রাজধানীতে বেড়েছে চুরি-ডাকাতি:
আসামি গ্রেফতার হয়, উদ্ধার হয় না চুরি-ডাকাতির মালামাল
, ৪ঠা শাবান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৭ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১১ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) দেশের খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীতে বাড়ছে চুরির ঘটনা। বাদ যাচ্ছেন না সাবেক কিংবা বর্তমান পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিদের বাসা-বাড়িও। নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগিয়েও চোরের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না রাজধানীবাসী। রাস্তাঘাটে পথচারীদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনাও অহরহ। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা হলেও আসামি গ্রেফতার কিংবা খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধারে নগর অতি নগণ্য। এতে ভুক্তভোগীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকও গত বৃহস্পতিবার মাসিক অপরাধ-সংক্রান্ত সভায় বলেন, রাজধানীতে সিঁধেল চুরির ঘটনা ঘটলেও চোর শনাক্তে পুলিশের গুরুত্ব কম। ছিনতাই, ডাকাতি ও খুনের মামলার রহস্য উদ্ঘাটন হলেও চোর শনাক্তে পুলিশ গুরুত্ব দেয় না। ফলে চোরেরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে সিঁধেল চুরি (গ্রিল কাটা চোর বোঝানো হয়েছে) করছে। এ কারণে চুরি মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে সফলতা নেই।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মামলার উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে চুরির ঘটনায় মামলার সংখ্যা বেড়েছে ২৮ শতাংশ। ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে ১০৩টি। দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে ১৪৫টি, আগের বছর দস্যুতার ঘটনা ছিল ১৩৪টি।
পুলিশ বলছে, ছিনতাইকারীদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন তারা। ডিএমপির আটটি বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ও ৫০টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) চোর ধরতে এবং চুরির মামলার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। চুরির মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে কী অবস্থায় রয়েছে, সেসব বিষয়েও প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে তাদের।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় বড় চুরির ঘটনায় চোর একাই জড়িত বিষয়টি এমন নয়। যিনি সশরীরে চুরি করেন তাকেই গণমাধ্যমের সামনে আনা হয়, কিন্তু পেছনের চোরদের দেখার সুযোগ আমাদের হয় না। আমরা শুধু শুনি গ্রেফতার চোরদের পেছনে অনেক পৃষ্ঠপোষক আছে। চুরির ঘটনা কেন্দ্র করে যারা অন্যায় ও অনৈতিকভাবে পেশাদারত্বের বাইরে গিয়ে লাভবান হতে চান তাদেরও সুযোগটি বেড়ে যায়।
গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহিদুর রহমান রিপন বলেন, ঢাকা শহরে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ডিবি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে। আসামি গ্রেফতার থেকে মালামাল উদ্ধারে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত কাজ চলে। চোরচক্র চুরির পর মালামাল দ্রুততার সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। এতে অভিযানে আমাদের যেমন বেগ পেতে হয়, অন্যদিকে বেগ পেতে হয় ভুক্তভোগীকেও।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, মামলা হলে আসামিদের ধরার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়, গ্রেফতার করা হয়। চুরির পর চোরেরা ধরা পড়ার ভয়ে চোরাই মালামাল দ্রুত বিক্রি ও হাতবদল করে। এ কারণে চুরির পর সম্পূর্ণ মালামাল উদ্ধার করা যায় না। ঢাকায় চুরি ঠেকাতে আমাদের টহল পুলিশ বাড়ানো হয়েছে, সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে ঢাকা শহরের অধিকাংশ জায়গা। এছাড়া ডিবির প্রতিটি টিম চোর ধরার জন্য কাজ করছে।
গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম বলেন, সম্প্রতি কয়েকটি বড় চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, চোরচক্র মালামাল বিক্রি করে সেই টাকায় জমি কিনেছে। যাতে ধরা পড়লেও তাদের কাছ থেকে মালামাল না পাওয়া যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে চুরির মামলায় গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে আবারও চুরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে একশ্রেণির চোর।
এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় মামলার পর দ্রুত ডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা দ্রুততার সঙ্গে আসামি ধরে উদ্ধার অভিযান চালাই। এর মধ্যে দেখা যায় কিছু ঘটনায় আসামি গ্রেফতার হলেও মালামাল আসামিরা বিক্রি করে ফেলে।
চোরচক্রের সদস্যরা সহজে চোরাই মাল বিক্রি করতে পারছে বলে চুরি বাড়ছে জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, যেসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা চোরাই মাল কেনেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুরির মামলায় গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহেলা থাকে উল্লেখ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) হাফিজ আক্তার বলেন, ডিএমপির সিনিয়র কর্মকর্তারা বিভিন্ন মামলার সুপারভাইজর থাকেন। কিন্তু চুরির মামলাগুলো তারা সঠিকভাবে তদারকি করেন না। আর এই সুযোগে বেশ কয়েকটি বড় ঘটনা ঘটেছে। চোরদের একটি ডেটাবেস তৈরি করা হয়েছে। এরই মধ্যে এই ডেটাবেসে সংগ্রহ করা হয়েছে কয়েক হাজার চোরের তথ্য।
তিনি বলেন, আসামি গ্রেফতারের পাশাপাশি মালামাল উদ্ধারে পুলিশ আগের চেয়ে বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখে। তবে কিছু কিছু ঘটনায় মালামাল উদ্ধার হয় খুবই সামান্য। কারণ চুরির পর দ্রুততার সঙ্গে মালামাল এক হাত থেকে অন্য হাতে চলে যায়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর দূরত্ব কী বাড়ছে?
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দ্বিগুণ হচ্ছে শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শৈত্যপ্রবাহ: বিপাকে ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী মানুষ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সচিবালয় গেটে শিক্ষার্থী-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, লাঠিচার্জ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মোবাইল ও ইন্টারনেট খরচে ফের বাড়তে পারে কর
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের গোপন সম্পদের পাহাড়
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইলিয়াস আলীকে হত্যার পর মেজর জিয়াউল: ‘শেষ করে তাকে যমুনায় ফেলে দিয়ে এসেছি’
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পাঁচ মাসে গ্রেপ্তার ১৫ হাজার, বেশিরভাগ রাজনীতিক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ভারতের কাঁটাতারের বেড়ায় বাংলাদেশ, এখনও বিচার পায়নি ফেলানী
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাণিজ্যকেন্দ্রিক কূটনীতি গ্রহণ করতে হবে -আমীর খসরু
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শেখ হাসিনাসহ ৭৫ জনের পাসপোর্ট বাতিল
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)