চাঁপাইনবাবগঞ্জে অস্তিত্ব সংকটে ফজলি আম
, ১৪ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২১ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) দেশের খবর
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা:
আন্দোলন করে ফজলি আমের জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমজনতা। কিন্তু সেই ফজলিই এখন অস্তিত্ব সংকটে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। জিয়াই স্বীকৃত এই আমের গাছের জাত বদল করে অন্য আমচাষ বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন আমচাষিদের মাঝে সচেতনতা গড়ে না উঠলে ফজলি অলাভজনক অন্যান্য জাতের মতো হারিয়ে যাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত তিন কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ফজলি জাতের আম। প্রথমত নতুন করে আর ফজলির বাগান গড়ে উঠছে না। দ্বিতীয়ত পুরোনো বিশাল বিশাল গাছের উৎপাদনক্ষমতা কমে গেছে। তৃতীয়ত সমতুল্য জাত আম্রপালির সঙ্গে বাজারমূল্যের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছে ফজলি আম।
শিবগঞ্জ উপজেলার সুজা আলী বলেন, আগের জনপ্রিয় ফজলি জাতটি প্রথম বাণিজ্যিক ধাক্কা খায় কয়েক বছর আগে। তখন চাঁপাইনবাবগঞ্জে কেবল আম্রপালি জাতের সম্প্রসারণ শুরু হয়। আম্রপালি আম পাকে ফজলির সময়ই। আকার ও স্বাদে আকর্ষণীয় হওয়ায় আমপ্রেমীরা ফজলির বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করেন আম্রপালিকে। এতেই কমে যায় ফজলি আমের কদর।
চাষিরা বলছেন, কদর কমায় ফজলি আমের দামও কমেছে। মাত্র তিন বছর আগে যে ফজলি আম বিক্রি হয়েছে ৪-৫ হাজার টাকা মণ দরে। গত দুই বছর থেকে বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা মণ দরে। এতে লোকশানে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। তাই ফজলি আমের গাছ কেটে কাটিমন জাতের আম বাগান তৈরি করছেন তারা।
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, জেলায় প্রতি বছর আমবাগান বাড়লেও নতুন করে কেউ আর ফজলির বাগান গড়ে তুলছেন না। অথচ গত এক দশকে বিপুল পরিমাণ জায়গা দখল করে নিয়েছে আম্রপালি, কাটিমনসহ বিভিন্ন জাতের আম। পুরনো যে ফজলির বাগানগুলো রয়েছে সেগুলোও হারিয়েছে উৎপাদনক্ষমতা। সব মিলিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেই যাচ্ছে জাতটি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছর ফজলি আমের চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে। গাছের সংখ্যা ৫ লাখ ৯১ হাজার। গত কয়েক বছরে ফজলি জাতের কী পরিমাণ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে তার পরিসংখ্যান নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে। তবে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বড় বড় গাছ কেটে ফেলার ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি আম গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে শিবগঞ্জ উপজেলায়। এই উপজেলাতেই ফজলির বাগান বেশি। সম্প্রতি শিবগঞ্জের শেখটোলা গ্রামে সাড়ে ১৬ বিঘা আয়তনের একটি ফজলি বাগান কেটে ফেলতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এই বাগানের একেকটি গাছের বয়স দেড়শ’ বছরের কম নয়। ধাইনগর, শাহবাজপুর, হাজারবিঘী, তেলকুপি এলাকাতেও বাগানের বড় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বাগান মালিকরা বলছেন ৪-৫ বছর আগে থেকে বাগান কাটা শুরু হলেও গত দুই বছরে দেদারসে কাটা হচ্ছে গাছ।
কেন কাটা হচ্ছে আমগাছ:
আমচাষিরা বলছেন বড় গাছগুলো থেকে আগের মতো আর আম পাওয়া যাচ্ছে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনক্ষমতা হারিয়েছে গাছগুলো। উৎপাদন কমে যাওয়ায় হতাশা থেকেই কেটে ফেলা হচ্ছে বাগান।
শিবগঞ্জের শেখটোলা গ্রামের আব্দুল জলিল ও সমশের আলী বলেন, ফজলি গাছে আমের উৎপাদন কমে গেছে। এছাড়াও বড় গাছ হওয়ায় পরিচর্যা করতে সমস্যা হচ্ছে বাগানীদের। তাই জেলার আম বাণিজ্যের জন্য অশনী সংকেত হলেও চাষিরা সাময়িক লাভের কথা চিন্তা করে উজাড় করছেন বাগান।
রফিক নামে এক ব্যক্তি বলেন, ভারত থেকে আসা অবৈধ হরমোন ‘কালটার’ অতিরিক্ত মাত্রায় প্রয়োগে ফজলি আম গাছের ক্ষতি হয়েছে। অনেক গাছের কা- পচে গেছে। তাই কোনো কোনো বাগানে বাধ্য হয়েই কেটে ফেলতে হচ্ছে আম গাছ। বড় গাছে হরমোনের অতিরিক্ত প্রয়োগ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন চাষিরা।
তবে বড় গাছগুলোর উৎপাদনক্ষমতা হারিয়েছে চাষিদের এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক। তিনি বলেন, বড় গাছ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সম্পদ। যে হারে বড় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে আমচাষিদের হা-হুতাশ করতে হবে।
তিনি বলেন, একটি বড় গাছ কম জায়গায় অনেক বেশি আম উৎপাদন করে। বড় গাছের সমপরিমাণ জায়গায় ছোট গাছ লাগিয়ে সেই পরিমাণ আম পাওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় হতে হবে। চাষিরা যাতে গাছ কেটে না ফেলেন সে ব্যাপারে তাদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি চাষিরা তাদের উৎপাদিত আমের সঠিক মূল্য যেন পান তা নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রাণপ্রিয় রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং দ্বীন ইসলামের দুশমনদের ফাঁসি এবং সাধারণ মুসলমানদের সাথে প্রতারণা, জুলুম নির্যাতন বন্ধের দাবীতে সমাবেশ
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আল্টিমেটাম দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনরত বিডিআর পরিবারের সদস্যরা
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আকুর বিল পরিশোধের পর কমলো রিজার্ভ
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শিশুটি জানে না তার পরিবারের কেউ বেঁচে নেই
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শিশুটি জানে না তার পরিবারের কেউ বেঁচে নেই
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, আরও বিস্তৃত হতে পারে
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঋণের নামে ১১১৪ কোটি টাকা ভাগাভাগি, জড়িত এস আলমের দুই ছেলে
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চট্টগ্রাম আদালত থেকে খোয়া যাওয়া ৯ বস্তা নথি উদ্ধার, আটক ১
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
থানায় নিজ কক্ষে ঝুলছিল ওসির লাশ
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দিল্লির ‘হাসিনাপ্রীতিতে’ অসন্তুষ্ট খালেদার দল
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পুড়ল এজলাস, শিক্ষার্থীদের বাধা, কবে কোথায় শুরু বিডিআর বিদ্রোহের বিচার?
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
টিসিবি চাল বিক্রি বন্ধ করায় বিপাকে কোটি পরিবার
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)