কুরবানীর পশুর হাট কমিয়ে সরকারিভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ডিজিটাল পশুর হাটকে। ডিজিটাল পশুর হাট শরীয়তসম্মত নয়।
, ০৩ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৩ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সম্পাদকীয়
ভয়ংকর সব প্রতারণা হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে প্রতারকের সংখ্যা। বদলাচ্ছে প্রতারণার ধরণ। ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইল ফোনে ওঁৎপেতে থাকা প্রতারকরা নানা কৌশলে অর্থকড়ি হাতিয়ে নিয়ে নিঃস্ব করছে মানুষকে। এবার সেই ডিজিটাল প্রতারণা যুক্ত হয়েছে পবিত্র কুরবানীর পশুর হাটেও। নাউযুবিল্লাহ!
আর মাত্র কয়েকদিন পরই পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থাৎ পবিত্র কুরবানীর ঈদ। গত বছরের মতো এবারও কুরবানীর পশুর হাটের সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে মাত্র ১৭টি অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পশুর হাট কমিয়ে দিয়ে এর বিপরীতে সরকারিভাবে ডিজিটাল পশুর হাটকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। মানুষকে ডিজিটাল পশুর হাট থেকে পশু ক্রয়ের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, ডিজিটাল পশুর হাটে নানাবিধ প্রতারণার শিকার হবে কুরবানীদাতারা। গত বছর ডিজিটাল পশুর হাট থেকে পশু কিনে প্রতারিত হয়েছেন খোদ বাণিজ্যমন্ত্রী। একটি ই-কমার্স সাইটের উদ্বোধনীতে কুরবানীর জন্য ১ লাখ টাকায় গরুর অর্ডার দিয়ে কাঙ্খিত গরু পাননি। বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য হলো, ‘আমাকে যে গরুটি দেখিয়েছিল, সেটি দেয়নি। পাঁচ-ছয় দিন পর জানা গেলো আমাকে যে গরুটি দেখানো হয়েছিল, তা বিক্রি হয়ে গেছে। পরে আমাকে কম দামে অন্য একটি গরু দিয়েছিল। গরু পাওয়ার আগে টাকা পরিশোধ করে আমি তাদের কাছে বন্দি হয়ে গিয়েছিলাম। তাই পরে ওরা যে গরুটি দিয়েছে, তাই নিয়েছি। ’ ডিজিটাল মাধ্যমে গরু কিনে যেখানে মন্ত্রীই প্রতারিত হচ্ছে সেখানে সাধারণ মানুষ ঠকার আশঙ্কা হাজারগুন বেশি।
অনলাইনে সাধারণত ছবি দেখে গরু বুকিং দিতে হয়। আর বুকিং দিলে তাদের টাকা দিয়ে দিতে হয়। শর্ত থাকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত তারাই লালন-পালন করে দেবে। সেক্ষেত্রে ঈদের আগের রাতে একজন ক্রেতা গিয়ে যদি ছবিতে দেখা তার গরুটা না পায় তা হলে সেই ব্যক্তি আর কী করতে পারবে? গোশত বানিয়ে প্যাকেট করে দেওয়ার অনলাইন সার্ভিসেও প্রতারণার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেতারা। তাদের ভাষ্য, যে গরুর ছবি দেখে টাকা পরিশোধ করা হলো, সেই গরুর গোশত না দিয়ে অন্য গোশত দিয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু সরাসরি কেউ দেখছে না। এ ছাড়া গরু ওজন করার ক্ষেত্রেও ফাঁকফোকর রয়েছে। গরুকে বেশি পরিমাণ পানি খাইয়ে অনেকেই ওজন করে থাকে। কিছুক্ষণ পর সেই ওজন আর থাকে না। কিন্তু টাকা পরিশোধ করতে হয় অনলাইনে দেখা ওজনেই। আবার অনলাইনে পশু রোগাক্রান্ত কি না তা যাচাই করারও সুযোগ নেই।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, কুরবানী শুধু করলেই হবে না বরং এটি কবুল হওয়ার জন্য শর্ত-শারায়েত, মাসয়ালা-মাসায়েল রয়েছে। অনলাইনে পশু ক্রয় বিক্রয় করতে গেলে যে বিষয়টি প্রথমে আসবে তা হলো পশুর ছবি-ভিডিও। যা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে নাজায়িয ও হারাম। আর হারাম কাজ করে বা হারামের মাধ্যমে পবিত্র কুরবানী করলে তা কবুল হবে না। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কুরবানীর পশুকে সম্মান করতে বলা হয়েছে। কিন্তু হারাম-নাজায়েজ ছবির মাধ্যমে অনলাইনে ছবি দিয়ে কুরবানীর পশুকে উল্টো অসম্মান করা হবে। নাউযুবিল্লাহ!
একইসাথে, পশুর বয়স, সুস্থতা, নিখুঁতের বিষয়টির সাথে পবিত্র কুরবানী কবুলের বিষয়টি জড়িত। আর অনলাইন হাটের মাধ্যমে পশুটি কতটুকু সুস্থ, কতটুকু নিখুঁত সেটা স্পষ্টভাবে জানা বা দেখা অসম্ভব। বরং ধারণার উপর ক্রয়- বিক্রয় করা হবে। যা শরীয়তে বেচা-কেনার শর্ত ভঙ্গের শামিল। তাই পবিত্র কুরবানীর পশু এভাবে ক্রয় করলে কুরবানী কবুল হওয়ার শর্তসমূহ প্রমাণ করা অসম্ভব এবং সে পশু কুরবানী করলে তা কবুল হবে না। এক কথায়, অনলাইনে পশু ক্রয় অনলাইন জুয়ার মতো। ক্রেতা ঠকবে নাকি জিতবে তার কোনোই নিশ্চয়তা নেই।
অপরদিকে ন্যাক্কারজনক বিষয় হলো, পবিত্র কুরবানীকে ঘিরে সারাদেশের খামারিরা কোটি কোটি কুরবানীযোগ্য পশু প্রস্তুত করেছে। কিন্তু সরকার থেকে পশুর হাট কমিয়ে দেয়ায় এবং অনলাইন পশুর হাটে গুরুত্ব দেয়ায় চরম উৎকণ্ঠা ও লোকসানের শঙ্কায় লাখ লাখ খামারির পথে বসার জোগাড় হয়েছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ খামারিরা এবার বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছে। কারণ, বাংলাদেশের সিংহভাগ প্রান্তিক খামারিই অনলাইন এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে তেমন জ্ঞান রাখে না। তাই অনলাইনে গরুর হাট দেয়া হলে প্রকৃত খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বড় মুনাফা চলে যাবে মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে।
প্রসঙ্গত, পবিত্র কুরবানীর হাটে গিয়ে পশু কেনা বাংলাদেশের ঐতিহ্য। যারা কুরবানী দেয়, তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পশু কিনতে হাটে যায়। দরদাম করে পশু কিনে বাড়ি ফেরার মধ্যে আনন্দ রয়েছে। এতে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাই বিশে^র দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রের সরকারের কাছ থেকে কখনই পশুর হাটের সংখ্যা কমিয়ে কুরবানীবিরোধী অনলাইন পশুর হাটের মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত কাম্য নয়। দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি চলছে। এমন মুহুর্তে খামারীদের এই অনলাইন পশুর হাটের ফাঁদে ফেললে তারা সর্বশান্ত হয়ে যাবে।
সঙ্গতকারণেই, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম রাষ্ট্রের সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে এসব অনাচার-স্বেচ্ছাচার বন্ধ করে পবিত্র কুরবানীর সম্মানার্থে, পবিত্রতা রক্ষার্থে অনলাইনে পশুর হাটের ঘোষণা দিয়ে কুরবানীকে বাধাগ্রস্ত না করে সারাদেশে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী হাজার হাজার পশুর হাটের ব্যবস্থা করা। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শে উজ্জিবিত হয়ে কুরবানীর সর্বোচ্চ পৃষ্ঠপোষকতা করা। খামারীরা যাতে পশু নির্বিঘেœ হাটে তুলে মুনাফা করতে পারে সে ব্যবস্থা করা।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)