ইসলামী ঐতিহ্যের দেশ মালি
, ৩০ জুন, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) তাজা খবর
‘মালি’ নামক রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা করেন সুনদিয়াতা নামক এক মুসলিম ব্যক্তি, তার ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে কিছু জানা যায় না। তবে জানা যায়, তিনি মালি সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন এবং ১২৩০-এর দশকে পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম জনগণের জন্য একটি শক্ত অবস্থান সৃষ্টি করেছিলেন। আর ইতিহাসে গত এক হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে ধনবান যে ব্যক্তি ছিলেন তিনি মালির মুসলিম রাজা ‘মানসা মুসা’। মাদিন্কা ভাষায় “মান্সা” অর্থ রাজা। মালির দশম “মান্সা” বা রাজা ছিল “প্রথম মুসা” যিনি ১৩১২ সাল থেকে ১৩৭৭ সাল পর্যন্ত মালি শাসন করেন।
তিনি পশ্চিম আফ্রিকায় প্রচুর মসজিদ নির্মাণ করেন, এসব মসজিদের অনেকগুলো ৭০০ বছর পরও টিকে আছে। দ্বীনি ইলিম শিক্ষার জন্য সাম্রাজ্য জুড়ে অসংখ্য মাদরাসা তার পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। টিম্বাকতুর সাংকোরে মাদরাসাকে তিনি পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। সেখানে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর পড়ালেখার সুব্যবস্থা ছিল। বিশ্বের নামকরা স্কলারদের নিয়ে মালিতে সে সময়কার সবচেয়ে সমৃদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেখানে ছিল আলেকজান্দ্রিয়ার পর বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লাইব্রেরি। ব্যক্তিগত ও সরকারী সংগ্রহে ইসলামী আইন, জ্যোর্তিবিজ্ঞান, ভাষা, ইতিহাস থেকে শুরু করে নানা বিষয়ের হাজার হাজার বই। দেশটির ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তখন আফ্রিকার সকল প্রান্ত থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করত।
উপনিবেশ মালির আজকের এই দুরবস্থার জন্য দায়ী। এক সময়কার উপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্স ১৯০৪ সালে মালি দখল করে নেয়। পরে ১৯৬০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফরাসি উপনিবেশের কবল থেকে স্বাধীনতা লাভ করে মালি। এরপরও ফ্রান্স মালির আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বজায় রাখে। বিশেষ করে ইউরেনিয়াম ও স্বর্ণসহ অন্যান্য খনিজ সম্পদের ভান্ডারের সবই যায় ফ্রান্সের গোলায়। ‘স্বাধীনতা’ লাভের পরও নানা চুক্তির আওতায় মোট জাতীয় সম্পদের ৮৫ ভাগ যায় প্যারিসে। আর ১৫ ভাগ থাকে মালির জনগণের জন্য। যদি কেউ বিদ্রোহ করে- তবে ফ্রান্সের সেনাবাহিনী চলে আসে ‘বিদ্রোহ দমন’ করতে। এই হলো রাজনীতি আর উপনিবেশবাদের ফলাফল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির দরুণ মালি সরকার ফ্রান্স সেনাবাহিনীর সাহায্য চায়, জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করে। বাংলাদেশ থেকেও ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে মালিতে প্রথম শান্তিরক্ষী পাঠানো হয়।
মালির রাজধানীর নাম বামাকো। ১২ লাখ ৪০ হাজার ১৯২ বর্গকিলোমিটার দেশের জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি। মালির সর্বাধিক জনবহুল জাতিগত গোষ্ঠী হচ্ছে বম্বারা, যারা জনসংখ্যার প্রায় ৩৪.১% অংশ।
মালিতে উর্বর জমির অভাব থাকলেও অন্যান্য অতি মূল্যবান সম্পদ সে অভাব পূরণ করে দিয়েছে। স্বর্ণ ও লবণের খনি শত শত বছর ধরে মালির অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু । মালির উত্তরাঞ্চল থেকে বাণিজ্যপথ বর্ধিত হয়ে উত্তর আফ্রিকার উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, সেখানকার ধনী ব্যবসায়ীগণ ইউরোপ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় পাঠানোর জন্য চড়া মূল্যে স্বর্ণ ও লবণ কিনতে আগ্রহী ছিল। এই বাণিজ্য পথগুলো মাদিনকা নামক পশ্চিম আফ্রিকার স্থানীয় গোত্রটিকে অবিশ্বাস্য রকম সম্পদশালী গোত্রে পরিণত করেছিল।
মালি মুসলিম ঐতিহ্যের দেশ হওয়ায় এর প্রতিটি শহরেই রয়েছে নান্দনিক মসজিদ। সব মসজিদেরই রয়েছে ঐতিহাসিক গৌরবময় ইতিহাস। যেমন মালির ডিজেনি শহরে ১২০০ থেকে ১৩০০ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে তৈরি হয়েছিল বড় মসজিদ নামে পরিচিত মাটির মসজিদ। এটি আফ্রিকার অন্যতম নিদর্শন এবং সুডানো সাহেলিয়ান স্থাপত্যকর্মের অন্যতম উদাহরণ। ‘দ্য গ্রেট মস্ক অফ ডেন্নি’, মসজিদটি ১০০ বছরের পুরনো এবং এটি ইট-কাদার তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদ।
বর্তমানে মালিতে প্রতি চার জনের তিন জন বাস করেন দারিদ্র্য সীমার নিচে। গড়ে প্রতি চার জনের তিন জন অশিক্ষিত। আয়তনে বাংলাদেশের আটগুণ হলেও মালিতে বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র একটি। কয়েকশ বছর আগে মুসলিম শাসনের সময় ছিল কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়।
দেশের ৯৪% জনসংখ্যা মুসলিম। আফ্রিকায় ইসলামের প্রচার- প্রসারে মালির গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সয়াবিন তেলের বাজার অস্থির করছে কারা?
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
এনজিও’র কিস্তি পরিশোধ না করায় ২ সন্তানসহ নারী গ্রেপ্তার
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ স্থগিত
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘বিডিআর বিদ্রোহ নয়, এটি পরিকল্পিত হত্যাকা-’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে আগুন
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতেমা মাঠে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা -মাঠ ছাড়ছেন মুসল্লিরা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
গৌরবান্বিত বিজয়ের মাস উপলক্ষে দেশের স্বাধীনতা ও বিজয় অক্ষুণ্য রাখতে চলমান জাতীয় সমস্যা সমাধানে ১৩ দফা দাবি
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাংলাদেশ থেকে কমেছে, বেড়েছে ভিয়েতনাম ও ভারত থেকে
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার মালিক সিমিনের ভয়াবহ জালিয়াতি
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দু-এক মাসের মধ্যে ছাত্র-জনতার নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সৌদিপ্রবাসীদের জন্য সতর্ক বার্তা দিল দূতাবাস
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ উদ্বোধনের ফটোসেশন, তারপর হাওয়া
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)