চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণসহ বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত সরকারের উচিত- উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
, ১৩ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২২ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দেশের খবর
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছে, ‘শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। শুধুমাত্র পাস করেই চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরা উদ্যোক্তা হতে হবে এবং অন্যকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে হবে। উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে উদ্যোক্তাদের সংখ্যা। এক হিসেবে, দেশে ৭৮ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা রয়েছে। তবে উদ্যোক্তা বাড়লেও উদ্যোক্তাদের জন্য অনুকূল পরিবেশের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে দেশে।
দেশের কৃষি খাত কিছুটা ঋণ পায়। এর কারণ হচ্ছে, এর সাথে খাদ্য-নিরাপত্তার সম্পর্ক রয়েছে এবং সরকারের নীতিগত অবস্থান ও মনোযোগ রয়েছে। কৃষিঋণ নিয়ে পাবলিক সেন্টিমেন্টের একটা ব্যাপারও আছে। এ ব্যাপারে দেশের গণমাধ্যমগুলোও বেশ সজাগ। কিন্তু এসএমই খাতের ঋণ নিয়ে এখনো পাবলিক সেন্টিমেন্ট তৈরি হয়নি, কেউই সোচ্চার নয় এবং মিডিয়াও খুব বেশি কথা বলে না।
এ খাতে একটা সমস্যা হচ্ছে অর্থায়ন সঙ্কট। এর উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণ কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ খুব কম পায়। বেশির ভাগ সময় তারা মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন তথা এনজিওর ওপর নির্ভরশীল। অবশ্য কিছু ব্যাংকের এসএমই সেক্টর কর্মসূচি তাদের কিছু সহায়তা করে থাকে। এর বাইরে গতানুগতিক ভাবধারায় চলা ব্যাংকগুলো তাদের অর্থায়ন করতে চায় না। তাদের ঋণ দেয়া ঝুকিপূর্ণ, অল্প অল্প করে অধিক মানুষকে ঋণ দিতে হয়, সুপারভিশন করতে প্রচুর সময় ব্যয় হয়। এ রকম নানা অজুহাত দেখিয়ে থাকে ব্যাংকগুলো। ফলে উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হয়।
সাম্প্রতিক সময়েরই কথা যদি বলা হয়, লকডাউন থেকে ঘুরে দাড়াতে সরকার থেকে যে প্রণোদনা প্যাকেজ দেয়া হয়েছিলো তার মধ্যে রফতানি খাত, বিশেষ করে আরএমজি এক্সপোর্ট সেক্টর, তারপর বৃহৎ শিল্পের অন্যান্য সেক্টরে অতি দ্রুত প্যাকেজের টাকা শেষ হয়ে যায়; কিন্তু এসএমই খাতে ব্যাংকগুলো বরাদ্দ টাকা দিতে পারেনি।
উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিধিবিধানগত শর্ত পূরণ এবং একই উদ্দেশ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশে যেসব হয়রানি, দীর্ঘসূত্রতা ও অনিয়মের চর্চা রয়েছে, সেগুলোও উদ্যোক্তাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। অনেক সম্ভাবনাময় আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তাই এসব ‘ব্যয়বহুল’ ও হয়রানিপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার ধরন দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
উদাহরণস্বরূপ: বাংলাদেশে যেকোনো ব্যবসায় বা শিল্প শুরু করার জন্য প্রথমেই দরকার হয় স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স। এ ট্রেড লাইসেন্স পেতে যুক্তিসংগত পরিস্থিতিতে সাধারণভাবে কত দিন লাগার ও কত ব্যয় হওয়ার কথা, আর বাস্তবে কত দিন লাগে ও কত ব্যয় হয়, তার একটি হিসাব করলেই উদ্যোক্তা উন্নয়নের পুরো প্রক্রিয়ার হয়রানি ও ‘ব্যয়’ সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা পাওয়া সম্ভব।
এক কথায়- প্রধানমন্ত্রীসহ সরকার সংশ্লিষ্টরা উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করলেও দেশের উদ্যোক্তারা অবহেলাপূর্ব পরিস্থিতির শিকার। অন্যদিকে- উদ্যোক্তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ শুধু বক্তৃতা-বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকায় উদ্যোক্তা জাতীয় অর্থনীতিতে যতটা অবদান রাখার কথা ছিলো ততটা রাখতে পারছে না। তবে বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের নয়। বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০ থেকে ২৫% অবদান এসএমই খাতের। কিন্তু ওইসিডিভুক্ত ইউরোপীয় সদস্য দেশগুলোর জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান ৫৫%। চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিপিতে ৬০ থেকে ৭০% অবদান রাখছে এসএমই খাত। বেশির ভাগ কর্মসংস্থানও তাদের এসএমই খাতে।
প্রসঙ্গত, পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতা না পেলেও এই উদ্যোক্তারা দেশের জিডিপিতে অবদান রাখেন ২৫%। উদ্যোক্তাদের কারণে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এক্ষেত্রে যদি উদ্যোক্তাদের পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়, উদ্যোক্তাদের বহুবিধ সমস্যাগুলোর সমাধান করা হয় তাহলে উদ্যোক্তারা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো সুঠাম করতে পারতো।
আমরা মনে করি সরকারের উচিত- উদ্যোক্তাদের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা করার পাশাপাশি তাদের জন্য সুদবিহীন ব্যাংক ঋণ, উদ্যোক্তাবান্ধব ব্যবসায়িক নীতিমালা, বাজেটে তাদের জন্য অর্থায়নসহ উদ্যোক্তাদের সার্বিক উন্নয়নে যথাযথো পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আর তাতে করেই দেশের তরুণ সমাজ চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ায় উৎসাহিত হবে। দেশে উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। জাতীয় অর্থনীতিতে তাদের অবদান বৃদ্ধি পাবে। বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
এবার ইউক্রেনের সঙ্গে ‘কৌশলগত সম্পর্ক’ গড়তে চায় সিরিয়া
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
রএ মাসেই কয়েক দফা শৈত্যপ্রবাহ
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চাঁদপুরে ৭ মণ কচ্ছপ উদ্ধার
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘মার্চ ফর ইউনিটি’র গাড়িবহরে হামলা, সংঘর্ষ, রণক্ষেত্র
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আ.লীগের সুবিধাভোগীরা এসে কেঁদে দিয়ে বলে তারাও বঞ্চিত -আসিফ নজরুল
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জাতি একবারই স্বাধীন হয়, একাত্তরের সঙ্গে ২৪’র তুলনা চলে না -নুর
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আজ পবিত্র রজবুল আছম্ম মাসের চাঁদ তালাশ বিষয়ে ‘মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল’ উনার সভা
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঢেলে সাজানোর আগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ অনুমোদন গ্রহণযোগ্য নয় -টিআইবি
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শিবিরের সম্মেলনে সারজিস, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজের অঙ্গীকার
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সামনে বড় যুদ্ধ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য -তারেক রহমান
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)