কমতে শুরু করেছে পানি, এখনও বিচ্ছিন্ন অনেক এলাকা
-খাবার আর পানির জন্য হাহাকার
, ১৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১০ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দেশের খবর
দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উজানের নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে। এর ফলে বন্যাদুর্গত এলাকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হতে শুরু হয়েছে এবং তা অব্যাহত আছে। গতকাল ইয়াওমুস সাবত (শনিবার) এ তথ্য জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
প্রবল বৃষ্টিপাত এবং ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজানের নেমে আসা ঢলে দেশের অন্তত ১১ জেলার অর্ধকোটিরও বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী এলাকা। সেখানে এখন পানি নামতে শুরু করলেও এখনও তিন উপজেলা সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
ইতোমধ্যে মোবাইল নেটওয়ার্ক ফিরে আসায় অনেকেই তাদের আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন। অনেকে স্বশরীরে আত্মীয়দের খোঁজ দুর্গত এলাকায় এসেছেন।
এদিকে ফেনী সদর উপজেলায় পানি নামতে শুরু করলেও সেখানকার মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে বলে তিনি জানান।
এছাড়া ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।
বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এবং শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় ওই তিন জেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য জানা যাচ্ছে না।
এসব এলাকায় দুর্গতদের সাহায্যে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন, সেনা ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা। সেইসাথে স্বেচ্ছাসেবকদের একটি অংশ ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করছে।
কুমিল্লার কিছু এলাকায় পানি কমছে, কিছু এলাকায় উন্নতি:
তবে কুমিল্লায় অধিকাংশ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এ জেলায় প্রায় ১২ লাখ মানুষ। অন্যদিকে, নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কিছু এলাকায় পানি কমে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে, সেখানে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সঙ্কট।
বুড়িচং উপজেলায় আকস্মিক বন্যায় আক্রান্ত এলাকার অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেননি। তাদের অনেকে অবস্থান নিয়েছেন বাড়ির ছাদে। অনেকে গলাসমান পানি ডিঙিয়ে বাড়িতেই রয়ে গেছেন।
শিকারপুর গ্রামের নাজমুল হাসান বলেন, আমার বাবা ও ভাই তিনদিন ধরে একটি বাড়ির ছাদে অবস্থান নিয়েছেন। ভাই লিটন এক লিটার পানি নিয়ে ছাদে উঠতে পেরেছেন। সেখানে খাবার ও খাবার পানি কিছুই অবশিষ্ট নেই। সর্বশেষ আজ সকালে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। এখন কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। তাদের মতো ওই গ্রামের আরও ৪০০-৫০০ মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন:
গত মঙ্গলবার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বন্যা শুরু হয়। শনিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার কালন্দি খাল, জার্জি খাল ও হাওড়া নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি সরে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষতের চিহ্ন। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এখনও বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার আখাউড়ায় বন্যা দেখা দেয়। এতে উপজেলার বঙ্গেরচর, কালিকাপুর, আব্দুল্লাপুর, বাউতলা, সাহেবনগর, অমরপুর, আইড়ল ও খলাপাড়াসহ ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার বন্যার পানি বেড়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। পরবর্তীতে পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা পানির বেগ কমায় এবং বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে থাকে। শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়। ফলে বেশিরভাগ বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যায়। তবে কয়েকটি বাড়িঘরে কেউ কেউ পানিবন্দি আছেন। আড়িয়ল ইউনিয়ন ও খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর দুটি বাঁধসহ অন্তত আট স্থানে সড়ক ধসে পড়েছে। এতে করে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ আছে। এসব এলাকার পানি ধীরগতিতে নামছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজালা পারভিন বলেন, ‘উপজেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। চারটি আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ১৪ কিলোমিটার সড়ক ও ১০টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হু হু করে বাড়ছে পানি, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ। সেখানে বৃষ্টি না হলেও বাড়ছে পানি। পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী জেলার বন্যার পানি রহমতখালী খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরের লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ছে। এতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করছে স্থানীয় লোকজন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, বসতঘরের সামনে হাঁটু পানি। ঘরে এখনও ঢুকেনি। তবে যেভাবে পানির উচ্চতা বাড়ছে, যে কোনো সময় ঘরে পানি ঢুকতে পারে। বাড়ির আশপাশে সাপের উপদ্রব্য বেড়েছে। শিশু সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে আছি।
তারা আরও জানায়, তাদের আশপাশের অনেক বসতঘরে পানি উঠে গেছে। তারা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। রান্নার চুলো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় খাবারের যোগান দিতে পারছেন না তারা। সব মিলিয়ে মানবেতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৯ দিনেও মুক্তি মেলেনি অপহৃত ৪ জেলের
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অফিস করেন না ৮১ মাস, নিচ্ছেন নিয়মিত বেতন ভাতা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
১৬ হাজার টাকার জন্য খুন হলেন মুদি দোকানি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কুকুরের কামড়ে আহত শিশুসহ ৩২ জন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ডেইলি স্টারের সামনে কর্মসূচি, বিপুল পুলিশ মোতায়েন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা বাদী গ্রেফতার
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পাসপোর্ট কর্মকর্তার ‘বহুরূপী’ পাসপোর্ট
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, প্রতিহত করতে হবে -উপদেষ্টা আদিলুর
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, প্রতিহত করতে হবে -উপদেষ্টা আদিলুর
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ চায় না জাতীয় পার্টি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)