উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক
, ১৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১৮ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৪ বছর পর ৫ই ছফর শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ সম্মানিত কুরাইশ বংশে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত পিতা- সাইয়্যিদুনা হযরত যাম‘আহ্ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে মহাসম্মানিত ৯ম পুরুষ হয়ে ১০ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত মাতা- সাইয়্যিদাতুনা হযরত শুমূস আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার বনী নাজ্জার বংশের এবং তিনি ছিলেন জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার আপন মামাতো বোন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম এবং পরিবার-পরিজন উনাদের সাথে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফেই অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুরুর দিকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি প্রথমে হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। তারপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত সুহাইল ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত ভাই হযরত সাকরান ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট ছিলেন।
فَرَاَتْ فِـى الْمَنَامِ كَاَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَقْبَلَ يَـمْشِىْ حَتّٰـى وَطِئَ عَلـٰى عُنُقِهَا فَاَخْبَرَتْ زَوْجَهَا بِذٰلِكَ فَقَالَ لَئِنْ صَدَقَتْ رُؤْيَاكِ لَاَمُوْتَنَّ وَلَيَتَزَوَّجَنَّكِ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি একবার সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক-এ দেখেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হেটে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করে উনার সম্মানিত কাঁধ মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পা মুবারক) কোমলভাবে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার সম্মানিত আহাল উনার নিকট ব্যক্ত করলেন। তখন তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! আপনি যদি সত্যিই এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আমি সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করবো এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অন্য রাতে আরো একখানা সম্মানিত বরকতময় স্বপ্ন মুবারক দেখেন যে, তিনি হেলান দিয়ে বসে আছেন, এমন সময় আকাশের চাঁদখানা ছুটে এসে উনার উপর পড়লেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি উনার এই সম্মানিত বরকতময় স্বপ্ন মুবারকখানা উনার সম্মানিত আহাল উনাকে অবহিত করলেন। উনার সম্মানিত আহাল তিনি বললেন, যদি সত্যিই আপনি এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক দেখে থাকেন, তাহলে আমি অতিশীঘ্রই সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করবো এবং আমার পর আপনি অপর একজন অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হবেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এই দিন থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কিছু দিন পর সম্মানিত বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের (৯ দিন) পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের ৯ দিন পর অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত এবং রিসালাত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৬শে রমাদ্বান শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৯ বছর ৬ মাস ১৪ দিন আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৫ বছর ৭ মাস ২১ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি মোট ১৩ বছর ৫ মাস ১৬ দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন । সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৪ বছর ২৫ দিন এককভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর তিনিই সর্বাধিক সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত সংসার মুবারক উনার যাবতীয় কার্যক্রম মুবারক অত্যন্ত সুনিপুন এবং অতি উত্তমভাবে পরিচালনা মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নুরুছ ছালিছাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আন নুরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার নিকট থেকে বেমেছাল সম্মানিত মুহব্বত মুবারক, আদর-যত্ম, ¯েœহ-মমতা মুবারক লাভ করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি দায়িমীভাবে এই বিষয়টিই ফিকির করতেন যে, কিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবসময় হাসি-খুশি মুবারক-এ রাখা যায়। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত সফর মুবারক করার ইচ্ছা মুবারক করতেন, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে সম্মানিত লটারী মুবারক করতেন। সম্মানিত লটারী মুবারক উনার মাধ্যমে যিনি নির্ধারিত হতেন, উনাকে তিনি সম্মানিত সফর মুবারক-এ সাথে নিতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে দিন-রাত মুবারক ভাগ করে দিয়েছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে ব্যতীত। কারণ
وَهَبَتْ يَوْمَهَا وَلَيْلَتَهَا لِاُمِّ الْمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ تَبْتَغِـىْ بِذٰلِكَ رِضَا رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “তিনি উনার সম্মানিত দিন-রাত মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী ৭/২৯৬, মুস্তাখরজে আবী ‘আওয়ানাহ ৫/২০৭, আল মুন্তাক্বা ১/২৯৬ ইত্যাদি)
উপরোক্ত বর্ণনা থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে কতটুকু ফানা এবং বাক্বা ছিলেন, সেই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,
مَا مِنَ النَّاسِ اَحَدٌ اَحَبُّ اِلَـىَّ اَنْ اَكُوْنَ فِـىْ مِسْلَاخِهَا مِنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْـنَ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلثَّانِيَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ سَوْدَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ)
অর্থ: “সমস্ত মানুষের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়। তিনি ব্যতীত অন্য কারো ক্ষেত্রে আমার এ আকাঙ্খা জাগেনি যে, উনার দেহে যদি আমার প্রাণ হতো। সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী ৪/৩৮০)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, একবার হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি দিরহামপূর্ণ একটি থলি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হাদিয়া পাঠান। তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, এতে কি আছে? সকলে বললো, দিরহাম। তিনি বললেন, খেজুরের থলির মতো থলিতে! এ কথা মুবারক বলে তখনই তিনি দিরহামগুলো বণ্টন করে দেন। সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ ৭/৭২১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। কেননা, তিনি যা করেছেন এবং উম্মতদেরকে যা করতে সম্মানিত আদেশ মুবারক করেছেন, প্রত্যেকটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ীই করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র ৫ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছেন।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত সাকরান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট থাকা অবস্থায় ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু’ নাম মুবারক-এ উনার একজন সম্মানিত আওলাদ তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পারস্যের জালূলার জিহাদে সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! কেউ কেউ উনার আওলাদ গণের সংখ্যা ৫ থেকে ৬ জনও বলেছেন। তবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার কোনো মহাসম্মানিত আওলাদ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে ২২ হিজরী শরীফ উনার ২৯শে যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৭০ বছর ১০ মাস ২৪ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক পড়ান সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনিসহ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের একমাত্র হাক্বীক্বী পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হচ্ছেন- উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই কেউ যদি উনাদের হাক্বীক্বী মুহাব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, তাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক জানার, উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানার, বুঝার, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার এবং সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করার অর্থাৎ উনার সম্মানার্থে দায়িমীভাবে অনন্তকালব্যাপী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (২)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
“মানুষের পেট কবরের মাটি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা পূর্ণ হবে না”
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পুরুষদের ন্যায় মহিলাদেরও দ্বীনী তা’লীম গ্রহণ করা ফরযে আইন
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের তৃতীয় মাসে যে বিষয়গুলো লক্ষণীয়
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জমিনে ফিতনা-ফাসাদের বড় একটা কারণ বেপর্দা-বেহায়া নারী
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)