একমাত্র হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণে ‘খিলাফত’ ব্যবস্থা জারী করার মাধ্যমেই এদেশবাসী প্রকৃত সুখ-শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে (২)
, ১১ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
{পূর্বপ্রকাশিতের পর}
উল্লেখ্য যে, এদেশবাসী জান-মাল সমস্ত কিছু কুরবান করে দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে অত্যাচারী-যালিম বৃটিশদেরকে বিতাড়িত করার সুমহান কাজে অংশ গ্রহণ করেছে এবং তাদেরকে বিতাড়িত করেছে। তারপর ভারতের যুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় অংশগ্রহণ করেছে এবং তা প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু এদেশবাসী যুলুম-নির্যাতনের যাতাকল থেকে মুক্তি পায়নি। ফলে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু বিনিময়ে এদেশবাসী কি পেয়েছে? বৃটিশদের যুলুম-নির্যাতনের অবর্তমানে ভারতের যুলুম-নির্যাতন, ভারতের যুলুম-নির্যাতনের অবর্তমানে পাকিস্তানের যুলুম-নির্যাতন, পাকিস্তানের যুলুম-নির্যাতনের অবর্তমানে গণতান্ত্রিক যালিম শাসকদের যুলুম-নির্যাতন। শুধু একের পর এক শাসকের পরিবর্তন হয়েছে এবং যুলুম-নির্যাতনের ধরণ পরিবর্তন হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। এদেশবাসী কখনও তাদের কাঙ্খিত ইনছাফ বা সুশাসন পায়নি; বরং একের পর এক যুলুম-নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষিত হয়েছে এবং হচ্ছে। আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ এদেশবাসী অনেক বড় একটা ভুল করেছে। আর তা হচ্ছে- তারা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশিত শাসনব্যবস্থা ‘খিলাফত’ বাদ দিয়ে কাফিরদের প্রবর্তিত শাসন ব্যবস্থা গণতন্ত্রকে আঁকড়িয়ে ধরেছে। অথচ গণতেন্ত্রর অপর নাম হচ্ছে যুলুমতন্ত্র। তারা যতদিন পর্যন্ত এই যুলুমতন্ত্রকে আঁকড়িয়ে ধরে রাখবে, ততদিন পর্যন্ত যুলুম-নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষিত হতেই থাকবে। তাই দেশবাসী সকলের উচিত গণতন্ত্র নামক যুলুমতন্ত্র বাদ দিয়ে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার জন্য কোশেশ করা। তবেই তারা প্রকৃত শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে এবং দুনিয়াতে থেকেই জান্নাতী অমীয় সুখ-শান্তি লাভ করতে পারবে।
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আস সাফফাহ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যদি এই দেশে ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাহলে সোনার বাংলাকে স্বর্ণ দ্বারা পরিপূর্ণ করে দেয়া সম্ভব। ” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “এই দেশে কোনো কিছুর অভাব নেই। অভাব হচ্ছে শুধু ইনছাফগার শাসকের। বাংলাদেশে যেই সম্পদ রয়েছে তার যথাযথ ব্যবহার করলে, বাংলাদেশের মানুষ টাকার উপর গড়াগড়ি করতে পারবে, টাকার উপর ঘুমাতে পারবে এবং তাদের কোন প্রকার অভাব অনটন থাকবে না। ” সুবহানাল্লাহ!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- তাহলে এই খিলাফত কিভাবে আসবে? এর জবাব স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই দিয়ে দিয়েছেন-
وَعَدَ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى الْاَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি মুবারক দিচ্ছেন যে, যাঁরা ঈমান আনবেন এবং আমলে ছলেহ্ করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে অবশ্যই অবশ্যই দুনিয়ার খিলাফত মুবারক হাদিয়া করবেন, যেমন তিনি পূর্ববর্তী উনাদেরকে খিলাফত মুবারক হাদিয়া করেছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৫)
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি বান্দাদেরকে খিলাফত দিবেন। তবে শর্ত হচ্ছে ২টি- (১) ঈমান আনতে এবং (২) আমলে ছালেহ করতে হবে।
এখানে ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে- মু’মিন হতে হবে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পরিপূর্ণ বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ ও হুসনে যন পোষণ করতে হবে।
আর আমলে ছালেহ উনার অর্থ হচ্ছে- মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ করতে হবে এবং সমস্ত প্রকার হারাম-নাজায়িয ও কুফরী-শিরকী কাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
সহজে বুঝার জন্য- যিনি সম্মানিত খলীফা হবেন, উনি তো অবশ্যই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম হবেন। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত খলীফা উনার সাথে যারা খিলাফত পরিচালনার বিভিন্ন দায়িত্বে থাকবেন, উনাদেরকে হতে হবে হাক্বীক্বী ঈমানদ্বার ও ইনছাফগার। ইলমে তাছাউফের পরিভাষায় উনাদের সুলত্বানুল আযকার যিকির জারী থাকতে হবে। আর যারা সাধারণ জনগণ, তাদের ঈমান-আমল শুদ্ধ থাকতে হবে। অর্থাৎ অধিকাংশ জনগণকে এরূপ হতে হবে যে, বর্তমানে তারা যেই সমস্ত হারাম-নাজায়িয ও কুফরী-শিরকী কাজে নিমজ্জিত, খিলাফত জারী হলে তারা এই সমস্ত হারাম-নাজায়িয ও কুফরী-শিরকী কাজ ছেড়ে দিবে এবং এই সমস্ত হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ জারী করা হলে কোনো প্রকার বিরোধিতা করবে না। তখনই এদেশবাসী খিলাফত লাভ করতে পারবে এবং প্রকৃত শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি এদেশবাসী সবাইকে ক্ববূল করুন। আমীন!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
এক নজরে উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বুলন্দী শান মুবারক প্রকাশ: ‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (১)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১১)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
একমাত্র হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণে ‘খিলাফত’ ব্যবস্থা জারী করার মাধ্যমেই এদেশবাসী প্রকৃত সুখ-শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী ক্বিবলা মুবারক
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কাফির মুশরিকদের বিরুদ্ধে যখন আমি বদদো‘আ করি, প্রতিদিন আমি দেখতে পাই যে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তো আছেনই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও খুব খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। উনারা বলেন যে, ‘এদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের জন্য আরো দো‘আ করা হোক’
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (২)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৯)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (৪)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (১)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৮)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)