আজ সুমহান বরকতময় ১৮ই পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ! খলীফায়ে ছালিছ, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক অর্থাৎ পবিত্র শাহাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
এ সুমহান দিবসটির তাৎপর্য অনুধাবন করা গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরয।
, ১৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৮ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ২৩ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান- মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শন সম্বলিত দিবস মুবারকগুলোকে স্মরণ করিয়ে দিন সমন্ত কায়িনাতকে। নিশ্চয়ই এর মধ্যে ধৈর্যশীল ও শোকরগোজার বান্দা-বান্দীদের জন্য ইবরত ও নছীহত রয়েছে।” (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
প্রসঙ্গত পবিত্র ১৮ যিলহজ্জ শরীফ মুনাফিকরা উনার পবিত্র হুযরা শরীফ উনার মধ্যে অনুপ্রবেশ করে উনাকে শহীদ করে। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ আজকের এই দিনটি হচ্ছে আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শাহাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করার সময় উনার আহলিয়া হযরত নায়লা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বাধা দিতে আসলে উনার হাতের কয়েকটি আঙ্গুল মুবারক কেটে যায়। এ সময় আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ১৩৭নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার এই অংশ পাঠ করছিলেন: “অতএব, তাদের বিরুদ্ধে আপনার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনিই যথেষ্ট, তিনি সব কিছু শুনেন এবং সব কিছু জানেন”। এই পবিত্র আয়াত শরীফ পাঠ করার সময় উনাকে শহীদ করা হয় এবং এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার উপর উনার রক্ত মুবারক ছিটিয়ে পড়েছিল। (দায়েরাতুল মা’য়ারিফ)
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার উপরোক্ত অংশের পূর্বে পবিত্র আয়াত শরীফটি শুরু ছিল এইরূপ: “আপনারা যাতে ঈমান আনয়ন করেছেন, তারা যদি সেরূপ ঈমান আনয়ন করে, তবে নিশ্চয়ই তারা হিদায়েত পাবে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারা নিশ্চয়ই বিরুদ্ধ-ভাবাপন্ন এবং তাদের বিরুদ্ধে আপনার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনিই যথেষ্ট, তিনি সব কিছু শুনেন এবং সব কিছু জানেন।” এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার সঙ্গেই ১৩৮নং পবিত্র আয়াত শরীফটি এইরূপ: “আমরা গ্রহণ করলাম মহান আল্লাহ পাক উনার রং, আর রংয়ের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক অপেক্ষা কে অধিকতর সুন্দর? এবং আমরা উনারই ইবাদতকারী।” আশ্চর্যের বিষয় এই যে, উনার রক্ত-রঞ্জিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পূর্বাংশ এবং পরের পবিত্র আয়াত শরীফ যেন উনার রক্তাক্ত পবিত্র শাহাদত মুবারকেরই এক অপূর্ব ইঙ্গিত। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র শাহাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময় উনার বয়স মুবারক হয়েছিল ৮২ বছরের অধিক। পবিত্র ‘জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ উনার পূর্বে “হাশশে কাওকাব” নামক স্থানে উনার পবিত্র রওযা শরীফ করা হয়। পরবর্তীতে এ স্থানটি পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। হযরত যুবাইর ইবনে মুত‘ঈম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার জানাযা নামায উনার ইমামতী করেন।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, বিভিন্ন কারণে তিনি ‘যুন নূরাইন’ তথা দুই নূরের অধিকারী। প্রথমত, তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুইজন বানাত আলাইহিমাস সালাম উনাদের মুবারক খিদমতে পর্যায়ক্রমে গিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের উভয়টিই সংকলন ও বিস্তার করেছেন। তৃতীয়ত, কামালতে রিসালাত এবং কামালতে বিলায়েত উভয়ই উনার মাঝে একত্রিত হয়েছে। চতুর্থত, তিনি দুইবার হিজরত মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি আমার চল্লিশ জন সম্মানিতা বানাত থাকতেন, তাহলে আমি পর্যায়ক্রমে খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট নিকাহ মুবারক দিতাম। সুবহানাল্লাহ! যা সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেন। (তিবরানী শরীফ)
প্রসঙ্গত মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ উনার ১০৯নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন, “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, আমার রব উনার শান-মান লিখার জন্য যদি সমুদ্রের পানিকে কালি বানানো হয় তবুও মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক বর্ণনা শেষ হবে না বরং শেষ হওয়ার পূর্বে সমুদ্রের পানি নিঃশেষ হয়ে যাবে। আরো অনুরূপ যোগ করা হলেও।”
বলাবাহুল্য, এটা যেমন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারকে তেমনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকেও এবং আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শান মুবারকেও যথাযোগ্যভাবে প্রযোজ্য। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শাহাদত মুবারক দুটি বিষয় প্রবলভাবে প্রতিভাত করে। এক. যুগে যুগে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর মুনাফিক গোষ্ঠী তথা উলামায়ে সূ’রা। দুই. ক্ষমতার লোভ মানুষকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম থেকে সরিয়ে নেয়। পবিত্র ঈমান উনাকে দূরীভূত করে শুধু কাফির নয়, কাট্টা মুরতাদ ও যালিমে পরিণত করে।
ক্ষমতার লোভই মুসলমান নামধারী মুনাফিকদেরকে আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করতে, সাইয়্যিদুশ শুহাদা সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করার মতো জঘন্যতম কলঙ্কময় ঘটনায় প্ররোচিত করেছে। এজন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ক্ষমতা চায় তার প্রতি লা’নত।” “আমরা ওই ব্যক্তিকে ক্ষমতা দেই না, যে এর জন্য প্রার্থী হয়।” অথচ আমাদের দেশে সেই লা’নতী কাজই নির্বাচনের নামে চলছে। আগামীতে কে কীভাবে ক্ষমতাপ্রার্থী হবে সে প্রক্রিয়া নিয়ে পুরো দেশটাকে যেন দোযখ বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। অথচ মুসলমানরা যুগ যুগ ধরে ধুঁকে ধুঁকে মরলেও কেনো মুখ খুলে কিছু বলতে পারে না। এই নির্বাচন জনগণের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনেনি। আনতেও পারবে না। এই নির্বাচন সবসময় জনগণকে প্রতারিত করেছে, করছে। ভবিষ্যতেও প্রতারিত করবে।
কাজেই ‘সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে হারাম এ নির্বাচন’ আর নয়- এটাই হোক আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফায়ে আছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহিমান্বিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের এই ফযীলতযুক্ত সুমহান দিনে আমাদের চেতনা।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)