১০০ টি চমৎকার ঘটনা
অভূতপূর্ব পরহেযগারী
ঘটনা-৬৪
, ১৩ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১২ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি যিনি হাম্বলী মাযহাবের ইমাম। তিনি একবার কিছু আটা এনে উনার খাদিমের কাছে দিলেন রুটি বানানোর জন্য এবং তাড়াতাড়ি করে রুটি বানিয়ে দিতে বললেন। কারণ ক্ষুধা লেগেছে। খাদিম মনে মনে চিন্তা করলেন, উনার যেহেতু ক্ষুধা লেগেছে তাই তাড়াতাড়ি রুটি তৈরি করে উনার সামনে পেশ করি। তারপর তিনি তাড়াতাড়ি রুটি তৈরি করে সামনে পেশ করার পরে হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, এত তাড়াতাড়ি কি করে রুটি তৈরি করলে? লবনই বা কোথায় পেলে? আর আগুনই বা কোথায় পেলে? উনাকে বলা হলো, হুযূর! মূলতঃ তাড়াতাড়ি করা হয়েছে। এই আটা যদিও আপনার কিন্তু লবন আনা হয়েছে আপনার যে ছেলে কাজী সাহেব, উনার বাড়ি থেকে। এখানে লবন ছিল না। হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “না, এই রুটি আমার জন্য খাওয়া জায়েয নয়। কারণ আমার ছেলে কাজী সাহেব। সে বাদশাহর চাকুরী করে এবং কাজীগীরি করে। হয়ত অনেক ফতওয়া সে এদিক সেদিক করতে পারে। আমার সন্দেহ আছে আমি এ রুটি খাবো না। এটা আমাকে দিবে না।” তিনি রুটিগুলো খেলেন না। সে রুটিগুলো রেখে দেয়া হলো।
পরবর্তীতে হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি ব্যাপার রুটিগুলো কোথায়, কি করলে? উনাকে জবাব দেয়া হলো, রুটিগুলো রেখে দেয়া হয়েছে পাকের ঘরের তাকের মধ্যে। তিনি বললেন, রুটিগুলো নষ্ট না করে মানুষকে দিয়ে দাও। তবে দেয়ার সময় বলে দিবে, রুটির আটাগুলো হলো ইমাম সাহেবের, আর লবন হলো কাজী সাহেবের। যখন ফকীর-মিসকীনকে বলা হলো, এই রুটির আটাগুলো হলো ইমাম সাহেবের, আর লবন হলো কাজী সাহেবের। ইমাম সাহেব এটা গ্রহণ করেননি। ফকীর-মিসকীনও এগুলো গ্রহণ করলো না। শেষ পর্যন্ত রুটিগুলো নষ্ট হয়ে গেলো। হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “এক কাজ করো, এগুলো ফেলে দাও।” উনার খাদিম সেটা নিয়ে গেলেন, তিনি চিন্তা করতে লাগলেন কোথায় ফেলা যায়। শেষমেশ নিয়ে ফেললেন নদীর মধ্যে। নদীর মধ্যে ফেলে দেয়ার পর খাদিম ফিরে আসলেন। আসার পর হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় ফেললে তুমি? খাদিম বললেন, হুযূর! নদীতে ফেলেছি। তিনি বললেন, সর্বনাশ করেছো! আজকে থেকে আমার মাছ খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে সকল গোশত হারাম মাল থেকে গঠিত তা বেহেশতে প্রবেশ করবে না। তার জন্য দোযখই শ্রেষ্ঠ স্থান।” নাঊযুবিল্লাহ! কেননা হারাম খাদ্য ভক্ষণকারীদের রক্ত, গোশত সবই হারামভাবে বেড়ে ওঠে আর হারাম গ্রহণের কারণে এরূপ শরীরের ইবাদত-বন্দেগীও কবুল হয় না। তাই যুগ যুগ ধরে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী আউলিয়াগণ ও ইমাম-মুজতাহিদগণ সকলেই হালাল আয়-রোজগার ও খাবার গ্রহণের বিষয়ে সাধ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ তাক্বওয়া অবলম্বন করেছেন। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ উক্ত ঘটনাটি।
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার একখানা বিশেষ স্বপ্ন মুবারক
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা অন্য কারো মতো নন; উনারা বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক উনার অধিকারিণী
২৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কিভাবে প্রথম মাসে আপনার শিশুর বিকাশে সাহায্য করবেন?
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘ই’জায শরীফে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)