ইসলামের মাসয়ালা সাবেত করা বিচারকের কাজ নয়।
আদালতে অ্যামিকাস কিউরি বলতে একটা অভিধা আছে। উচ্চ আদালতের উচিত পূর্ন হিজাব পালনের রায়ের ক্ষেত্রে হক্কানী রব্বানী আলেমদের স্মারনাপন্ন হওয়া। পরিক্ষার ক্ষেত্রে খ্রীষ্টান, হিন্দুদের পূর্ন ধর্মীয় অধিকার দেয়া হলেও মুসলিমদের পূর্ন অধিকার না দিলে তা হবে চরম বৈষম্য, দ্বীনি অধিকার ক্ষুন্ন ও সংবিধান লংঘনের শামিল। রাষ্ট্রদ্বীন ইসলামের এবং ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের এ দেশে তা কখনও বরদাশত যোগ্য হতে পারেনা।
, ১৬ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সম্পাদকীয়

পবিত্র ইসলাম শান্তির দ্বীন। তারপরেও ইসলামের উপরই শুধু আঘাত আর আঘাত। সংবিধানে বিধিবদ্ধ রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম। তা সত্ত্বেও ইসলামের উপরই রাষ্ট্রের অযাচিত বিধিনিষেধ। এমনকি ভয়ানক বৈষম্যও। অথচ এজন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। ইনশাআল্লাহ ইনসাফের জজবায় তেজোদ্বীপ্ত হয়েই আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম।
অথচ সেই স্বাধীনতার সুফল থেকে আজ ৯৮ ভাগ মুসলমান বঞ্চিত। খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের মাঝে সেভেন্থ ডে এডভেন্টিষ্ট নামে একটি সম্প্রদায় আছে। তাদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী শনিবার পড়াশোনা, লেখালেখি করা নিষেধ। সরকার যে তাদের এ ধর্মীয় বিধির প্রতি সম্মান দেখিয়েছে শুধু তাই নয় সরকার খ্রীষ্টান ধর্মের এ বিধানের প্রতি সম্মানবোধ আরো সম্প্রসারিতও করেছে। আগে তাদেরকে বোর্ডে নিয়ে পরীক্ষা দিতে হতো। কিন্তু এখন সরকার প্রতি জেলায় জেলায় খ্রীষ্টানদের এ সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা বিশেষ ব্যবস্থা করেছে। তাদের আলাদা থাকা-খাওয়ার আয়োজন করে শনিবার দিবাগত রাতে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেয়া হয়।
বিগত বৎসরে ২০২২ সালে ১লা ফেব্রুয়ারী কুষ্টিয়ায় এ ধরনের পরীক্ষা হয়েছিল। এক্ষেত্রে কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র প্রশ্ন তুলেনি শুধুমাত্র ১ জন খ্রীষ্টান ছাত্রের জন্য ১৩ জন শিক্ষক- কর্মচারী আলাদা কষ্ট করবেন কেন? শুধুমাত্র ১ জন খ্রীষ্টান শিক্ষার্থীর জন্য এত আলাদা সময়, অর্থ ব্যায় করা হবে কেন? শুধু মাত্র ১ জন খ্রীষ্টান ছাত্রের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেয়া হবে কেনো? আলাদা প্রক্রিয়া চালানো হবে কেনো? কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র তা করেছে। এতে করে যা প্রতিভাত হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ঐ খ্রীষ্টান শিক্ষার্থীর ধর্মবিশ্বাস তা যৌক্তিক অথবা অযৌক্তিক তা আমলে নেয়নি। তার ধর্মীয় বিশ্বাসের পালনের পরিবেশ নিমিতে করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্র তার জন্য বেশি লোকবল নিয়োগে, বেশি অর্থ ব্যয়ে, বেশি সময় দিয়ে, বেশি ব্যবস্থা গ্রহণে কোন কার্পন্য করেনি। খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মবিশ্বাস অনুভবে ব্যক্তিকে উপহাস করেনি।
খ্রীষ্টান ধর্মবিশ্বাস প্রতিফলনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা করতে কার্পন্য করেনি। অথচ এরা মোট জনসংখ্যার .০০০১%ও নয়।
গত ২০২২ সালের ২২ শে সেপ্টেম্বর নরসিংদীতে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরীক্ষার্থীদের শাঁখা-সিঁদুর পরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ২ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার বিপরীতে দেশের জনসংখ্যার ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের ক্ষেত্রে আমরা কি দেখি?
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বরে বাংলা বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষা চলাকালীন কানসহ মুখমন্ডল খোলা রাখার প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। ভিসি তাদের পক্ষে কথা দিয়েছিলেন এবং ঢাবি উপাচার্য সত্যিই অভিভাবকত্বের দায়িত্ববোধ দেখাবেন-এমন প্রত্যাশা থাকলেও তা হয়নি। এমনটা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা নিশ্চিন্ত হয়ে ক্লাসরুমেও ফিরে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা ঘনিয়ে ছাত্রীরা দেখতে পান তাদের সেই বিশ্বাস ও ভরসা ভেঙে খানখান হয়ে গেছে। বাংলা বিভাগ তার পূর্বের সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছে এরপর ছাত্রীরা এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।
উল্লেখ্য, পরীক্ষার্থী ও পরিচয় শনাক্তের সুবিধার্থে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন চলাকালে শিক্ষার্থীরা কান-মুখ খোলা রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দেওয়া বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছেন। বোরকা বা হিজাব পরা সাংবিধানিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি দেশের ১৫ টি জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বোরকা পরায় হেনস্তার শিকার হওয়ার ঘটনাও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু গত ২৯ মে হাইকোর্টেও এই আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে এখন একজন নারী শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশনের সময় পরিচয় নিশ্চিত করতে মুখ ও কান খোলা রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি মন্তব্য করেছে যে শিক্ষকরা পিতৃতুল্য। অথচ ইদানিং ঢাবি সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়নানি, হেনস্তার বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় আপন পিতার দ্বারা কন্যা ধর্ষনের বিচারও উচ্চ আদালতেই বর্তমানে বিচারাধীন আছে। আর কাউকে পিতৃতুল্য বলা হলেই তার প্রতি কুরআন সুন্নাহর বর্ণিত পিতার হুকুম বর্তানো যায়না।
তবে আপিল বিভাগ পাশাপাশি আরো বলেন হাইকোর্টে আগামী ২ মাসের মধ্যে ইতোপূর্বে করা রুলটির নিস্পত্তি করতে হবে।
উল্লেখ্য বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনায় অ্যামিক্যাস কিউরি বা আদালতের বন্ধু বলে একটা বিশেষ অভিধা আছে।
বলা হয়েছে, আদালত যদি কোন বিষয় না বোঝে অথবা আরো বোঝার বা জানার থাকলে, বিব্রত হলে কিংবা প্রয়োজন মনে করলে যে কোন বিষয়ের বিশেষজ্ঞের মতামত নিতে পারে। এই বিশেষজ্ঞদের তখন আদালতের বন্ধু বলা হয়। এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই বিশেষজ্ঞ কারা? কারা “অ্যামিকাস কিউরি” হতে পারেন? আসলে এর কোন সুনির্দিষ্ট বাধ্যবাধকতা নেই তবে, যারা যেই বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত, তাদের সেই বিষয়ে জানতে আদালত ডাকতে পারে। যেমন দাঁতের সমস্যায় নিয়ে কোন বিষয়ে বুঝতে আদালতের (জজ সাহেবের) সমস্যা হল তখন তিনি একজন প্রখ্যাত দাঁতের ডাক্তার কে তাকে বিষয়টি বোঝানোর জন্য এমন সাহায্য করার জন্য ডাকতে পারেন।
এক্ষেত্রে দ্বীন ইসলামের বিষয়ে শরিয়তের হুকুম বা হক্কানী রব্বানী আলেমগনের অভিমত নেয়া শুধু অনেক বেশী প্রাসঙ্গিক এবং এর বরং ততধিক প্রয়োজনীয় ও অনিবার্য।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি পবিত্র দ্বীন ইসলামের বিধান কী তা নির্ণয়ে বিচারকরা যদি বিরত থাকেন তবেই তা শোভনীয় ও সঠিক হয়। কারন বিচারকের কাজ দ্বীন ইসলামের মাসয়ালা দেয়া নয়। বিচারকের দায়িত্ব সংবিধান অনুযায়ী দ্বীন ইসলামের অধিকার সাব্যস্ত করা। প্রসঙ্গত আমরা মনে করি পর্দা বিষয়ে রুল নিস্পত্তিতে হাইকোর্ট উপরোক্ত বিষয়গুলো আমলে নিবেন। এবং সাংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম স্বীকৃত এই দেশে তথা ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের এই দেশে মুসলিম ধর্মপ্রান শিক্ষার্থীদের হাত, মুখ, কানের পর্দা করার অধিকার দিতে সম্যক সম্মত হবেন ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বর্তমান সরকারের অরাজকতায় মধ্যবিত্তরাও এখন পুষ্টি সঙ্কটে ভুগছে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতমূখী প্রবণতার অভাবই এর মূল কারণ কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় খোদায়ী রহমতে সব কিছুতে সচ্ছলতা হাছিল সম্ভব। ইনশাআল্লাহ!
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের ভয়ঙ্কর ড্রাগ আতঙ্কে সারাদেশ একান্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতা এবং জনগণের সচেতনতা দরকার
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ভাষা আন্দোলনের সাত দশক এবং স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। উর্দূকে বাদ দিয়ে হিন্দি বা ইংরেজির প্রাধান্য ভাষা দিবসের চেতনা নয়। পাশাপাশি বাংলা ভাষা চর্চা মানে বিজাতীয় ও বিধর্মীয় সংস্কৃতির অনুকরণ ও অনুশীলন নয়। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আঙ্গিকে ভাষা দিবস পালন করলেই ভাষা আন্দোলন সার্থক হবে।
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নগরের সুবিধা বিকেন্দ্রীকরণ করতে পারলেই কেবল নগরমুখী জনস্রোত ঠেকানো যাবে
২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জনসংখ্যা বোঝা নয় বরং জনসম্পদ জনশক্তিকে আরও দক্ষ করতে হবে।
২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুদ ব্যয়ের কারণে আকার বাড়লেও সুফল নেই বাজেটের। সরকারের উচিত, ঋণের ধারা থেকে সরে এসে আভ্যন্তরীণ আয়ের দিকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেটকে গণমুখী করা।
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দুরাবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা অন্যসব সরকারের মত বর্তমান উপদেষ্টারাও গুরুত্ব দিচ্ছে না
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হিমাগারের ভাড়া বাড়ায় আলু এখন ‘গলার কাঁটা’ আসন্ন জুলাই-নভেম্বরে আলুর দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে বিপর্যয় ঠেকাতে এখনই ব্যবস্থা নিন
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র রমাদ্বান শরীফে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে- অন্তর্বর্তী সরকারের এ প্রতিশ্রুতি যেনো পতিত জালিম সরকারের মত কথার ফুল ঝুড়িতেই পর্যবসিত না হয়
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আজ মহিমান্বিত পবিত্র ১৭ই শা’বান শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)