চাঁদ এবং ইসলামী মাস নির্ধারণে সউদী ওহাবী ইহুদীদের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত (১৫)
, ২৫ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল
চাঁদের তারিখ ঘোষণায় সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সউদী মুফতীদের ফতওয়া
মনগড়াভাবে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের চাঁদের তারিখ ঘোষণার বিরুদ্ধে দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাতসহ অন্যান্য পত্রিকায় অনেক লেখা প্রকাশিত হওয়ার পরেও বাংলাদেশসহ অনেক দেশের উলামায়ে সূ এবং সাধারণ মানুষের ধারণা এসকল বিরুদ্ধাচরণ হয়তো আক্রোশমূলক অথবা গোষ্ঠী ভিত্তিক। কিন্তু খোদ সউদী আরবের মুফতী, প্রচার মাধ্যম, বিজ্ঞানীরা যে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের এসব শরীয়ত বহির্ভূত সিদ্ধান্ত এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার, তা অনেকেরই জানা নেই।
উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৪২০ হিজরী সনে সউদী আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয় ৭ই জানুয়ারী, জুমুয়াবার। অথচ ৬ই জানুয়ারী, ইয়াওমুল খ্বামীস বা বৃহস্পতিবার পৃথিবীর কোথাও শাওওয়াল মাসের চাঁদ দৃশ্যমান হয়নি। ৬ই জানুয়ারী সউদী আরবে সূর্য অস্ত গিয়েছিল ৫টা ৫৬ মিনিটে অথচ চাঁদ অস্ত যায় সূর্য অস্ত যাওয়ার ৯ মিনিট পূর্বেই। আরও অবাক বিষয় হচ্ছে, তাদের গণনাকৃত শাওওয়াল মাস শুরু হওয়ার ৪ ঘণ্টা পর চাঁদ অমাবস্যায় যায়। তাহলে যে চাঁদ অমাবস্যাতেই পৌঁছেনি সে চাঁদ যে দৃশ্যমান হয়নি, তা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। ফলে সউদী আরবের কয়েকজন মুফতী এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে উঠে।
১৪২০ হিজরীতে সউদী আরবের চাঁদের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শায়েখ ডঃ ইউসুফ আল কারদায়ি ফতওয়া দেয় যে, “যারা ১৪২০ হিজরীতে জুমুয়াবারে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করেছে তারা যেন একটি রোযা ক্বাযা আদায় করে নেয়”।
এছাড়াও শায়েখ মুহম্মদ বিন সালেহ আল উথাইমিন ফতওয়া দেয়, “যদি পৃথিবীর কোথাও সূর্যাস্তের পর সূর্যগ্রহণ হয় তবে পরের দিন কখনোই নতুন মাসের নতুন দিন শুরু হবে না। ”
চিত্র-১২: শায়েখ ডঃ ইউসুফ আল কারদায়ির ফতওয়া।
খোদ সউদী গণমাধ্যমেই চাঁদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের তথ্য উপস্থাপন:
এ যাবৎ চাঁদ নিয়ে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের ষড়যন্ত্রের অনেক দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করা হলো। তবে সে দলীল-প্রমাণগুলোর অধিকাংশই ছিল মহাকাশ বিজ্ঞানের আলোকে। এছাড়াও সেখানকার মুফতীদের ফতওয়া উল্লেখ করেও সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের চাঁদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ দেয়া হয়েছে। তারপরেও হয়তো অনেকের বোধোদয় হচ্ছেনা। আর তাই সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার কর্তৃক চাঁদ নিয়ে বিভ্রান্তির যে তথ্য সেখানকার গণমাধ্যমেই এসেছে, সে তথ্য এখন উপস্থাপন করা হবে ইনশাআল্লাহ!
প্রমাণ এক: ১৪২০ হিজরীর পবিত্র ঈদুল ফিতর সঠিক তারিখে না হওয়ার কারণে “আরব নিউজ” ২০০০ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারী, জুমুয়াবার এ বিষয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করে।
প্রমাণ দুই: ১৪২০ হিজরীর ৬ই শাওওয়াল, ইয়াওমুল খ্বামীস, “আদ দাওয়া” ম্যাগাজিনে এ ব্যাপারে নিবন্ধ প্রকাশ করে।
প্রমাণ তিন: শাইখ আল মানিয়া ১৯৯৯ সালের ১২ই ডিসেম্বর, ইয়াওমুল আহাদ “আল জাজিরাতে” চাঁদের বিভ্রান্তি নিয়ে মত প্রকাশ করে।
http:/ww/w.alri“adh.com/2007/10/21/article288058.html
প্রমাণ চার: সউদী আরব যেদিন ১৪২৭ হিজরী সনের পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখার ঘোষণা দেয় সেদিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বেই চাঁদ অস্ত যায় এবং সউদী আরবের ৬টি চাঁদ দেখা কমিটিও চাঁদ দেখতে পায়নি। যে সাক্ষীর ভাষ্য অনুযায়ী মাস ঘোষণা দেয়া হয় তাকে গণমাধ্যমের কারো সাথে কথা বলতে নিষেধ করা হয়।
প্রমাণ পাঁচ: ১৪২৫ হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস চাঁদ না দেখে শুরু হওয়াতে সউদী “আল ওয়াতান” পত্রিকায় “Testimonies of the Impossible” শিরোনাম দিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করে সউদী লেখক হামযা আল মুযাইনি। “আল হায়াত” পত্রিকা থেকে সাক্ষীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তাকে গণমাধ্যমের সামনে আনা হয়নি আর কিং আব্দুল আযীয বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গিয়ে দেখতে পায় ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ। অর্থ দিয়ে সাক্ষ্য নেয়া হয়েছিলো।
প্রমাণ ছয়: মহাকাশ বিজ্ঞানীদের ভাষ্য অনুযায়ী (যা সঠিক ছিল) ২০০৭ সালের ১লা অক্টোবর, ইছনাইনিল আযীম শরীফে “আরব নিউজ”-এ পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হওয়ার তারিখ ঘোষিত হয় ১৩ই অক্টোবর, ইয়াওমুস সাবত। কিন্তু সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার তারিখ এগিয়ে এনে ১২ই অক্টোবর, জুমুয়াবারে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করতে জনগণকে বাধ্য করে। নাঊযুবিল্লাহ! (চলবে)
-এবিএম রুহুল হাসান।