ঢাকা ওয়াসায় সমিতির ৩৫৫ কোটি টাকা নয়-ছয়!
-১০ বছরে গরমিল টাকার পরিমাণ হাজার কোটি
, ২৬শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ সামিন, ১৩৯০ শামসী সন, ২০ই জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) তাজা খবর
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী পিপিআই (প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট) কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা ওয়াসার বিলিং ও মিটার কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্দেশ্য ছিল, ঢাকা ওয়াসার স্বাভাবিক কর্মকা-ে সহযোগিতার পাশাপাশি সমিতি যেন স্বাবলম্বী হয়।
চুক্তি অনুযায়ী সমিতির অনুকূলে কর্মচারীরা বিলিংবাবদ ৬ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন পান। কমিশনের ওই টাকা জমা হয় সমিতির নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। অথচ সেই টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা জেলা সমবায় অফিসের নিজস্ব নিরীক্ষা (অডিট) প্রতিবেদনে দুই অর্থবছরে প্রায় ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে সমবায় অফিসের নিরীক্ষা দলের দুই বছরের হিসাব পর্যালোচনার পাশাপাশি পাওয়া অন্যান্য নথিপত্রে প্রায় ৩৫৫ কোটি টাকার অসঙ্গতির তথ্য মিলেছে।
ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রকৃত চিত্র নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বের হয়ে আসেনি। তবে, বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের আরও নমুনা পাওয়ায় বর্তমানে ১০ বছরের হিসাব পর্যালোচনায় বিভাগীয় পর্যায়ে নিরীক্ষা (অডিট) কার্যক্রম চলছে। সব হিসাব পাওয়া গেলে টাকার পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিজস্ব অনুসন্ধান এবং সমিতির সিনিয়র সদস্য ও নিরীক্ষা-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্যেও অর্থ নয়-ছয়ের তথ্য উঠে এসেছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে অন্তর্বতীকালীন পিপিআই পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান মুহম্মদ আক্তারুজ্জামান ও কো-চেয়ারম্যান মিঞা মুহম্মদ মিজানুর রহমানের যৌথ স্বাক্ষরে সমিতির/পিপিআই প্রকল্পের ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হয়েছে। ওই সময়ে ঢাকা ওয়াসা থেকে কমিশন হিসাবে পাওয়া ১৩২ কোটি চার লাখ টাকা এবং বিধিবহির্ভূত ব্যয় হিসাবে প্রায় সাড়ে ৪৪ কোটি টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি। অর্থ আত্মসাতের আরও নমুনা পাওয়ায় বর্তমানে ১০ বছরের হিসাব পর্যালোচনায় বিভাগীয় পর্যায়ে চলছে নিরীক্ষা কার্যক্রম।
এ বিষয়ে নিরীক্ষা দলের প্রধান ও ঢাকা জেলা মেট্রোপলিটন থানা সমবায় কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, অডিট প্রতিবেদনে ১৩২ কোটি চার লাখ ও ৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা আত্মসাত এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি গাড়ি ব্যবহারসহ বেশকিছু অভিযোগ আনা হয়েছে। সমবায় সমিতি আইন ৪৯ এর (১) ও (৫) ধারায় তদন্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। ওই ধারায় সাজা ও জরিমানার বিধান রয়েছে। সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত এখনও চলমান। ১০ বছরের রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে।
‘আমি মাত্র দুই বছরের অডিট করেছিলাম। ওই সময়ে আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থাপনা কমিটি দায়িত্বে ছিল। অডিট (নিরীক্ষা) চলাকালীন আমি ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে সহযোগিতা পাইনি। তদন্তের সময় আমরা হাজার কোটি টাকার একটি (পিপিআই ফান্ড) তথ্য পেয়েছি। পুরো ফান্ডের (তহবিল) কী অবস্থা, সে বিষয়ে রেকর্ডপত্র বা অস্তিত্ব খুঁজে পাইনি। এ কারণে অডিট টিম তদন্তের সুপারিশ করেছিল।’
যার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগে তির সমিতির সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও পিপিআই প্রকল্প পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘যে সময়ের কথা বলছেন, সেই সময়ে আমি দায়িত্বে ছিলাম। তবে, এর আগেও বিভিন্ন জন দায়িত্বে ছিলেন। এ বিষয়ে এখন আমার বক্তব্য দেওয়া সঠিক হবে না। অফিসিয়াল অনুমতি ছাড়া আমি কোনো বক্তব্য দিতে পারব না।’
তেজগাঁও মেট্রোপলিটন থানা সমবায় কর্মকর্তা মুহম্মদ রেজাউল বারী ও ঢাকা জেলা সমবায় কার্যালয়ের কর্মকর্তা মঞ্জুরুল কবীরের নেতৃত্বাধীন নিরীক্ষা দল প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দেন ২০২১ সালের ৩০ জুন। প্রতিবেদনে সমিতির হিসাব ‘নয়-ছয়’ করাসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তির অবৈধ ভোগ-দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ বিষয় নিরীক্ষা কাজে স¤পৃক্ত এবং ওয়াসার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ওয়াসার সঙ্গে পিপিআই প্রকল্পের কাজ একটি জোন দিয়ে শুরু। এরপর ছয়টি জোনে পিপিআই প্রকল্পের অধীনে কাজ হয়। মিটার রিডিং ও বিল আদায়ের পর প্রতি মাসে কমিশনবাবদ একটি অংশ (অর্থ) ওয়াসা বহুমুখী সমবায় সমিতির হিসাবে জমা হয়। এমন ছয়টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করলে গরমিল পাওয়া যায়। হিসাবগুলো হলো- জনতা ব্যাংক, কারওয়ান বাজার কর্পোরেট শাখার দুটি হিসাব; প্রিমিয়ার ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা এবং সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ধানমন্ডি শাখা।
এসব শাখায় থাকা হিসাবের তথ্য নিরীক্ষা দল যাচাই-বাছাই করেছে। এর পেছনে শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। আমি মনে করি, বিগত ১০ বছরের সব হিসাববিবরণী আইন ও বিধি অনুসারে খতিয়ে দেখলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। শুধু আত্মসাৎ নয়, আরও অনেক বিষয় রয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানে যা হওয়া উচিত নয়। ‘শক্তিশালী সিন্ডিকেটে কারা রয়েছেন’ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ফিলিস্তিন ও ভারতসহ সারা বিশ্বে মুসলমানদের প্রতি অন্যায় জুলুম বন্ধ করে ইনসাফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতার ১৭ দফা দাবী
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুজাহিদ বাহিনীর স্নাইপিং টার্গেটেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে ইসরাইলী সন্ত্রাসী সেনাদের
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বছরে উৎপাদন ১ টন: কফি চাষে সফল টাঙ্গাইলের ছানোয়ার
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মিয়ানমার সীমান্ত আবারও অশান্ত, রাতভর গোলার শব্দ
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রেস্তোরাঁ ব্যবসায় মন্দা
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন -আসিফ নজরুল
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আমরা পার্শ্ববর্তী দেশের গোলাম হয়ে থাকতে চাই না -হাফিজ
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার?
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৮০ টাকার নিচে নেই সবজি, আলু-পেঁয়াজের খবর কী? -নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল ক্রেতারা -নাগালের বাইরে সবজি, মাছ-গোশতের বাজারও চড়া -নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন, হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ -‘দুই-তিনটা সবজি কিনলেই ৫০০ টাকা শেষ’
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিজেদেরকে পরশপাথর মনে করলে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন -দুদু
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আজহায় ৬ দিন ছুটি
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফেলে দেয়া ঝুট কাপড়ে দিনবদলের কথা
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)