ইয়াওমুল ফীল বা হস্তিবাহিনী ধ্বংসের দিবস এবং সংশ্লিষ্ট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘটনা মুবারকসমূহ
, ২২ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট গোপন সূত্রে সংবাদ প্রেরণ এবং সংবাদ শুনার পর মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক করা:
কাট্টা যালিম আবরাহা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার কাছাকাছি পৌঁছলে এক ব্যক্তি গোপন সূত্রে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট চিরকুটের মাধ্যমে কাট্টা যালিম আবরাহা এবং তার সৈন্য-সামন্ত সম্পর্কিত তথ্য পেশ করে। চিরকুটখানা নিন্মরূপ-
الى سيدنا حضرت عبد المطلب بن هاشم عليه السلام سيد قريش ان ابرهة قادم اليكم بجيش جراد ومعه الفيل لهدم الكعبة
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরাইশ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদ উনার প্রতি- ‘নিশ্চয়ই কাট্টা যালিম আবরাহা পঙ্গপালের ন্যায় অসংখ্য সৈন্য-সামন্ত নিয়ে আপনাদের দিকে অগ্রসর হয়ে আসছে। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ ধ্বংস করার জন্য তার সাথে হাতি রয়েছে’।”
চিরকুটের মাধ্যমে এই গোপন সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহপবিত্র দরবার শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক করেন- يا رب الكعبة احفظ بيتك“আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনাকে হিফাযত করুন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক এবং বেমেছাল মহাসম্মানিত ও সমহাপবিত্র তাওয়াক্কুল মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক:
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফিরে এসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরাইশ উনাদেরকে কাট্টা যালিম যালিম আবরাহা এবং তার সৈন্য-সামন্ত সম্পর্কে অবহিত করেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক সংরক্ষণ করার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক করেন। এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরাইশদের নিকট ফিরে এসে তাদেরকে সমস্ত সংবাদ জানালেন এবং তাদেরকে সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে বেরিয়ে পার্শ্ববর্তী পাহাড় পর্বতের গোপন গুহাগুলোতে আশ্রয় নিয়ে আবরাহার সৈন্যদের সম্ভাব্য নির্যাতন থেকে আতœরক্ষা করার জন্য। এরপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে কুরাইশদের একদল লোককে সাথে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দরজা মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চৌকাঠ মুবারক আঁকড়ে ধরে দাঁড়ালেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আবরাহা ও তার সৈন্য সামন্তের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে উনার সাহায্য কামনা করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক করতে লাগলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চৌকাঠ মুবারক ধরে বলতে লাগলেন,
لَا هُمّ إنّ الْعَبْدَ يَمْ ... نَعُ رَحْلَهُ فَامْنَعْ حَلَالَك
لَا يَغْلِبَن صَلِيبَهُمْ ... وَمِحَالُهُمْ غَدْوًا مَحَالُك
إنْ كنت تاركهم و ... قبلتنا فَأَمْرٌ مَا بَدَا لَكْ
“আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! একজন বান্দাও তার দলবলকে রক্ষা করে থাকে। অতএব আপনি আপনার অনুগত লোকদেরকে রক্ষা করুন। ওদের নিকৃষ্ট ক্রুশ এবং শক্তি যেন আপনার শক্তির উপর বিজয়ী না হয়। আমাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলা মুবারক উনাকে আপনি যদি ওদের উপর ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার যা খুশি করুন!” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে হিশাম)
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন,
طُوْفُوْا بِالْبَيْتِ وَادْعُوْا رَبَّه اَن يَّقْسِمَ ابرهةَ كَمَا قَسَمَ الْـجَبَابِرَةَ
অর্থ: “আপনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ মুবারক করুন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু‘আ করুন যেনো মহান আল্লাহ পাক তিনি আবরাহাকে তদ্রুপ ধ্বংস করে দেন, যেমন তিনি পূর্বে চরম যালিম জাতিদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক। সুবহানাল্লাহ! من يَّتَجَرَّم اليه يَقْسِمه الله ‘যারা (মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনার ইহানত করার মাধ্যমে) মহান আল্লাহ পাক উনাকে অভিযুক্ত করতে চায়, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ধ্বংস করে দেন’।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবচেয়ে বড় হাতিটি সিজদাহ্ করেছিলো:
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহা তার বার্তা বাহক হিসেবে হুনাত্বাহ্ নামক এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করে- যেন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আলোচনা করে নিশ্চিত হয় যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার অধিবাসী উনারা কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহার সাথে যুদ্ধ করতে চান কি না? যদি উনারা যুদ্ধ করতে না চান, তাহলে উনাদের যিনি সাইয়্যিদ উনাকে যেন তা’যীম-তাকরীম এবং সম্মানের সাথে কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহার নিকট নিয়ে আসা হয়। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আলোচনা করে হুনাত্বাহ্ নামক ঐ বার্তা বাহক যখন নিশ্চিত হলো যে, উনারা যুদ্ধ করতে চান না, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদ্দেশ্য করে হুনাত্বাহ নামক ঐ ব্যক্তি বললো, দয়া করে আপনি আমার সাথে কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহার কাছে চলুন। কারণ সে আমাকে আদেশ করেছে যে, আমি যেনো আপনাকে তার কছে নিয়ে যাই। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য রওয়ানা মুবারক হলেন। পথে একখানা বিশেষ ঘটনা মুবারক সংঘটিত হন। কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
أَنَّ سيدنا حضرت عَبْدَ الْـمُطَّلِبِ عليه السلام لَـمَّا دَخَلَ عَلٰى اَبْرَهَةَ سَجَدَ لَه فِيْل من الفيلة
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবরাহার নিকট গেলেন, তখন হাতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হাতিটি উনাকে সিজদা করলো।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
কিতাবে বর্ণিত আরো রয়েছেন,
فَلَمَّا نظر الْفِيل إِلَى وَجه سيدنا حضرت عبد الْمطلب عليه السلام بَرَكَ كَمَا يَبْرُكُ الْبَعِيْرُ وَخَرَّ سَاجِدًا
অর্থ: “যখন হাতিটি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখলো, তখন সে উটের ন্যায় হাঁটু গেড়ে বসলো এবং উনার সম্মানার্থে সেজাদয় লুটিয়ে পড়লো।” সুবহানাল্লাহ! (সিমতুন নুজূম)
কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহাকে পর্যবেক্ষণ করা এবং তার ধ্বংসের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক করা:
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, “তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহপবিত্র দরজা মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চৌকাঠ মুবারক ছেড়ে দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরাইশ উনাদেরকে নিয়ে পহাড়ের চূড়ায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। অতঃপর উনারা সেখানে অবস্থান মুবারক করে দূর থেকে দেখতেছিলেন যে, কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ প্রবেশের পর কি করে।” (আস সীরাতুন নাবাবিয়্যাহ লি ইবনে হিশাম ১/১৭১)
তারপর তিনি বার বার এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক করতে থাকেন-
اَللّٰهُمَّ اقْسِمْ اَبْرَهَةَ كَمَا قَسَمْتَ الْـجَبَابِرَةَ قَبْلَه، اَللّٰهُمَّ اقْسِمْ اَبْرَهَةَ كَمَا قَسَمْتَ الْـجَبَابِرَةَ قَبْلَه، اَللّٰهُمَّ اقْسِمْ اَبْرَهَةَ كَمَا قَسَمْتَ الْـجَبَابِرَةَ قَبْلَه
অর্থ: “আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি ধ্বংস করে দিন কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহাকে, যেমন তার পূর্বে অনেক যালিম জাতিদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি ধ্বংস করে দিন কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহাকে, যেমন তার পূর্বে অনেক যালিম জাতিদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি ধ্বংস করে দিন কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহাকে, যেমন তার পূর্বে অনেক যালিম জাতিদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক:
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “কাট্টা যালিম আবরাহা যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ আসলো, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সোপর্দ করে দিয়ে কাট্টা যালিম আবরাহার ধ্বংসের জন্য বদদোয়া মুবারক করেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার সম্মানিত অধিবাসী উনাদেরকে পাহাড়ে আরহণ করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেও পাহাড়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য বলেন। কিন্তু সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাহাড়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিতে অসম্মতি মুবারক প্রকাশ করেন এবং তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার মধ্যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক করেন। তিনি সেখানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক করেই কাট্টা যালিম আবরাহার ধ্বংসের জন্য বদ দু‘আ মুবারক করেন। আর তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ইরশাদ মুবারক করেন যে, কাট্টা যালিম আবরাহা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, বরং সে নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ!
কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহা এবং তার সৈন্য বাহিনীকে ধ্বংস করার জন্য ঝাঁকেঝাঁকে পাখি প্রেরণ:
খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কাট্টা যালিম নাক কাটা আবরাহা এবং তার সৈন্য বাহিনীকে ধ্বংস করার জন্য ঝাঁকেঝাঁকে পাখি প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
فأرسل الله تعالى عليهم طيرا من البحر
“অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি সমুদ্রের দিক থেকে ঝাঁকেঝাঁকে পাখী পাঠালেন।” সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুন নাবাবিয়্যাহ্ লি ইবনে হিশাম ১/১৭২)
তাদের মাথা ছিলো হিংস্র জন্তুর মত, ঠোট ছিলো হাতির শুঁড়ের মত আর নখগুলি ছিলো কুকুরের মত। প্রত্যেকটি পাখি তিনটি কঙ্করময় প্রস্তর বহন করে এনেছিলো। একটি ঠোঁটে, দু’টি দুই পায়ে। পাখিগুলো এসে আবরাহা ও তার বাহিনীর উপরে সেই কঙ্করগুলি নিক্ষেপ করতে লাগলো। এর ফলে তৎক্ষনাত কিছু ধ্বংস হয়ে গেলো। কিছু আহত অবস্থায় পলায়ন করার পথে ধ্বংস হলো। কঙ্করগুলি উপর দিক থেকে পড়ে নিচ দিয়ে বের হয়ে মাটিতে অদৃশ্য হয়ে যেত। যার কারণে আবরাহার সৈন্য বাহিনী, হস্তিবাহিনী ভক্ষিত তৃণের ন্যায় হয়ে গেলো। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরাঈশগণ উনারা দূর থেকে এই ঘটনা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করলেন। আর কঙ্করগুলি ছিলো ডাল অপেক্ষা বড় ও ছোলা বুট থেকে ছোট। আবরাহা ইয়েমেন পর্যন্ত পৌঁছলো। তার উপর দিয়ে পাখিগুলি উড়তে থাকলো। সেখানে পৌঁছার পরে পাখির কঙ্কর নিক্ষেপের কারণে সেও ভক্ষিত তৃণের ন্যায় হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ! আর নাক কাটা যালিম আবরাহার মন্ত্রী ইয়াকছুম পালিয়ে আবিসিনিয়ায় রাজার কাছে এই সংবাদ পৌঁছায়। তার উপর দিয়েও একটি পাখি উড়ছিলো। সে সংবাদ পৌঁছানোর পর পাখিটি কঙ্কর নিক্ষেপ করায় সেও ভক্ষিত তৃণের ন্যায় হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৮)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (২০)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৭)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৯)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)