কর্পোরেট কয়েকটি পোল্ট্রি কোম্পানীর দ্বারা প্রান্তিক খামারীরা চরমভাবে জিম্মী হয়ে আর্থিকভাবে মহা প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে। পাশাপাশি একদিকে উচ্চ মূল্যে ফিড, ঔষধসহ সবকিছু কিনতে বাধ্য হচ্ছে অপরদিকে নামমাত্র মূল্যে তাদের সিন্ডিকেটের কাছেই বিক্রী করতে বাধ্য হয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। মহাসম্ভাবনাময় প্রান্তিক পোল্ট্রি মালিকদের রক্ষায় সরকারকে এক্ষনি ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
, ২০ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৩ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সম্পাদকীয়
দেশের পুষ্টি সরবরাহের অন্যতম প্রধান খাত পোল্ট্রি। পুষ্টির প্রধান উপাদান গোশত এবং ডিম আসে এই খাত থেকে। সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং নীতিমালার অভাবে গভীর সংকটে সম্ভাবনাময় এই শিল্প। এই শিল্প ধ্বংস হলে হুমকির মুখে পড়বে পুষ্টি সরবরাহ ব্যবস্থা। বেকার হয়ে পড়বে লাখ লাখ মানুষ। আমদানি নির্ভর হয়ে যাবে এই খাত। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য।
একটা সময় ছিল মানুষ পোল্ট্রির ডিম কিংবা ব্রয়লার মুরগির গোশত খেতে চাইত না। পোল্ট্রি পণ্যের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার হয়েছে, এখনো হচ্ছে। ডিম এবং গোশত জনপ্রিয় করে তোলার জন্য সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে অনেক প্রচার চালাতে হয়েছে। আশির দশকে এ শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৫শ’ কোটি টাকা। বর্তমানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। মাত্র চার দশকের মধ্যে আমদানি নির্ভর খাতটি এখন আত্ম-নির্ভরশীল।
পোল্ট্রি গোশত, ডিম, একদিন বয়সী বাচ্চা এবং ফিডের শতভাগ চাহিদা মেটাচ্ছে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প। মানুষের জন্য কম দামে প্রাণিজ আমিষের জোগান দিচ্ছে। নতুন প্রজন্মের রুচি ও চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে চিকেন নাগেট, সসেজ, ড্রামস্টিক, বার্গার, সামোসা, মিটবলসহ বিভিন্ন ধরনের মজাদার প্যাকেটজাত খাবার। কিছুদিন আগেও এগুলো আমদানি করতে হতো বিদেশ থেকে।
কিন্তু সম্ভাবনাময় এই পোল্ট্রি শিল্প নিয়ে চলছে দেশী-বিদেশী গভীর ষড়যন্ত্র।
পোল্ট্রি শিল্প ধ্বংস করে করপোরেট কোম্পানিগুলো বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্প মারাত্মক হুমকির মুখে।
চুক্তিবদ্ধ নামে প্রান্তিক খামারিদের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প ও চেক নিয়ে প্রতারণা করে গুটিকয়েক করপোরেট কোম্পানি বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে। চুক্তিবদ্ধ খামার করতে না চাইলে খামারি এবং ডিলারদের বিরুদ্ধে করপোরেট কোম্পানিগুলো চেক ডিজেনার মামলা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর মধ্যে প্রমাণিত- ৭১ফিড কোম্পানি, আলাল গ্রুপ, বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত কোটি টাকা খামারিদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে নিয়েছেন। শুধু রংপুর জেলায় চুক্তিবদ্ধ পোল্ট্রি খামারিদের কাছ থেকে ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং সকল খামারি রাস্তায় রাস্তায় দেউলিয়া হয়ে ঘুরছেন। অনেক খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন।
পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, দেশে বর্তমানে ডলার সংকটকালে বিদেশ থেকে ডিম আমদানি করার কথা কেন উঠে তা জানা জরুরি। ডিম আমদানি মূল বিষয় নয়, কালো টাকা সাদা করা এবং দেশ থেকে টাকা পাচারের ব্যবস্থা করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে। ফিড উৎপাদনে কোম্পানিগুলো বছরে সিন্ডিকেট করে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে। যেমন ভুট্টা, সয়াবিন বাজারে মূল্য থাকে ২৫ টাকা, কোম্পানিগুলো কিনে ২৬ টাকা। এভাবে তারা সব পণ্য গুদামজাত করে ফিড উৎপাদনকারী সব করপোরেট কোম্পানি ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বাজার উঠিয়ে দেয় শুধু তাদের উৎপাদিত ফিডের দাম বাড়ানোর জন্য। সিন্ডিকেট করে ১০ টাকা কেজি দরে যদি দেখানো হয় তাহলে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। বছরে এক দিন বয়সের মুরগির বাচ্চায় সিন্ডিকেট করে বছরে ৮০০ কোটি টাকা লোপাট করে। চুক্তিবদ্ধ খামারিদের কাছ থেকে প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
এক গবেষণায় দেখা গেছে পোল্ট্র্রি উৎপাদনে মোট খরচের শতকরা ৬৫ থেকে ৭৫ ভাগ শুধু খাবারের পিছনে যায়। এজন্য পোল্ট্রি খাবারের বা ফিডের দাম কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
পোল্ট্রি, গবাদি পশু এবং মাছের খামারগুলোর মধ্যে বর্তমানে বাণিজ্যিক ফিড বাজারে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি পোল্ট্রি ফিড রয়েছে। যথাযথভাবে ভালো মানের ফিড সরবরাহ করলে এই শিল্পের প্রবৃদ্ধি উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনা হয়েছে। বর্তমানে পোল্ট্রি খাতে সমস্যাগুলোর মধ্যে বড় সমস্যা হলো সিন্ডিকেট। এ খাত ঘাটে ঘাটে সিন্ডিকেটের কবলে বন্দি। যেমন ডিম সিন্ডিকেট, ফিডের ক্ষেত্রে আর এক ধরনের সিন্ডিকেট, ওষুধ, ভুয়া ওষুধ সিন্ডিকেটসহ চিকিৎসা ক্ষেত্রেও নানা সিন্ডিকেটের জালে বন্দি এ খাত। এসব সিন্ডিকেট বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সিন্ডিকেটের কারণে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। প্রায় ১৭ লাখেরও বেশি লোকের জীবিকা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পোল্ট্রি শিল্পের ক্ষত দিন দিন বৃদ্ধি পেলে বেকারত্বও বাড়তে থাকবে, বন্ধ হয়ে যাবে খামারগুলো। ফলে পুষ্টির যোগানে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের নিকট ডিম ও মুরগির গোশতের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটির ব্যাপক উন্নয়ন ও উৎপাদন খরচ কমানোর পাশাপাশি প্রশিক্ষিত খামারিদের দ্বারা পরিচালনা করা প্রয়োজন। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় খামারীদের প্রশিক্ষণের জন্য ভ্রাম্যমাণ কর্মসূচি নেওয়ার পাশাপাশি সহজশর্তে ঋণ প্রদান ও ঝুঁকিতে থাকা খামারগুলোর তালিকা করে তা সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার।
সাধারণত একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে অন্তত ডিম ও মুরগির গোশত থাকলে ন্যূনতম মেহমানদারীসহ তাদের নিজেদের জীবন মোটামুটিভাবে চলতে পারে। তাই পোল্ট্রি শিল্পের মতো এ গুরুত্বপূর্ণ খাতকে নানা ঝুঁকির হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। টেকসই উন্নয়নে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পোল্ট্র্রি খামারগুলোকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও দাম বাড়াতে কালোবাজারী করতে না পারে সিন্ডিকেটবাহিনী। এ খাতে বিনিয়োগ সহজলভ্য করে বিদেশ থেকে যেসব উপকরণ আনতে হয় তার শুল্ক-ভ্যাাটসহ আমদানি খরচ কমানো দরকার। দেশের অনুন্নত ফিডমিলগুলোকে উন্নত করার পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার বিশাল নথিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমি দখলদার ১ লাখ ৬০ হাজার নাম এসেছে শুধু নাম সর্বস্ব না করে বনভূমি উদ্ধারের বাস্তব নজীর চাই
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফুটপাতের প্রান্তিক হকারদের কাছ থেকে অসৎ ও লুটেরা মহল প্রতি মাসে চাঁদা আদায় করছে শত শত কোটি টাকা; অথচ সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ অর্থ দিয়ে বারবার উচ্ছেদ হওয়া হকারদের পুনর্বাসন সম্ভব; অন্যদিকে এই অর্থ যোগ হতে পারে জাতীয় অর্থনীতিতে। সরকারের আশু নজর কাম্য।
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)