ড. ইউনূসের অবিশ্বাস্য অর্থপাচার, আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের বিবরণ
, ২১ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৪ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৪ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) দেশের খবর
ড. ইউনূসের অবিশ্বাস্য অর্থপাচার ও নানা আর্থিক দুর্নীতি এবং অন্যান্য অপরাধের সুনির্দিষ্ট ও বিস্ময়কর তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। ড. ইউনূস এদেশের মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হাজার হাজার কোটি টাকা কিভাবে বিদেশে পাচার করে আসছে।
১৯৯৭ সালে গ্রামীণ টেলিকম তথা গ্রামীণফোনের লাইসেন্স গ্রহণ করেন ড. ইউনূস। মূলত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীন টেলিকমের লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। কিন্তু লাইসেন্স গ্রহণ শেষে দেশের স্বার্থ রক্ষা না করে গ্রামীণফোনের অধিকাংশ শেয়ার বিদেশী কোম্পানীর হাতে তুলে দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন এর বিনিময়েই পরবর্তীতে সে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। ড. ইউনূসের কারণেই প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা মুনাফা হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে নরওয়েজিয়ান কোম্পানি টেলিনর।
গ্রামীণ টেলিকম বর্তমানে গ্রামীণফোনের ৩৪.২০ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার যার মাধ্যমে গ্রামীন টেলিকম প্রতিবছর গ্রামীণফোন থেকে হাজার কোটি টাকার উপর ডিভিডেন্ড পায়। কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় গঠিত এই অলাভজনক কোম্পানির কোন শেয়ার মূলধন নেই, কোন ব্যক্তি মালিকানা নেই। আইন অনুযায়ী এর কোন ডিভিডেন্ট অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তরের সুযোগ নেই। অথচ ড. ইউনূস প্রতিবছর গ্রামীণ টেলিকমের হাজার কোটি টাকার উপর ডিভিডেন্ট সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কয়েক হাত ঘুরিয়ে সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার করে আত্মসাৎ করছেন।
গ্রামীন টেলিকম গ্যারান্টি দ্বারা সীমাবদ্ধ একটি অলাভজনক কোম্পানী হওয়া সত্ত্বেও আইন লঙ্ঘন করে প্রতিবছর বিপুল পরিমান লভ্যাংশ গ্রামীণ কল্যাণ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করছে। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এর ২৮ ধারার অধীন গ্যারান্টি দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানী হিসেবে নিবন্ধিত একটি কোম্পানী যার কোন শেয়ার মূলধন নেই। দেশের দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার দাতব্য উদ্দেশ্যে এবং কোম্পানীর সদস্যদের মধ্যে কোনরূপ লভ্যাংশ শেয়ার না করার শর্তে ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের লাইসেন্স গ্রহণ করেন। কোম্পানী আইনের ২৮(১) এবং ২৯(১) ধারায় কোন সদস্যকে বা ব্যক্তিকে কোম্পানীর বন্ঠনযোগ্য মুনাফা লাভের অধিকার প্রদান না করার জন্য সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।
সুস্পষ্ট আইনি বিধান থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণ টেলিকম গ্রামীণফোন লিমিটেড-এ তার ৩৪.২০% শেয়ারের বিপরীতে প্রতিবছর যে পরিমাণ লভ্যাংশ অর্জন করে তার ৪২.৬৫% লভ্যাংশ গ্রামীণ কল্যাণ নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে আসছে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠার সময় প্রতিষ্ঠানটি গ্রামীণ কল্যাণের কাছ থেকে ৫৩,২৫,৬২,৯৪১/-টাকা (৫৩ কোটি ২৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৯৪১ টাকা) ঋণ গ্রহণ করেছিল। আইন অনুযায়ী কেবলমাত্র উল্লিখিত টাকাই গ্রামীন কল্যাণকে ফেরত দেয়ার কথা।
কিন্তু মাত্র ৫৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার বিপরীতে গ্রামীণ টেলিকম সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কোম্পানী আইনের উপরোক্ত ২৮(১) এবং ২৯ (১) ধারার সুস্পষ্ট বিধান লঙ্ঘণ করে গ্রামীণ কল্যাণকে বার্ষিক ৪২.৬৫% লভ্যাংশ হিসেবে এ যাবৎ ৫০০০ কোটি টাকার উপরে প্রদান করেছে। বিগত ১৩/০৪/২০১১ ইং তারিখে এই দুই কোম্পানি একটি বেআইনি ও অবৈধ চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে শর্ত ছিল গ্রামীণ টেলিকম প্রতিবছর তার লভ্যাংশের ৪২.৬৫ % গ্রামীন কল্যানকে প্রদান করবে। কোম্পানি আইনের বিধান এবং লাইসেন্সের শর্তের পরিপন্থী কোন চুক্তি করা যায় না। এ ধরনের অবৈধ চুক্তির কোন কার্যকারিতা নেই। যদিও ২০১১ সালের চুক্তির এক দশকেরও বেশি সময় আগে থেকেই গ্রামীন টেলিকম বেআইনিভাবে গ্রামীণ কল্যাণকে উক্তরূপ লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে।
গ্রামীণ টেলিকম তার লভ্যাংশের ৪২.৬৫% হিসেবে যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার উপরে অবৈধভাবে গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদান করেছে, সেই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণ কি করেছে এর কোন উত্তর কারো কাছে নেই। প্রথমত, গ্রামীণ টেলিকমের তার লভ্যাংশ থেকে এই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদানের কোন আইনি ক্ষমতা নেই। এটি সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। দ্বিতীয়ত, গ্রামীণ কল্যাণের এই অর্থ গ্রহণ করার কোন আইনি অধিকার নেই। এই অর্থ সম্পূর্ণরূপে তার জন্য অবৈধ। তৃতীয়ত, এই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণ কোথায় খরচ করেছে সেই তথ্য গ্রামীন কল্যাণ দিতে পারেনি। এছাড়া গ্রামীণ কল্যাণের এমন কোন প্রকল্প নেই যেখানে এই অর্থ ব্যয় হতে পারে। প্রাথমিক তদন্তে এটি উদঘাটিত হয়েছে যে, গ্রামীণ কল্যাণে ৫০০০ কোটি টাকার উপরে যে অর্থ প্রেরণ করা হয়েছিল, সেই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণের হাতে নেই। সেটি কয়েক হাত ঘুরে সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার হয়েছে।
অন্যদিকে গ্রামীণ টেলিকমের বাকি লভ্যাংশ অর্থাৎ ৫৭.৩৫ % লভ্যাংশ যার পরিমান ৭০০০ কোটি টাকার বেশি, সেই অর্থেরও প্রায় ৯০ ভাগ নামে-বেনামে অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই অর্থ কয়েক হাত ঘুরে সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার হয়েছে। সেই অর্থ দিয়ে ড. ইউনূস নিজের ব্যক্তিগত নামে বিভিন্ন দেশে সম্পদ ক্রয় সহ নানা রমরমা ব্যবসা করছে। এর কিছু অংশ বিদেশে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কাজে লবিস্টের পিছনে খরচ করেছে।
গ্রামীণ কল্যাণ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে ড. ইউনূসের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টে প্রতিবছর শত শত কোটি টাকা বেআইনিভাবে প্রদান করছে। নাজমুল ইসলাম (বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক) কর্তৃক প্রস্তুতকৃত একটি হিসাব থেকে দেখা যায় ৩১.১২.২০১০ থেকে ২২.০৮.২০১৩ সাল সময়ের মধ্যে গ্রামীণ টেলিকম শুধুমাত্র গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ১৪১৩.৫৮ কোটি টাকা ডোনেশন প্রদান করেছে যা পরবর্তী সময়ে কয়েক হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। বেআইনিভাবে হস্তান্তরিত উক্তরূপ অর্থ নানান হাত বদলের পর সামাজিক ব্যবসার নামে বিদেশে পাচার হয়েছে। বিদেশে এই অর্থের একমাত্র সুবিধাভোগী ড. ইউনূস।
এটি পরিষ্কার যে, কোম্পানি আইন এবং লাইসেন্স অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকম একটি অলাভজনক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও ড. ইউনূস বেআইনিভাবে গ্রামীন টেলিকম থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে। অথচ কোম্পানি আইন অনুযায়ী এই কোম্পানি থেকে এক টাকাও ড. ইউনূস নিজের অনুকূলে কিংবা অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে স্থানান্তর করতে পারে না। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের বিষয়টি আড়াল করার জন্যই ড. ইউনূস অত্যন্ত সুচতুর ভাবে বহিঃবিশ্বে সামাজিক ব্যবসার সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছে।
ড. ইউনূস গ্রামীন টেলিকম থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের মাধ্যমে লেয়ারিং সৃষ্টি করে বিদেশে পাচার করেছে। এটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২ এর ধারা ৪ এর বিধান মোতাবেক একটি গুরুতর দ-নীয় অপরাধ।
গ্রামীণ কল্যাণকে হাজার হাজার কোটি টাকা লভ্যাংশ প্রদান করা সত্ত্বেও এবং বাকি লভ্যাংশ নামে বেনামে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর করা সত্ত্বেও গ্রামীণ টেলিকম তার কোন লভ্যাংশ বন্টন হয় না মর্মে মিথ্যা বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে বার্ষিক রিটার্ন প্রদান করে আসছে যা কোম্পানি আইনের ৩৯৭ ধারার বিধান মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন -ভিন্নমত বিএনপিসহ বেশিরভাগ দলের
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে রেস্তোরাঁ বন্ধের হুঁশিয়ারি
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী জনগণ, রাজনৈতিক দলের কোনো ভূমিকা নেই
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
রেস্টুরেন্টের খাবারসহ প্রায় ১০০ পণ্যে খরচ বাড়ছে
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঢামেকের মর্গে আন্দোলনের সময় নিহত বেওয়ারিশ ৬ লাশ
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দ্বীন ইসলাম অবমাননা করায় শ্রীলঙ্কার এক সন্ন্যাসীর জেল
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সরকারের ঋণ ১৮ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে কৃষকের অনীহা, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শেখ হাসিনা ১২ জানুয়ারি ভার্চুয়াল বৈঠকে ভাষণ দিবেন, এনিয়ে আওয়ামী লীগে যা চলছে
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অ্যালার্ম ও নাইট ভিশন ক্যামেরা বসাল বিএসএফ
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘হুথির ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর সক্ষমতা ইসরাইলের নেই’
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানীর রাজারবাগ শরীফে প্রতিবাদ মিছিল
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)