে যে-
عَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللهَ كَتَبَ عَلَيْكُمُ الْحَجَّ فَقَامَ الأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ فَقَالَ أَفِى كُلِّ عَامٍ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ لَوْ قُلْتُهَا لَوَجَبَتْ
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মানুষেরা! (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের উপর হজ্জকে ফরয করেছেন। তখন হযরত আকরা’ ইবনুল হাবিস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! প্রত্যেক বৎসরই কি হজ্জ করা ফরয? (জবাবে) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “আমি যদি বলি হ্যাঁ, তবে প্রত্যেক বৎসরই হজ্জ করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। ........ (মিশকাত শরীফ-২২১)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হজ্জকে ওয়াজিব হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, অথচ হজ্জ করা ফরয। মূলতঃ এখানে ওয়াজিবটা ফরয অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। মোটকথা হলো- দাড়ি রাখা মূলত ফরয/ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا
অর্থ: তোমাদের জন্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন (আদেশ করেছেন), তা আঁকড়িয়ে ধরো, আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, তার থেকে বিরত থাকো। (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ, ০৭)
মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক তিনি উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নিষেধ মুবারককে মান্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নিষেধ মুবারক পালন করা ফরয/ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, পুরুষের জন্য দাড়ি রাখা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। কারণ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দাড়ি রাখার জন্য আদেশ দিয়েছেন এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অসংখ্য স্থানে দাড়ি রাখার ব্যাপারে আদেশসূচক (امر) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْهَكُوا الشَّوَارِبَ وَأَعْفُوا اللِّحَى
অর্থ: হযরত নাফে রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা গোঁফ ভালরূপে কাটো ও দাড়ি লম্বা করো। (বুখারী শরীফ, ২য় খ- পৃষ্ঠা ৮৭৫) (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৯)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৮)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৭)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৬)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫)
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৩)
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৯)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৮)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫)
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৪)
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)