তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কী চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়তেই থাকবে? গ্যাসের দাম বৃদ্ধি শিল্পে হলেও ‘খাঁড়া জনগণের উপরই পড়বে’ দাম বৃদ্ধি বৈষম্য এবং কষ্ট বাড়াবে
, ১৯ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০১ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
রোযা এবং একই সাথে গ্রীষ্মকাল আসার আগেই বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে ৩৪ থেকে ৭০ পয়সা পর্যন্ত দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সচিবালয়ে এ ঘোষণা দেন।
সে জানায়, মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিদ্যুতের দামের বিষয়টি কার্যকর করা হবে। তার ভাষায়, ভর্তুকি থেকে ধীরে ধীরে বের হওয়ার জন্যই বিদ্যুতের ‘দাম সমন্বয়’ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে শুধু বিদ্যুৎ দাম, গ্যাসের দামও সমন্বয় করার কথা জানিয়েছে প্রতিমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত: বছরে বা মাসে নয়, প্রতি সপ্তায়ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পথে সরকারের সামনে কোনো বাধা নেই। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে কেউ সরকারের গদিতে টান দেবে, সেই ঝুঁকি বা শঙ্কাও নেই। আইনগতভাবে সেই ব্যবস্থা করে নিয়েছে সরকার। প্রতি মাসে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের নীতির আওতায় দুই মাসের মধ্যে তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এটার নাম দাম ‘বৃদ্ধি’ নয়, বলা হচ্ছে ‘সমন্বয়’। সমন্বয় শব্দের মারপ্যাঁচেও কি বিদ্যুতের কোনো সুখবর আছে। অথবা সমন্বয় কি এটাই শেষ। এরপর আর দাম বাড়বে না? বা আরো দুয়েকবার দাম বাড়ানোর পর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ মিলতে থাকবে? শুরু হওয়া গ্রীস্মকালেই বা পরিস্থিতি কেমন যাবে? গেলবারের মতো কোনো বিপর্যয় ঘটবে না তো? এসব প্রশ্নের পরিষ্কার জবাব নেই কারো কাছে।
বাংলাদেশে বিদ্যুতের এ অবস্থার মাঝে অনেকে পাকিস্তানের ছোঁয়া আঁচ করছে। উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে পাকিস্তানও দেশি-বিদেশি ঋণে একের পর এক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছিল এবং বাহাদুরি করেছে বিদ্যুতায়নের সক্ষমতা নিয়ে। কিছুদিনের মধ্যেই বাহাদুরির বেলুন ফুটা হয়ে যায়। উচ্চ সুদহারে নেয়া বাণিজ্যিক ঋণে নির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সাফল্য আনতে পারেনি। আবার বিদ্যুৎ খাতের জ্বালানি পরিকল্পনাও ছিল পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। সংগতিপূর্ণ সঞ্চালন ব্যবস্থা না থাকায় বিপুল সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে রেখে গুনতে হয়েছে ক্যাপাসিটি চার্জ। এতে প্রতিবার পাকিস্তানি রুপির অবমূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বেড়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। দিন দিন এ ব্যয়ের মাত্রা দেশটির ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বা বিতরণ কোম্পানিগুলোর সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে দিন দিন বড় হয়েছে। এতে যে দায় তৈরি হয়েছে, এক পর্যায়ে তা বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশটির সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ পরিমাণ ভর্তুকি দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। এর ধারাবাহিকতায় খাতটিতে সৃষ্ট ঋণের দুষ্টচক্রের ভার এখন পাকিস্তানের সরকার তথা তাদের গোটা অর্থনীতিকেই এখন বহন করতে হচ্ছে। ফলে, পরিস্থিতি সঙ্গিন হয়ে পড়ায় পাকিস্তানে এখন বিদ্যমান বিদ্যুৎ নীতি পর্যালোচনার দাবি উঠেছে। আর ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পতিত হয়েছে ঋণের বোঝায় জর্জরিত পাকিস্তান। আপাতত সংকট মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের ঋণের অর্থছাড়ের অপেক্ষায় আছে দেশটি।
বাংলাদেশেও বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি উৎপাদন কেন্দ্রের আধিপত্য তুঙ্গে। বিদ্যুতের ট্যারিফ নির্ধারণের ক্ষেত্রে শর্ত ও কাঠামোও দু’দেশে বেশ মিল। ক্যাপাসিটি চার্জ, জ্বালানি ক্রয় ও মূল্য পরিশোধের শর্ত, ডলার ইনডেক্সেশন, কর সুবিধার নীতিগুলোও প্রায় এক। দুই দেশেই বছরের পর বছর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো লাভজনকভাবে ব্যবসা করলেও দায় ও আর্থিক চাপে পড়েছে রাষ্ট্র ও জনসাধারণ। পাকিস্তানে পরিস্থিতি এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বাংলাদেশে সামষ্টিকভাবে এখনো তা হয়নি। তবে অন্তত বিদ্যুৎ বিভাগে তা হতে তেমন বাকিও নেই।
অভিজ্ঞমহল বলেন, ‘উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে এর দায় সাধারণ জনগণ নেবে না।’ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছিলাম যে, সরকারের ভুলনীতির কারণেই বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। সরকার এ কথায় কর্ণপাত করেনি, বরং খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আর এখন আইএমএফ-এর শর্তপূরণ করতে ভর্তুকি প্রত্যাহারের নামে জনগণের কাঁধে এই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপানো হচ্ছে।’ বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলেছে দাম না বাড়িয়ে, বরং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। সরকার সেদিকে এগোচ্ছে না। রেন্টাল, কুইক রেন্টাল এখনো বন্ধ করা হয়নি। বিদ্যুৎ খাতের দায়মুক্তি আইন বাতিল করা হয়নি। অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার বোঝা জনগণের কাঁধেই চাপানো হচ্ছে।’ বিবৃতিতে নেতারা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের নামে নিয়মিত বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকেও সরে আসার আহ্বান জানায় তারা। নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি অথচ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কষাঘাতে জনজীবন অতিষ্ঠ। এরপর বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হলে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। তারাও দাম বাড়িয়ে জনগণের কাঁধে ওই উৎপাদিত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপাবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে আবশ্যিকভাবেই একটা সামাজিক প্রভাব পড়বে। যেটা তেল বা গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সময়েও হয়েছিল। মূল্যস্ফীতি এখন ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, সবকিছুর দামও বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে এর সংশ্লিষ্ট সব কিছুর দাম আরেক দফা বেড়ে যাবে। যেটা মানুষের জীবনযাত্রার ওপর বাড়তি চাপ ফেলবে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জনজীবনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছে অনেকে। দাম অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিকমতো দেওয়া সম্ভব না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সে কারণে দাম অনুযায়ী সঠিক মানের বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানিয়েছে তারা।
আমরা মনে করি, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি এই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বেশিই পড়বে। সরকার এই খাতে প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে থাকে। সে ভর্তুকি সমন্বয় করতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। জনগণকে তখন অতিরিক্ত দাম পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু সে যদি দাম অনুযায়ী সার্ভিস না পায়, তাহলে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। সুতরাং সরকারের উচিত সঠিক মানের বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করা। সার্বিকভাবে বলা যায়, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তগুলো সঠিক এবং জনবান্ধব হবে না।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)