জ্বালানি তেল পরিশোধনে সক্ষমতা বাড়ছে না বাংলাদেশের। পরিশোধিত তেল আমদানিতে বাড়ছে ব্যয়, প্রভাব পড়ছে তেলের মূল্যে।
পরিশোধন সক্ষমতা বৃদ্ধি করলে রাষ্ট্রের সাশ্রয় হবে ৭ হাজার কোটি টাকা। সরকারের উচিত- এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
, ২৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৯ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
গ্যাসের উপজাত হিসেবে পাওয়া কনডেনসেট ও আমদানি করা ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত তেল) পরিশোধন করে জ্বালানি তেল উৎপাদন করা হয়। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়েছে। তবে অপরিশোধিত তেল পরিশোধনের সক্ষমতা না বাড়ায় পরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়ছে প্রতিবছর। দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টন। এর মধ্যে ১৫ লাখ টন পরিশোধনের সক্ষমতা আছে। বাকী তেল পরিশোধিত হিসেবে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। সম্পূর্ণ পরিশোধিত তেল বিদেশ থেকে আমদানি করতে গিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্চা যাচ্ছে। যার প্রভাবও গিয়ে পড়ছে জ্বালানি তেলের মূল্যে।
অথচ চাহিদার সমপরিমাণ অপরিশোধিত জ¦ালানি তেল আমদানি করে দেশেই পরিশোধন হলে দ্বিগুণ ব্যয় সাশ্রয় নিশ্চিত হতো। পরিশোধিত তেল আমদানির চেয়ে ক্রুড অয়েল আমদানি করে পরিশোধন করা হলে লিটারে অনেক টাকা সাশ্রয় হয়। গত বছর পরিশোধিত তেল আনা হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টন। এবারও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। পুরোটা দেশে পরিশোধন করা গেলে বছরে ২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। আর চাহিদার পুরোটাই যদি ক্রুড অয়েল হিসেবে দেশে এনে দেশেই পরিশোধন করা যায় তাহলে বছরে ৬-৭ হাজার কোটি টাকার নিশ্চিত সাশ্রয় হবে। জ্বালানি তেলের দর সমন্বয়েও একটি বড় ভূমিকা রাখবে।
তবে বিভিন্ন সঙ্কট, সমস্যার কারণে দেশের তেল পরিশোধন সক্ষমতা বাড়ছে না। জ্বালানি তেলের পরিশোধনক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নেওয়া একটি প্রকল্প ১১ বছরেও চূড়ান্ত হয়নি। এর মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করা হয়েছে ১০ বার। এতে ব্যয় বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। ওই সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। এখন ১৯ হাজার কোটি টাকা। বিপিসি বলছে, অর্থায়ন সংক্রান্ত বিষয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতায় দীর্ঘসূত্রতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে।
পাশাপাশি, দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতেই (ইআরএল) অপরিশোধিত জ¦ালানি তেল (ক্রুড অয়েল) পরিশোধন করা হয়। তবে চাহিদা অনুপাতে ইআরএল’র উৎপাদন সক্ষমতা পাঁচ ভাগের এক ভাগ। ২৫ থেকে ৩০ বছর আগেই ১৯৬৮ সালে স্থাপিত ওই শোধনাগারের যথানিয়মে অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল অতিবাহিত হয়ে গেছে। অথচ আজও দেশ ৫৩ বছরের পুরনো মেয়াদোত্তীর্ণ ইআরএল’র উপর একক নির্ভর হয়ে আছে। বিকল্প রিফাইনারি না থাকায় ৮০ ভাগ জ্বালানি তেলই দেশে পরিশোধনের সক্ষমতা নেই। যে কারণে সরাসরি ফিনিশড বা পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বাড়ছে। প্রতিনিয়ত ইআরএল’র জরাজীর্ণ যন্ত্রপাতি, কলকব্জা জোড়াতালি ঝালাই-সারাই-মেরামত চলছে। তাতে মেরামতের খরচ যোগ হয়ে তেল পরিশোধন ব্যয় বাড়ছে। ফলে বাড়ছে তেলের মূল্যও। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। সরকার এবং গ্রাহক জনসাধারণ খেসারত দিচ্ছে। জ্বালানি তেল পরিশোধনে শুধু একটি শোধনাগারের উপর নির্ভর করা হচ্ছে। এতে সক্ষমতা তো বাড়ছেই না উপরন্তু এসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি, সিন্ডিকেট, লোপাট-লুটপাটের কবলে পড়েছে। অথচ বিশে^র কোনো দেশই একটি মাত্র রিফাইনারির উপর নির্ভর করে বসে নেই।
দুর্নীতি, লুটপাট ও অব্যবস্থাপনা ছাড়াও দেশের তেল পরিশোধন খাত নিয়ে চলছে ষড়যন্ত্র। মেরামত বাণিজ্যের মাধ্যমে ফায়দা হাতিয়ে নিতে একটি চক্র নতুন রিফাইনারি প্রতিষ্ঠা ঠেকিয়ে রাখতে দীর্ঘদিন ধরেই মরিয়া হয়েই তৎপরতা চালাচ্ছে। দেশে জ্বালানি তেলের পরিশোধন সক্ষমতা বাড়–ক তারা তা চাইছে না। সেজন্য চক্রটি নেপথ্যে নানামুখী বাধা-বিপত্তি, জটিলতা তৈরি করছে। পরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহকারী (সাপ্লায়ার্স) ও তাদের এজেন্টরাও দেশে নতুন রিফাইনারি হোক তা চাচ্ছে না। কারণ সরাসরি পরিশোধিত বা ফিনিশড জ্বালানি আমদানিতে এজেন্টদের বেশি লাভ। অপরিশোধিত (ক্রুড) আমদানি হলে তাদের ব্যবসা কমে যাবে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের অনেক দেশ তাদের দেশের ওয়েল রিফাইনারী খাতকে শক্তিশালী করছে, পরিশোধন সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। এতে করে তারা সরাসরি ক্রুড অয়েল ক্রয় করছে এবং জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা হলেও কম মূল্যে সরবরাহ করছে। ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কা তাদের দেশের চাহিদার ৩০% পরিশোধিত তেল উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। ওই বছর বাংলাদেশ তাদের চাহিদার মাত্র ২০% পরিশোধিত তেল উৎপাদন করতে সক্ষম হয় এবং চাহিদার বাকি অংশ আমদানি করে মেটানো হয়। অথচ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, জাতীয় অর্থনীতির পরিস্থিতির ধারের কাছেও নেই শ্রীলঙ্কা।
এক্ষেত্রে আমরা মনে করি, সরকারকে দেশের তেল পরিশোধন খাতকে সমৃদ্ধ করতে হবে। কারণ বর্তমানে ৬৫ লাখ টন থাকলেও আগামী ৫ বছরে এই চাহিদা ১ কোটিতে গিয়ে ঠেকবে। আর পরিশোধণ ক্ষমতা সে অনুপাতে বৃদ্ধি করা না গেলে আমদানিতেই বিপুল পরিমাণ খরচ হবে। তেলের দাম বর্তমানের চেয়ের আরো নাগালের বাইরে গিয়ে দাড়াবে। তাই এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করে সরকারকে প্রথমেই দেশে রিফাইনারী তথা তেল পরিশোধনাগারের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতেই (ইআরএল) এককভাবে নির্ভর করে থাকলে চলবে না। ইআরএলের সক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে হবে। তেল পরিশোধন খাতে যে গ্রুপগুলো, যে এজেন্টগুলো প্রভাব সৃষ্টি করে দেশের পরিশোধন খাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পরিশোধনে উন্নত প্রযুক্তি ও অবকাঠামোর সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। ঝুলে থাকা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রকল্প সফলভাবে সমাপ্ত হলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা আরো সুসংহত হবে এবং সেই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়সহ অধিকসংখ্যক লোকবলের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজ সুমহান বরকতময় মহাপবিত্র ২১শে জুমাদাল উলা শরীফ। সুবহানাল্লাহ! আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছহিবাতুল ইয্যাহ্- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)